রাজু হামিদ, দ্য রিপোর্ট : সমালোচনা নিয়ে গঠিত ‘সর্বদলীয় সরকার’ তার গ্রহণযোগ্যতা হারাচ্ছে। তফসিল ঘোষণার পরও গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করছে এই সরকার, যা তাদের নেওয়ার কথা ছিল না।

দৈনন্দিন কাজ সম্পাদনের কথা বলে গঠিত এ সরকার ইতোমধ্যে টিকফা চুক্তি, ১৩টি নতুন বেসরকারি টেলিভিশনের অনুমোদন এবং তফসিল ঘোষণার এক ঘণ্টা পার না হতেই বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আ স ম হান্নান শাহকে বিনা ওয়ারেন্টে গ্রেফতার করে নতুন বিতর্কের জন্ম দিয়েছে।

এর আগে প্রধান বিরোধী দলের অনুপস্থিতিতে জাতীয় পার্টি ও ১৪ দলীয় জোটের শরিকদের নিয়ে সর্বদলীয় সরকার গঠন করা হলে তা ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়ে। সংবিধানে সর্বদলীয় সরকারের বিষয়টি না থাকায় এই মন্ত্রিসভার সদস্যদের ক্ষমতার বিষয়টিও অস্পষ্ট।

এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০ নভেম্বর সংসদ অধিবেশনের সমাপনী ভাষণে বলেন, নির্বাচন পরিচালনায় নবগঠিত সর্বদলীয় সরকারের মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীরা নীতি-নির্ধারণী কোনও সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবেন না। তারা কেবল রুটিন কাজ করবেন।

প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের এক সপ্তাহ না পেরুতেই সরকার যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাংলাদেশের আলোচিত বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সহযোগিতা ফোরাম চুক্তিতে (টিকফা) স্বাক্ষর করে। ২৫ নভেম্বর বাংলাদেশ সময় রাত সোয়া ৯টার দিকে ওয়াশিংটনে অনুষ্ঠিত এই চুক্তির শুরু থেকেই বিরোধিতা করে আসছে বাম সংগঠনগুলো।

তাদের দাবি, এই চুক্তি যুক্তরাষ্ট্রের কোম্পানিগুলোর মাত্রাতিরিক্ত মুনাফা করার সুযোগ করে দেবে।

একই দিন মন্ত্রিসভায় চূড়ান্ত অনুমোদন দেওয়া হয়েছে ‘ডি-অক্সিরাইবোনিউক্লিক এসিড (ডিএনএ) আইন, ২০১৩’ এর খসড়া। এর একদিন আগে রাজনৈতিক বিবেচনায় সরকার নতুন ১৩টি বেসরকারি স্যাটেলাইট টেলিভিশন চ্যানেলের অনুমোদন দিয়েছে।

ওইদিন সন্ধ্যায় দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার এক ঘণ্টার মধ্যে বিনা ওয়ারেন্টে আটক করা হয় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আ স ম হান্নান শাহকে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর দায়িত্বে থাকা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নাকি প্রধান নির্বাচন কমিশনারের নির্দেশে তাকে আটক করা হয়েছে- সেটা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষক ডেইলি নিউ এইজের সম্পাদক নুরুল কবীর।

সংবিধানের ১২৬ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী তফসিল ঘোষণার পর সকল নির্বাহী বিভাগ নির্বাচন কমিশনকে দায়িত্ব পালনে সহায়তা করবে।

সমালোচকদের মতে, বর্তমান বাস্তবতায় নির্বাহী বিভাগ নির্বাচন কমিশনের নির্দেশে না চলে সরকারের নির্দেশে চলছে।

সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার বলেন, সরকারের বলার সঙ্গে কাজের মিল নেই। তাদের সিদ্ধান্তগুলোও প্রশ্নবিদ্ধ।

(দ্য রিপোর্ট/আরএইচ/জেএম/নভেম্বর ২৯, ২০১৩)