কারো পূর্বপুরুষ দ্বিতীয় মহাযুদ্ধোত্তর সুইজারল্যান্ডে থাকলে ‘মিরাকল অব বার্ন’ হয়ত দেখে থাকবেন। আমরা শুনেই ‘থ’। প্রথম রাউন্ডে যাদের কাছে ৮-৩ গোলে হারলো জার্মানি, ফাইনালে ১০ মিনিটের মধ্যে পিছিয়ে গেল ০-২ গোলে, শেষ পর্যন্ত তাদেরই ৩-২ গোলে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন ফ্রিৎজ ওয়াল্টারের দল। এর চেয়ে বিস্ময়কর ও অদ্ভুতুরে ঘটনা ফুটবল ইতিহাসে নেই। আরও কিছু তথ্য যোগ করলে হয়ত বিস্ময়ের মাত্রা অনুধাবন করা যাবে। ফাইনালে উঠার পথে পুসকাসকে ছাড়াই ব্রাজিল ও ডিফেডিং চ্যাম্পিয়ন উরুগুয়েকে হারিয়েছিল হাঙ্গেরি। ১৯৪৯ থেকে ’৫৪-৫ বছরে একটি ম্যাচও না হারা ‘মাইটি ম্যাগিয়ার্সরা’ বিশ্বকাপের আগের বছর ওয়েম্বলিতে ৬-৩ গোলে বিধ্বস্ত করেছিল ইংল্যান্ডকে। কিছুদিন পর বুদাপেস্ট গিয়ে ১ গোলের পিঠে ৭টি গোল হজম করে ফুট বলের জনকরা। ’৫৪-এর ফাইনালের দিন বাংলার শ্রাবণ ভর করেছিল বার্নে। মুষলধারে বৃষ্টি, কাঁদায় প্যাচপ্যাচে মাঠ। এটাই নাকি জার্মান অধিনায়কের ফুটবল খেলার আদর্শ পরিবেশ। সে দিনের বার্নের  আবহাওয়া “ফ্রিৎজ ওয়াল্টার ওয়েদার” নামে পরিচিত। এর ঠিক ২০ বছর পর আরেক জার্মান ওলন্দাজদের হৃদয় চুরমার করে লিখেছিল আরেকটি আপসেটের গল্প। খেলার প্রথম মিনিটে ১-০ গোলে এগিয়ে যাওয়া হল্যান্ড কিভাবে ২-১ গোলে মিউনিখ ফাইনালটি হারলো এটা এখনও ‘গবেষণার’ বিষয় হয়ে আছে। সেবার “টোটাল ফুটবল” নিয়ে ঝড়ো হাওয়ার মতো বিশ্বকাপে এসেছিল ইয়োহান ক্রুয়েফের দল। ফাইনালের পথে দুমড়ে-মুচড়ে দিয়েছিল আর্জেন্টিনা (৪-০) ও ব্রাজিলকে (২-০)। ফাইনালটি নিয়ে পরে জনি রেপ (ডাচ প্লেয়ার)

বলেছিলেন, ‘দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে জার্মানদের ভূমিকার কথা মনে ছিল আমাদের। শুরু থেকেই ওদের অপমান করতে চাইছিলাম। পরিকল্পনা করে যে এটা হয়েছিল ঠিক তা নয়, তবে খেলতে নেমে সত্যিই ওদের উড়িয়ে দিতে চেয়েছিলাম। বল নিয়ে যা তা করছিলাম, শুধু গোল দিতে ভুলে গিয়েছিলাম।’ হয়ত উড়েই যেত জার্মানি, যদি না ‘কাইজার’ থাকতেন। ছোট শর্টসের ওপর গা চাপানো ফুল স্লিভ সাদা জার্সি, বুকে ডেচাসল্যান্ডের লোগো, চওড়া কপালের পেছনে উড়ন্ত কোঁকড়া চুল, চোখে রাজ্য জয়ের স্বপ্ন, চিবুকে ‘চিনের দেয়ালী’য় প্রত্যয়- ফ্রাঞ্জ বেকেনবাওয়ার। ’৭৪-এ জার্মানিকে দ্বিতীয় বিশ্বকাপ জিতিয়েছেন- সেটা ছিল কেবল শুরু। এরপর ইউরোপিয়ান ফুটবলের ইতিহাসটাই বদলে দিয়েছেন এই মিডফিল্ডার। মাত্র ১৪ বছর বয়সে যখন বায়ার্ন মিউনিখে যোগ দেন তখন তার ফুটবলীয় পরিচয় এটাই ছিল। পরবর্তীতে ধীরে ধীরে ডিফেন্ডার হয়ে যান বেকেনবাওয়ার। দুই উইংব্যাক, এক সেন্ট্রাল ডিফেন্ডারের পেছনে থাকতেন তিনি, কখনও সামনে, ইচ্ছে হলে প্রতিপক্ষের ডি বক্স পর্যন্ত চলে যেতেন এই ফ্রি স্পিরিট। পণ্ডিতরা ডিফেন্ডারের এই নতুন ভূমিকার নাম দিয়েছিল ‘সুইপার ব্যাক’ অথবা ‘লিবেরো’।

