চট্টগ্রামে ঝুঁকিপূর্ণ বসতি উচ্ছেদে প্রশাসনের নির্দেশ
চট্টগ্রাম অফিস : রোজার আগেই চট্টগ্রাম নগরীর বিভিন্ন পাহাড়ে ঝুঁকিপূর্ণ বসবাসকারীদের সরিয়ে নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছিল জেলা প্রশাসন। কিন্তু কয়েকদিনের টানা ভারি বর্ষণ ও পাহাড়ের মাটি নরম হয়ে যাওয়ায় ঝুঁকিপূর্ণ বসতি সরিয়ে নেওয়ার জন্য জোর তৎপরতা শুরু করেছে জেলা প্রশাসন।
চট্টগ্রাম নগরীর বিভিন্ন পাহাড়ে শনিবার সকাল থেকেই এ উচ্ছেদ জোরদার করা হয়েছে।
চট্টগ্রামে জেলা প্রশাসন, পাহাড় ব্যবস্থাপনা কমিটি, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সকাল ৮টা থেকে নগরীর লালখানবাজার মতিঝর্ণা ও বাটালী পাহাড়ের ‘অত্যধিক ঝুঁকিপূর্ণ’ বসবাসকারীদের উচ্ছেদ কার্যক্রম শুরু করেছে।
এর আগে শুক্রবার দিনভর মাইকিং করে পাহাড়ের চিহ্নিত বাসিন্দাদের সরে যাওয়ার জন্য বলা হয়। কিন্তু এরপরও বাসিন্দারা না সরায় উচ্ছেদ করে ওই বসতিগুলো গুঁড়িয়ে দেওয়ার পদক্ষেপ নিয়েছে প্রশাসন।
পাহাড় ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্য সচিব ও অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) এসএম আবদুল কাদের জানান, শুক্রবার মাইকিং করার পর কিছু পরিবার সরে গেলেও অনেকে ঝুঁকি নিয়েই পাহাড়ে বসবাস করছিল। সরে যাওয়া লোকজনও আবার পাহাড়ের বসতিতে ফিরে আসছিল। ক্ষয়ক্ষতি এড়াতে বাধ্য হয়ে জেলা প্রশাসন এ সকল বাসিন্দাদের উচ্ছেদ করার পদক্ষেপ নিয়েছে।
নগরীর মতিঝর্ণা ও বাটালী পাহাড়ের চিহ্নিত অত্যধিক ঝুঁকিপূর্ণ বাসিন্দাদের স্থায়ীভাবে উচ্ছেদ কাজ শনিবার শুরু হয়েছে। এদিন এ দুই পাহাড়ের প্রায় দেড়শ’ পরিবারকে উচ্ছেদ করা হয়েছে বলে জানান তিনি।
তিনি বলেন, ‘এ সকল বাসিন্দারা যেন পাহাড়ের বসতিতে আবার ফিরে না আসতে পারে, সেজন্য ওই সকল বাসস্থান গুঁড়িয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে জেলা প্রশাসন।’
তিনি আরও বলেন, ‘চট্টগ্রামে ৩০টি পাহাড়ে এক লাখ পরিবারের বসতি রয়েছে। এর মধ্যে নগরীর ১০টি পাহাড়ের বসবাসকারীদের মধ্যে অত্যধিক ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে ৬৬৬টি পরিবারকে চিহ্নিত করা হয়েছে। এর মধ্যে মতিঝর্ণা ও বাটালী পাহাড়ে ঝুঁকিপূর্ণ পরিবার রয়েছে ৩২০টি। তাদের পর্যায়ক্রমে উচ্ছেদ করা হবে। জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে আগামী ২৫ জুনের মধ্যে বসবাসকারী পরিবারগুলোকে সরে যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এরপরও তারা না সরলে প্রশাসন সেগুলো উচ্ছেদ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।’
নগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (উত্তর) মো. শহিদুল্লাহ বলেন, ‘প্রবল বর্ষণের কারণে যেকোনো সময় পাহাড় ধসে হতাহতের আশঙ্কা রয়েছে। তাই পাহাড়ে বসবাসকারীদের দ্রুত সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে। চিহ্নিত সবাইকে সরিয়ে না দেওয়া পর্যন্ত এ উচ্ছেদ অভিযান চলবে। এ জন্য প্রচারণামূলক মাইকিং অব্যাহত রয়েছে।’
(দ্য রিপোর্ট/এমএইচ-কেএইচ/এমএইচও/এমসি/এনআই/জুন ২১, ২০১৪)