দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক : সভাটিকে বলা হয়েছিল জরুরী। কিন্তু আদৌ তেমন কিছু হয়নি। বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের জনগুরুত্বপূ্র্ণ জরুরী সভা ছিল বুধবার। দুপুর থেকে বিকেল পর্যন্ত সভাও অনুষ্ঠিত হয়েছে। সেখানে মুশফিকুর রহিমকে ২০১৫ সালের ওয়ানডে বিশ্বকাপ পর্যন্ত অধিনায়ক করা ছাড়া আর কোনো সিদ্ধান্তই হয় না! সঙ্গে বিভিন্ন স্ট্যান্ডিং কমিটি চূড়ান্ত করা হয়েছে। পরিচালকদের ভাগাভাগি করে দেয়া হয়েছে বিভিন্ন স্ট্যান্ডিং কমিটির চেয়ারম্যান পদ।

সব সিদ্ধান্ত ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে। ধীর নীতিতে মন মজেছে বিসিবির। সবকিছুতেই পরে সিদ্ধান্ত হবে এমনটাই জানিয়েছেন বিসিবির সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন। প্রধান নির্বাচক নিয়োগ নিয়ে বলেছেন, ‘প্রধান নির্বাচক হিসেবে কয়েকটা নাম এসেছে। দুয়েকটা নাম এসেছে জোরেশোরে। শুক্র-শনিবারের মধ্যে ঘোষণা করে দেব। সবচেয়ে বেশি জায়গা থেকে এসেছে ফারুকের নাম; নান্নুর নামও এসেছে। পাইলটের নামও এসেছে আলোচনায়। হাবিবুল বাশার সুমনের কথাও এসেছে।’

বিসিবির নির্বাচনে ২৬ পরিচালক নির্বাচিত হয়ে এসেছেন। কিন্তু আসার কথা ২৭ জন। একজনের বিষয়টি কী হবে; বিসিবি সভাপতি জানিয়েছেন, ‘পরিচালকের শূন্যপদ এটা এজেন্ডায় ছিল না, মাথায় ছিল। এনএসসিকে চিঠি দেয়া হবে। এনএসসিকে আমরা কোনো নাম প্রস্তাব করবো না। তারাই ঠিক করবে কাকে পাঠাবেন। পরিচিত কেউই আসবেন।’

দীর্ঘমেয়াদে টিভি স্বত্বের বিষয়টি নিয়ে নাজমুল হাসানের বক্তব্য, ‘শ্রীলঙ্কা সফরের পর থেকে দীর্ঘমেয়াদে টিভি স্বত্বের জন্য দরপত্র আহ্বান করা হবে। শ্রীলঙ্কা সফরের জন্য এবারও আলাদা দরপত্র হবে। ২০২০ সাল পর্যন্ত হবে। আমরা একটু সময় নিয়ে চুক্তি করতে চাই। দীর্ঘমেয়াদে চুক্তির ক্ষেত্রে প্রতিটি লাইন আমাদের পরে দেখতে হবে। নিম্বাসের সঙ্গে চুক্তির কারণে কিন্তু আমরা এখনো ২ কোটি ৫০ লাখ ডলার পাচ্ছি না। দরপত্র আহ্বান করতে ২ মাসের বেশি সময় লেগে যেতে পারে।’

জাতীয় দলের অনুশীলন নিয়ে তিনি বলেন, ‘খেলা চলছে; বিশ্রাম দরকার। ৭ দিনের বিশ্রামের পর ওদের ফিটনেস কি অবস্থায় আছে তা দেখা হবে। আমাদের মূল লক্ষ্য বিশ্বকাপ। তার আগে ক্রিকেটারদের টোয়েন্টি২০ খেলার সুযোগ দিতে হবে। সকিব আল হাসান, তামিম ইকবালের মতো গুরুত্বপূর্ণ ক্রিকেটাররা খেলার সুযোগ পায়নি। ওরা যেন খেলার সুযোগ পায় তা দেখতে হবে। পেসাররা ইনজুরিতে পড়ে যাচ্ছে।’