পরবর্তীতে একই ভূমিকায় প্রায় দেড়যুগ জার্মান ফুটবলকে সামলেছেন লোথার ম্যাথিয়াস। ১৯৯০ সালে জার্মানির তৃতীয় শিরোপা জয়ের সময় অবশ্য পুরোপুরি অ্যাটাকিং মিডফিল্ডার ছিলেন সে বার বর্ষসেরা ফুটবলার নির্বাচিত হওয়া জার্মান অধিনায়ক। ১৯৬৪-৬৫ সালে উপর্যুপরি ইউরোপিয়ান কাপ জয়ের সময় ইন্টার মিলানের লেফট ব্যাক গিয়াচিন্টো ফ্যাসেত্তি এই ‘লিবোরা’ পজিশনটি আবিষ্কার করেছিলেন। এর সঙ্গে ‘সৃষ্টিশীল’ ও আক্রমণাত্মক’ দর্শন যোগ করে সুইপার ব্যাক পজিশনকে অন্য এক উচ্চতায় নিয়ে গেছেন বেকেনবাওয়ার। আক্রমণে নেতৃত্ব দিয়েছেন, আবার বহু গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে শুধুমাত্র একজন স্ট্রাইকারকে বোতলবন্দী করার বিরক্তিকর দায়িত্বও নিতেন। ১৯৭৪-এর ফাইনালে অবশ্য পুরো খেলা পরিচালনা করেছেন তিনি। বার্টি ফোটস আর ওভারেথকে লাগিয়ে দিয়েছিলেন ক্রুয়েফের পেছনে। ১৯৬৬ সালে আবার চার্লটনকে চোখে চোখে রাখার গুরুভার সামলেছেন। তাতে অবশ্য শেষ রক্ষা হয়নি। ফাইনালে জার্মানিকে ৪-২ গোলে হারিয়ে একমাত্র বিশ্বকাপ শিরোপাটি জেতে ইংল্যান্ড। হ্যাটট্রিক করেন জিওফ হার্স্ট। দু’টি গোল তার। একটি গোল অবশ্যই লাইন্সম্যান তোফিক বাকরামভের! হার্স্টের দূরপাল্লার শটটি গোলবার কাঁপিয়ে যেখানে পড়ল জায়গাটি গোললাইন থেকে কম করে হলেও ২/৩ ইঞ্চি বাইরে ছিল। বিশ্বকাপ ফুটবলের সবচেয়ে বিতর্কিত এই গোলটি বাদ দিলেও হয়ত জিতে যেত ইংল্যান্ড। পরে বেকেনবাওয়ার বলেছেন- ‘ইংল্যান্ড বিট আস ইন নাইনটিন সিক্সটি সিক্স বিকজ চার্লটন ওয়াজ এ বিট বেটার দ্যান মি’। বেকেনবাওয়ার তখন আন্তর্জাতিক ফুটবলে মাত্র ১ বছরের শিশু। তবুও ’৬৬ -এর বিশ্বকাপে সবাই বুঝে গিয়েছিল বিশ্ব ফুটবলে আরেকজন নেতা আসছেন। বিশ্বকাপ শেষে চার্লটনকে কাইজার বলেছিলেন, ‘হেলমেট শোন (জার্মানির কোচ) আমাকে বলেছিলেন আপনাকে পাহারা দিতে।’ হেসে চার্লটন বলছিলেন, ‘আলফ রামসেও আমাকে বলেছিল, জার্মানির ওই টগবগে ছেলেটার ওপর চোখ রেখো।’

