সেরাদশে দেশি ক্রিকেটারদের জয়জয়কার
দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক : বিদেশিদের ছাড়িয়ে এবার ঢাকা প্রিমিয়ার ডিভিশন ক্রিকেট লিগে দেশি ক্রিকেটাররাই প্রাধান্য বিস্তার করেছেন। প্রথম ক্রিকেট মৌসুম শেষ হয়েছে শুক্রবার। এবার লিগের সেরা হওয়া ২টি দলই একেবারে নতুন। প্রথমবারের মতো শিরোপা জিতেছে গাজী ট্যাংক ক্রিকেটার্স; রানার্সআপ শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাব।
লিগ টেবিলে ব্যক্তিগত পরর্যায়েও এগিয়ে চ্যাম্পিয়ন গাজী ট্যাংকের ক্রিকেটাররা। ব্যাটে-বলে নৈপুণ্যে শীর্ষ ১০ রয়েছে এ ক্লাবটির অধিকাংশ ক্রিকেটারই। শেখ জামালের ক্রিকেটারারও পিছিয়ে নেই। গতবারের রানার্সআপ প্রাইম ব্যাংক ক্রিকেট ক্লাব এবার পঞ্চম স্থান নিয়ে শেষ করলেও দলটির ব্যক্তিগত নৈপুণ্য বেশ সমৃদ্ধ। ব্যাটিং-বোলিংয়ে শীর্ষ দশে বাংলাদেশ ১৭ জন; তাদেরই জয়জয়কার। তার মানে ওখানে ব্যাটিংয়ে মাত্র ২জন এবং বোলিংয়ে মাত্র একজন (জেহান মুবারক) বিদেশি।
প্রথমবারের মতো লিস্ট ‘এ’ মর্যাদা নিয়ে শুরু হওয়া এবারের লিগে আগের যেকোনো সময়ের তুলনায় ইংলিশ ক্রিকেটারদের আধিক্য ছিল বেশি। এর আগে ঢাকা লিগ জমিয়ে রেখেছিলেন পাকিস্তান, ভারত ও শ্রীলঙ্কার ক্রিকেটাররা। এবার কোনো পাকিস্তানি ক্রিকেটার খেলেননি। ব্যাটিংয়ের সেরা হয়েছেন ইংল্যান্ড জাতীয় দলের তারকা ক্রিকেটার রবি বোপারা। শেষ ম্যাচে ১৫৭ রানের অপরাজিত একটি ইনিংস খেলেই তিনি একলাফে শীর্ষে ওঠেন। দ্বিতীয় স্থানে থাকা ইমরুল কায়েস ছিলেন অনেক বেশি ধারাবাহিক। তবে জাতীয় দলের ক্রিকেটাররা মাঝে অবশ্য ৩/৪টি করে ম্যাচ খেলতে পারেননি আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ব্যস্ত থাকায়। সে কারণে শীর্ষ দলের ব্যাটিং-বোলিং নৈপুণ্যে তেমন নেই জাতীয় দলের ক্রিকেটারদের নাম। তবে এর মাঝেও দুর্দান্ত খেলে অধিনায়ক মুশফিকুর রহিম শেখ জামালের হয়ে করেছেন ১২ ম্যাচে ৬৯.৩৩ গড়ে ৬২৪ রান। তার অবস্থান ৩ নাম্বার। তবে চমক দেখিয়েছেন দীর্ঘদিন জাতীয় দলের বাইরে থাকা রকিবুল হাসান। বড় চমক ছিল সৈকত আলীর। প্রাইম ব্যাংকের এ ব্যাটসম্যান ১৬ ম্যাচে ৪১.৩৬ গড়ে ৫৭৯ রান করে আছেন চারে। গাজীর হয়ে খেলে এবার ১৫ ম্যাচে ৪৫.৯২ গড়ে ৫৫১ রান করে আছেন তালিকার ছয়ে। এছাড়া শীর্ষ দশে জায়গা করে নিয়েছেন জাতীয় দলের সহঅধিনায়ক মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ (৯) ও মুমিনুল হক (১০)। অনুর্ধ্ব-১৯ দলের হয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে যাওয়া এবং আবাহনী সুপার লিগে উঠতে না পারার কারণে দলটির তরুণ ব্যাটসম্যান মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত ছিলেন শীর্ষে। তবে মাত্র ৯ ম্যাচ খেলা মোসাদ্দেক ৫৪.৩৮ গড়ে ৪৩৫ রান করে এখন একাদশ নাম্বর ব্যাটসম্যান।
বোলিং নৈপুণ্যে শীর্ষ সাতটি স্থানই দখলে বাংলাদেশির। আরাফাত সানী ও ফরহাদ রেজা ২৯টি করে উইকেট নিয়ে যৌথভাবে সর্বাধিক উইকেট শিকারি। গাজীর স্পিনার আরাফাত চমক দেখিয়েছেন। ১৬ ম্যাচে মাত্র ১৯.১৪ গড়ে নিয়েছেন ২৯ উইকেট। আর জাতীয় দলে অনিয়মিত পেস অলরাউন্ডার ফরহাদ ১৫ ম্যাচে সমান উইকেট নিয়েছেন ১৯.৬৬ গড়ে। জাতীয় দলে নিয়মিত সুযোগ না পাওয়া আরেক স্পিনার এনামুল হক জুনিয়র ঘরোয়া ক্রিকেটে তার দুর্দান্ত নৈপুণ্য ধরে রেখে এ দু’জনের চেয়ে মাত্র ১ উইকেট কম নিয়ে আছেন তিনে। তবে জাতীয় দলের পেসার রুবেল হোসেন মাত্র ১০ ম্যাচ খেললেও ১৪.৫৬ গড়ে ২৫ উইকেট নিয়ে আছেন চার নাম্বরে। নিউজিল্যান্ড সিরিজে অভিষেক ঘটা তরুণ পেসার আলআমিন হোসেন মাত্র ৭ ম্যাচেই ২০ উইকেট নিয়ে সাত নাম্বরে। এছাড়া আর কোনো জাতীয় দলের বোলারদের ঠাঁই হয়নি সেরা দশের তালিকায়। নির্ভরযোগ্য স্পিনার আব্দুর রাজ্জাক ১২ ম্যাচে দশে থাকা নাবিল সামাদের সমান ১৭ উইকেট নিয়েও গড়ের কারণে ১১ নাম্বরে।
(দ্য রিপোর্ট/এএস/সিজি/নভেম্বর ৩০, ২০১৩)