একটি টোয়েন্টি২০ টুর্নামেন্ট আয়োজন করা হচ্ছে। সেই বিষয়ে নাজমুল হাসান বলেন, ‘৪টি জোনে ১৫ জন করে খেলোয়াড় নিয়ে একটি টোয়েন্টি২০ টুর্নামেন্ট হতে পারে। সেই টুর্নামেন্ট শেষ হওয়ার পর জাতীয় লিগ শুরু হবে। শ্রীলঙ্কার বাংলাদেশ সফরের শুরুতে আমাদের টেস্ট খেলতে হবে। সুতরাং বড় পরিসরের ম্যাচ খেলার সুযোগ ওদের দিতেই হবে। টোয়েন্টি২০ অনুশীলনের দিকে আমরা গুরুত্ব দিচ্ছি।’

টোয়েন্টি২০ বিশ্বকাপের টিকেট বিক্রি নিয়ে পাপন জানিয়েছেন, ‘টিকেট এবার আমরা বিক্রি করছি না। সরাসরি আইসিসি বিক্রি করছে। গতবার আমরা বিক্রি করেছিলাম এবার আইসিসির সঙ্গে আমাদের চুক্তি হয়েছে। ওরা টিকেট বিক্রি হোক; না হোক আমাদের ২০ লাখ ডলার দেবে। প্রতিবার আমরা ফ্রি টিকেট দেই। এবার ফ্রি টিকেট দেয়ার কোনো সুযোগ নেই। সবার কিনে নিতে হবে। যে টিকেট দেবে তা ২০ লাখ ডলার থেকে কেটে নেবে। বিসিবি কোনো কর্মকর্তাকেও টিকেট কিনে নিতে হবে।’

এদিকে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) নির্বাচনের পর এতদিন অস্থায়ী কমিটি দিয়েই চলছিল বোর্ড। এবার স্থায়ী হয়েছে। বিভিন্ন স্ট্যান্ডিং কমিটি চূড়ান্ত করা হয়েছে। ওয়ার্কিং কমিটির চেয়ারম্যান গঠন করা ছাড়া সব কমিটির চেয়ারম্যান পদে দায়িত্ব বন্টন করে দেওয়া হয়েছে।

ক্রিকেট অপারেশন্স কমিটিতে আকরাম খানকে চেয়ারম্যান করে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। ফিন্যান্স কমিটিতে আফজালুর রহমান সিনহা, ডিসিপ্লিনারি কমিটিতে আহমেদ ইকবাল হাসান, গেম ডেভলপমেন্ট কমিটিতে খালেদ মাহমুদ সুজন, টুর্নামেন্ট কমিটিতে গাজী গোলাম মর্তুজা পাপ্পা, বয়সভিত্তিক টুর্নামেন্ট কমিটিতে নাঈমুর রহমান দুর্জয়, গ্রাউন্ডস কমিটিতে লোকমান হোসেন ভুইয়া, ফ্যাসিলিটিজ কমিটিতে তানজিল চৌধুরী, আম্পায়ার্স কমিটিতে নাজমুল করিম টিংকু, মার্কেটিং অ্যান্ড কমার্শিয়াল কমিটিতে কাজী ইনাম আহমেদ, মেডিকেল কমিটিতে হানিফ ভুইয়া, টেন্ডার এন্ড পারচেজ কমিটিতে এডভোকেট আনোয়ারুল ইসলাম, মিডিয়া অ্যান্ড কমিউনিকেশন্স কমিটিতে জালাল ইউনুস, অডিট কমিটিতে শফিউল আলম চৌধুরী, উইমেন্স উইংয়ে এম এ আওয়াল চৌধুরী, লজিস্টিক এন্ড প্রোটোকল কমিটিতে ইসমাইল হায়দার মল্লিক, সিকিউরিটি কমিটিতে মঞ্জুর কাদের ও সিসিডিএমে আজম নাসিরউদ্দিনকে চেয়ারম্যান করা হয়েছে।

(দ্য রিপোর্ট/এএস/সিজি/নভেম্বর ২৮, ২০১৩)