প্রথম রাউন্ডে সুইজারল্যান্ডের বিপক্ষে ২ গোল, সেমিতে লেভ ইয়াসিনকে পরাস্ত করা ‘বিউটি’সহ ’৬৬-তে মোট ৪ গোল। তখনও পুরোপুরি অ্যাটাকিং মিডফিল্ডার বেকেনবাওয়ার। ফাইনালে অবশ্য চার্লটনের মার্কিংয়ে ব্যস্ত রইলেন। কাজ হলো না। অনেক জার্মানিই মনে করে রক্ষণের চেয়ে আক্রমণে বেশি মনোযোগ দিলেই বরং ইরেজদের সে দিন বেশি ভোগাতে পারতেন বেকেনবাওয়ার। ৪ বছর পর অবশ্য প্রতিশোধ নিয়েছিল জার্মানি। ইংল্যান্ড যখন ২-০ গোলে এগিয়ে, বেকেনবাওয়ারের দুরন্ত গতির শট ইংলিশ জালে আশ্রয় নেয়। ‘স্ট্যান্ড ইন’ কিপার পিটার বনেট্টি ঠিক যেন চোখে সর্ষে ফুল দেখলেন। এর দু’মিনিট পর ক্লান্ত চার্লটনকে তুলে নেয় ইংল্যান্ড। বেকেনবাওয়ার যেন মুক্ত হলেন, ম্যানমার্কিংয়ের দায়িত্ব ছেড়ে এবার

পুরোপুরি আক্রমণের নেতৃত্বে। হঠাৎ করে ঝিমুতে শুরু করে ইংল্যান্ড। এক্সট্রা টাইমে মুলারের ১৪ নম্বর বিশ্বকাপ গোলে জিতে যায় জার্মান। সেমিতে অবশ্য রিভা, ফ্যাসেত্তির ইটালির কাছে হেরে যায় ৪-৩ গোলে। ’৬৬-তে ফাইনাল, ’৭০-এ সেমিফাইনাল- স্বভাবতই চরম হতাশা নিয়ে মেক্সিকো ছাড়েন কাইজার। জার্মান সম্রাটকে খুশি করতেই হয়ত ’৭৪-এ ক্রুয়েফকে ‘বলি’ দেন ফুটবল বিধাতা। মিউনিখ ফাইনালে হল্যান্ডের ১-২ গোলের পরাজয়ের পেছনে বেকেনবাওয়ারের ব্যাখ্যাটা এ রকম, ‘প্রথম গোল খেয়ে সুবিধা হয়েছিল আমাদের। হল্যান্ড ছিল হট ফেভারিট। এর মধ্যে এক মিনিটেই গোল। ওরা একটু নির্ভার হয়ে পড়েছিল। অ্যান্ড ওয়ানস ইউ রিলাক্সড ইউর গ্রিপ ইটস হার্ড ট্যু রিকভার দ্য ইনিশিয়েটিভ।’ পোস্ট ফাইনাল রিপোর্টে বেকেনবাওয়ারকে কোড করে লিখেছিলেন গার্ডিয়ানের সাংবাদিক ডেভিড লেচি। সে বারই প্রথমবারের মত ক্লাব ফুটবলে ইউরোর শ্রেষ্ঠত্ব নিশ্চিত করে বায়ার্ন মিউনিখ। বিশ্বকাপ থেকে ফিরে বেকেনবাওয়ার অদম্য হয়ে উঠলেন। ১৯৭৫, ’৭৬-এ আবারও ইউরোপিয়ান কাপ জিতল ব্যাভারিয়ানরা। টানা তিনবার ইউরোপিয়ান কাপ (এখনকার চ্যাম্পিয়নস লিগ) জেতা একমাত্র অধিনায়ক হয়ে অনন্য এক রেকর্ড করলেন কাইজার, যা আজও অক্ষুণ্ন আছে, হয়ত আরও বহুদিন থাকবে। ১৯৭৬-এ চেকদের কাছে টাইব্রেকারে ইউরোপিয়ান কাপ খোয়াল জার্মানি। ইউরোর (’৭২) পরপর বিশ্বকাপ জেতা প্রথম দলও বেকেনবাওয়ারের জার্মানি। পরবর্তীতে দিনো জফের ইতালি (’৬৮-তে ইউরোপিয়ান কাপ, ’৮২-তে বিশ্বকাপ) ও ক্যাসিয়াসের স্পেনও (২০১০-এ বিশ্বকাপ, ২০০৮ ও ’১২-তে ইউরো) এমন অর্জনের কৃতিত্ব দেখিয়েছে। জীবনে বেকেনবাওয়ার যা করেছেন তাতেই সোনা ফলিয়েছেন। ১৯৮৬ সালে যখন তাকে জার্মান দলের দায়িত্ব দেওয়া হয় তখন কোচিংয়ের একটি সার্টিফিকেটও ছিল না। তারপরও শুধুমাত্র বেকেনবাওয়ারের কৌশলকে পুঁজি করে প্লাতিনি, টিগানার ফ্লাইং ফরাসিদের ২-০ গোলে হারিয়ে ফাইনালে পৌঁছে যায় জার্মানি। অ্যাজটেকের চূড়ান্ত লড়াইয়ে ম্যারাডোনাকে প্রায় বাক্সবন্দী করে ফেলেছিলেন অ্যাগানথোলার ও থমাস বার্থোল্ডরা। ২-০ গোলে পিছিয়ে পরার পর ভোলার ও রুমেনিগের গোলে দারুণভাবে ফিরে আসে জার্মানি। অতঃপর ম্যারোডোনার সেই স্বর্গীয় পাস, হেরাল্ড সুমেখারকে পরাস্ত করে বারপোস্টে বুরুচাগার নিখুঁত শট। আসলে ’৮৬-এর ম্যারোডোনা অতিমানব, সকল কৌশল, বাঁধা-বিপত্তি ভেঙে চুরমার করার শৈল্পিক খেলায় মত্ত ছিলেন। একমাত্র ওই সোনার ট্রফিটিই পারত ম্যারাডোনাকে শান্ত করতে। হেরে গেলেন বেকেনবাওয়ার, হেরে গেলেন লোথার ম্যাথিয়াস।

