‘আমি মারা গেলে দুই সন্তানকে জেলে যেতে হবে’
দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক : ‘আমি এখন মারা গেলে ঋণের দায়ে আমার দুই সন্তান হাসনাত ও ফাহিমকে জেলে যেতে হবে। কী অপরাধে আমার এই কারখানা পুড়িয়ে দেওয়া হল। বর্তমানে আমি সম্পূর্ণরূপে নিঃস্ব হয়ে গেছি।’
শনিবার বিকেলে রাজধানীর বিজিএমইএ ভবনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে কান্না জড়িত কন্ঠে এভাবেই কথাগুলো বলছিলেন পুড়ে যাওয়া স্ট্যান্ডার্ড গ্রুপের মালিক ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন।
এ সময় পাশে বসে থাকা দুই সন্তানকে অসহায় দৃষ্টিতে তাদের বৃদ্ধ বাবার দিকে তাকিয়ে থাকতে দেখা যায়।
মোশাররফ হোসেন বলেন, বুয়েট থেকে ইঞ্জিনিয়ারিং পাশ করে কোন চাকরি না নিয়ে দেশ সেবার জন্য শিল্পের সঙ্গে সম্পৃক্ত হই। একইসঙ্গে দেশের মানুষের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা ও বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের ব্যবস্থা করি। কিন্তু অগ্নিকাণ্ডে আমার দুই ভবনে প্রায় সাড়ে আট লাখ বর্গফুট স্থাপনা এবং মূলধনি যন্ত্রপাতি, প্রস্তুতকৃত পোশাক, ফেব্রিক্স, কাঁচামালসহ ২২টি কাভার্ডভ্যান সম্পূর্ণ পুড়ে যায়। যার আনুমানিক মূল্য প্রায় সাড়ে ১২ শ’ কোটি টাকা।
তিনি আরো বলেন, কি অপরাধে আমার এই কারখানা পুড়িয়ে দেওয়া হল। বর্তমানে আমি সম্পূর্ণরূপে নিঃস্ব হয়ে গেছি। এই অগ্নিকাণ্ডের কারণে ব্যাংকের ফোর্স লোন এবং ব্যাংক ঋণ এল/সি, ব্যাক টু ব্যাক এল/সি এর দায় দেনা পরিশোধ করা আমার পক্ষে কোন ভাবেই সম্ভব নয়। আমি এখন মারা গেলে আমার দুই সন্তানকে ঋণের দায়ে জেলে যেতে হবে। ওদের জেল খাটতে হবে।
মোশাররফ হোসেন বিচার বিভাগীয় তদন্তের মাধ্যমে প্রকৃত সত্য উদঘাটন করে দোষীদের চিহ্নিত করে দৃষ্টান্তমূলক শস্তি এবং পাশাপাশি সকল পোশাকশিল্প প্রতিষ্ঠানের নিয়োজিত জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দাবি জানান।
তিনি জানান, ২০০২ সাল থেকে এই কারখানা চালু হয়, সেই থেকে আজ পর্যন্ত কোন শ্রমিকের পাওনা বকেয়া ছিল না। শ্রম আইন, সরকারের নিয়মনীতি পালন করে স্ট্যান্ডার্ড গ্রুপ প্রতি বছর ৩০০ মিলিয়ন ডলার মূল্যের পোশাক রফতানি করে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান আসছে।
মোশাররফ হোসেন জানান, ২৮ নভেম্বর একটি সংঘবদ্ধ চক্র উদ্দ্যেশ্যপ্রণোদিত হয়ে পরিকল্পিতভাবে অগ্নিসংযোগ করে সাতটি প্রতিষ্ঠান সম্পূর্ণভাবে পুড়িয়ে দিয়েছে।
এ সময় তিনি আঝোরে কাঁদতে থাকায় আর কথা বলতে পারেননি। পরবর্তীতে তার একটি লিখিত বক্তব্য সাংবাদিকদের পড়ে শোনান তৈরি পোশাক মালিকদের সংগঠন বিজিএমই’র সভাপতি আতিকুল ইসলাম।
(দ্য রিপোর্ট/এসআর/নভেম্বর ৩০, ২০১৩)