আজ সেই ভয়াল ২৯ নভেম্বর
বাগেরহাট সংবাদদাতা : আজ সেই ভয়াল ২৯ নভেম্বর। ১৯৮৮ সালের এই দিনে প্রলঙ্করী ঘূর্ণিঝড় ও জলোচ্ছ্বাসে বিধ্বস্ত হয় উপকূলীয় অঞ্চলের বিস্তৃত জনপদ।
ভয়াল তাণ্ডবের কথা স্মরণ করে এখনও আঁতকে ওঠেন বাগেরহাটসহ উপকূলীয় এলাকার মানুষ। ভয়াবহ সেই তাণ্ডবে লণ্ডভণ্ড হয়ে যায় বাগেরহাটসহ উপকূলীয় জনপদ। নিশ্চিহ্ন হয়ে যায় মানুষের ঘরবাড়িসহ সহায়-সম্পদ। বঙ্গোপসাগরে ডুবে যায় সহস্রাধিক মাছধরা ট্রলার। নিখোঁজ হন সহস্রাধিক জেলে।
বাগেরহাটের শরণখোলা, মোড়েলগঞ্জ, রামপাল ও মংলায় প্রাণ হারান কয়েক হাজার মানুষ। আজ পূর্ণ হচ্ছে ভয়াল প্রলঙ্করী ঘূর্ণিঝড় ও জলচ্ছ্বাসের ২৫ বছর।
জেলায় ৫ লক্ষাধিক মানুষ ক্ষতির শিকার হয়। ঝড়-জলোচ্ছ্বাসের তাণ্ডবে জেলার বিভিন্ন উপজেলায় ১০ হাজার ঘরবাড়ি সম্পূর্ণ বিধ্বস্তসহ ২০ হাজার ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এ ছাড়া হাঁস-মুরগি ও গবাদিপশুর ক্ষতি হয় ১ কোটি টাকার, ২০ হাজার চিংড়ি ঘেরসহ মৎস্য খামার, ১ কোটি টাকার বিভিন্ন ফসল, ১০০ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, ৫ শতাধিক মসজিদ-মন্দির, ৫০ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ, ৫ সহস্রাধিক নৌকা, ট্রলার ও জাল এবং ৫ সহস্রাধিক কিলোমিটার সামাজিক বনায়নসহ ব্যাপক ক্ষতি হয়। এ প্রলয়ঙ্করী ঘূর্ণিঝড়ে সুন্দরবনের প্রায় ১৫ ভাগ লণ্ডভণ্ড হয়।
শুক্রবার পূর্ণ হচ্ছে ভয়াল ঘূর্ণিঝড় ও জলোচ্ছ্বাসের ২৫ বছর। সর্বত্র মৃতদেহের বীভৎস দৃশ্য আজও মানুষের হৃদয়কে নাড়া দেয়। সুন্দরবন সংলগ্ন সাগরদ্বীপ দুবলা, আলোরকোল, চর মেহেরআলী, জেলের ট্যাক ও মাঝের চরে অবস্থানরত প্রায় ১০ হাজার জেলের কেউ বাঁচতে পারেননি। সেদিন মানুষ আর পশুর মৃতদেহে একাকার হয়ে ছড়িয়ে পড়েছিল সাগর আর নদীর জলরাশিতে। ইতিহাসের নির্মম এ ঘটনার পর সমুদ্রে মৎস্য আহরণে নিয়োজিত জেলেদের নিরাপত্তার জন্য সরকারিভাবে সমুদ্রবক্ষের চরগুলোতে ৫টি ঘূর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্র নির্মাণ করা হয়েছে। জেলেদের আগাম সতর্ক করার জন্য মৌসুমি পূর্বাভাস কেন্দ্র স্থাপন করা হয়েছে। প্রতিবছর অক্টোবর থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত দুবলার চরে ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুতি কর্মসূচির আওতায় একটি বেতার যন্ত্রসহ একজন কর্মকর্তা দুবলায় অবস্থান করে জেলেদের মধ্যে প্রশিক্ষিত স্বেচ্ছাসেবকদের নিয়ে কর্মসূচি পরিচালনা করে আসছে।
(দ্য রিপোর্ট/এমকে/এফএস/এএস/এমডি/নভেম্বর ২৯, ২০১৩)