কিন্তু প্রতিশোধ যে জার্মানদের রক্তের ঐতিহ্য। ঠিকই ’৯০-তে রোমের অলিম্পিক স্টেডিয়ামে এল দিয়েগোকে কাঁদিয়ে নিজের পুরস্কারটি বুঝে নেন ফ্রাঞ্জ বেকেনবাওয়ার। ব্রেহমের একমাত্র পেনাল্টি গোলের পেছনে কলম্বিয়ান রেফারি কোডেসালের ভূমিকাকে সারাবিশ্ব অনেক বড় করে দেখেছে। তবে ইতালিয়া ’৯০ জার্মানিরই ছিল। চ্যাম্পিয়নের মতোই খেলেছে তারা। মারিও জাগালোর (১৯৭০, ১৯৯৪) পর বেকেনবাওয়ার হলেন দ্বিতীয় ব্যক্তি যিনি অধিনায়ক (১৯৭৪) ও কোচ হিসেবে (১৯৯০) বিশ্বকাপ জিতেছেন।

ফিফার ‘ইলেভেন অব দ্য সেঞ্চুরি’, ওয়ার্ল্ড সকারের সর্বকালের সেরা একাদশ অথবা ইউরোপের সব জায়গায় বেকেনবাওয়ার ছিলেন অটোমেটিক চয়েস । তার প্রচেষ্টাতেই ২০০৬ সালে বিশ্বকাপের আয়োজক হতে পেরেছিল জার্মানি। আয়োজক কমিটির চেয়ারম্যান ছিলেন তিনি।এত অর্জন, সম্মান, অর্থকড়ি- তবুও ১৯৪৫ সালে মিউনিখের একটি সাধারণ পরিবারে জন্ম নেয়া শিশুটি কখনো জীবনের মূল্যবোধ হারিয়ে ফেলেনি। তাইতো তিনি বলতে পারেন, ‘অবশ্যই খেলোয়াড়দের বর্তমান জগতটা ভিন্ন। কিন্তু এটা ব্যক্তির উপর নির্ভর করে, তার মনন কেমন হবে। যেমন ধরুন মাইকেল জর্ডান বছরে ১০০ মিলিয়ন ডলার আয় করে। তারপরেও সে বাস্কেটবল খেলে যাচ্ছে এবং বিনয়ী।’

বেকেনবাওয়ারের কাইজার নাম হলো কবে থেকে? কিভাবে? দু’ধরনের মতবাদ প্রচলিত আছে। ১৯৬৯ সালে ভিয়েনায় প্রদর্শনী ম্যাচ খেলতে গিয়েছিল জার্মানি। তখন অস্ট্রিয়ার সাবেক রাজা ফ্রাঞ্জ যোসেফ ওয়ানের মূর্তির পাশে দাঁড়িয়ে ছবি তুলেছিলেন বেকেনবাওয়ার। তারপর থেকে মিডিয়া তাকে ‘ফুটবল কাইজার’ মানে ‘ফুটবলের সম্রাট’ ডাকতে শুরু করে।

মতবাদটি অনেক জনপ্রিয় হলেও এটাকে অসত্য বলে একটি রিপোর্ট প্রকাশ করেছিল জার্মান পত্রিকা ওয়েস্ট অ্যাম সনট্যাং। তাদের মতে, কাইজার নামকরণের উপলক্ষ ১৯৬৯ সালের ১৪ জুন। শালকে ফোরের বিপক্ষে কাপ ফাইনাল, সে দলের রেইনহার্ড লিবুডা বেকেনবাওয়ারের পজিশনে খেলেন, যার নিকনেম ছিল ‘কনিগ ভন ওয়েস্টফেলান’ মানে ওয়েস্টফ্যালিয়ার রাজা। এক পর্যায়ে বেকেনবাওয়ার তাকে ফাউল করেন। উত্তেজিত হয়ে যায় দর্শকরা। তা উপেক্ষা করে বল নিয়ে মাঠের অপর প্রান্তে চলে যান বেকেনবাওয়ার। সেখানে প্রায় আধা মিনিট বল নিয়ে কাড়িকুড়ি করেন। তৎক্ষণাৎ মিডিয়া লিবুডা বেকেনবাওয়ারের লড়াইয়ে নতুন মাত্রা যোগ করতে বায়ার্ন মিউনিখের লিবোরোকে ‘কাইজার’ বলতে শুরু করে। তবে যেভাবেই তার নাম ‘কাইজার’ হোক না কেন গুরুত্বপূর্ণ হল, এরপর থেকে এখন পর্যন্ত প্রায় ৪৪ বছর ধরে এটাকে যথাযথভাবে ‘ক্যারি’’ করছেন বেকেনবাওয়ার। ‘হি লিভস লাইক অ্যান ইমপেরর বাই অল মিনস’।

ফ্রাঞ্জ অ্যান্টন বেকেনবাওয়ার

জন্ম : ১১ সেপ্টেম্বর, ১৯৪৫

জন্মস্থান : মিউনিখ, জার্মানি

উচ্চতা : ৫ ফুট সাড়ে ১১ ইঞ্চি

পজিশন : মিডফিল্ডার, সুইপার

ক্লাব ক্যারিয়ার (সিনিয়র)

সাল ক্লাব ম্যাচ গোল

১৯৬৪-৭৭ বেয়ার্ন মিউনিখ ৪০৭ ৬০

১৯৭৭-৮০ নিউ ইয়র্ক-কসমস ১০৫ ১৯

১৯৮০-৮২ হামবুর্গ ২৮ ০

মোট ৫৮৭ ৭৯

জাতীয় দল

সাল দেশ ম্যাচ গোল

১৯৬৫-৭৭ পশ্চিম জার্মানি ১০৩ ১৪

ম্যানেজার : পশ্চিম জার্মানি, মার্শেই, বায়ার্ন মিউনিখ

অর্জন

বায়ার্ন মিউনিখ

জার্মান লিগ : ১৯৬৯, ’৭১, ’৭২, ’৭৩, ’৭৪ (৫ বার)

জার্মান কাপ : ১৯৬৬, ’৬৮, ’৬৯, ’৭১ (৪ বার)

ইউরোপিয়ান কাপ : ১৯৭৪, ’৭৫, ’৭৬ (৩ বার)

ইন্টারকন্টিনেন্টাল কাপ : ১৯৭৬

হামবুর্গ

জার্মান লিগ : ১৯৮২

কসমস

নর্থ আমেরিকান সকার লীগ : ১৯৭৭, ’৭৮, ’৮০

পশ্চিম জার্মানি (জাতীয়)

বিশ্বকাপ : ১৯৭৪

ইউরোপিয়ন কাপ : ১৯৭৬

ম্যানেজার হিসেবে বিশ্বকাপ জয় : ১৯৯০

ব্যক্তিগত অর্জন

ইউরোপিয়ান বর্ষসেরা ফুটবলার : ১৯৭২, ’৭৬

ফিফা প্রেসিডেন্সিয়াল অ্যাওয়ার্ড : ২০১২

ওয়েফা প্রেসিডেন্সিয়াল অ্যাওয়ার্ড : ২০১৩

বিশ্বকাপ সিলভার বল : ১৯৭৪

সিভিল অ্যাওয়ার্ড

জার্মান সরকারের ক্রস অব মেরিট : ১৯৭৬

বেভারিয়ান অর্ডার অব মেরিট : ১৯৮২

কসোভোর অনারারি কন্সাল : ২০১১

অন্তর্ভুক্তি : ফিফা ড্রিম টিম, ফিফা সর্বকালের

সেরা একাদশ, ওয়ার্ল্ড সকার শতাব্দী সেরা একাদশ।

(দ্য রিপোর্ট/এফজে/জেডটি/এএস/জুলাই ৩, ২০১৪)