রোজায় ডায়াবেটিক রোগীর খাবার
ডায়াবেটিস রোগের ক্ষেত্রে খাবার, ব্যায়াম ও ওষুধের শৃঙ্খলা ও সম্বন্বয় খুবই গুরুত্বপূর্ণ। বছরের ১১ মাস একটি নিয়ম অনুসরণ করা হলেও রোজার সময় এসে পাল্টে যায়। কারণ রোজাদারদের দীর্ঘ সময় না খেয়ে থাকতে হয়। তাই এ সময়ে ডায়াবেটিক রোগীদের বিশেষ সতর্কতা অনুসরণ করতে হয়। প্রয়োজনে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিতে হবে। নিচে দরকারি কিছু তথ্য ও খাবারের তালিকা দেওয়া হলো-
দরকারি তথ্য
- সেহেরির খাবার শেষ সময়ের অল্প কিছুক্ষণ আগে খাবেন।
- ইফতারের সময় বেশি পরিমাণে মিষ্টি ও চর্বি জাতীয় খাবার গ্রহণ করবেন না।
- ডায়াবেটিক রোগীদের পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি ও পুষ্টিকর খাবার খেতে হবে যেন পানিশূন্যতায় না ভোগেন। একটা খেজুর খেতে পারেন। খাদ্য তালিকায় ফলমূল, শাকসবজি, ডাল ও টক দই রাখতে পারেন। ডাবের পানি পান করতে পারেন। অন্য কোনো পানীয় বেছে নিলে তবে চিনিমুক্ত পানি বাছাই করুন। যদি মিষ্টি পানীয় পান করতে চান, তবে সুইটনার যেমন- ক্যানডেরাল বা সুইটেক্স ব্যবহার করতে পারেন। ভাজা-পোড়া খাবার যেমন- পেঁয়াজু, বেগুনী, পুরি, পরোটা, কাবাব অল্প পরিমাণে খেতে পারেন।
- খাদ্যের ক্যালরি বুঝে পরিমাণ ও ধরন ঠিক করতে হবে। সঠিক সময়ে সঠিক পরিমাণ খাওয়া প্রয়োজন।
- রমজানের আগে যে পরিমাণ ক্যালরিযুক্ত খাবার খেতেন রমজানে ক্যালরির পরিমাণ ঠিক রেখে খাওয়ার সময় ও ধরন বদলাতে হবে। প্রয়োজন হলে পুষ্টি বিশেষজ্ঞের সঙ্গে যোগাযোগ করে খাবার তালিকা ঠিক করুন। লক্ষ্য রাখতে হবে ওষুধের সঙ্গে খাবারের যেন সামঞ্জস্য থাকে। ইফতারের সময় অতিভোজন ও শেষ রাতে অল্প আহার পরিহার করুন।
বিশেষভাবে জানা প্রয়োজন
- রমজান মাস রহমত, বরকত, মাগফিরাত ও নাজাতের মাস।
- রমজান আত্মশুদ্ধি ও আত্মোপলব্ধির মাস।
- রমজানের সুশৃঙ্খল জীবন-যাপন ও ইবাদত বন্দেগী ডায়াবেটিক রোগীদের ওজন ও সুগার কমাতে সাহায্য করে।
- ডায়াবেটিক রোগীরা রোজা রাখতে পারবেন। তবে ৩ মাস আগে থেকে ডাক্তারের সঙ্গে পরামর্শ করে প্রস্তুতি নিতে হবে।
- নিজে নিজে ডায়াবেটিসের ওষুধ সমন্বয় করবেন না। এর পরিণতি খারাপ হতে পারে।
- রোজার সময় দিনে ও রাতে সুগার মাপা উচিত। ইসলামী চিন্তাবিদদের মতে, এতে রোজার কোনো ক্ষতি হয় না।
- দিনের বেলা অতিরিক্ত ব্যায়াম করা উচিত নয়। এতে হাইপোগ্লাইসেমিয়া হতে পারে।
- রাতের বেলা পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি (সম্ভব হলে ডাবের পানি), কম মিষ্টি রসালো ফল ও পুষ্টিকর খাবার খাওয়া উচিত।
-ডায়াবেটিক রোগীদের সার্বিক কল্যাণের জন্য আত্মীয়-স্বজন, বন্ধু-বান্ধব ও প্রচার মাধ্যমগুলোকে এগিয়ে আসতে হবে।
লেখক : ডা. শাহজাদা সেলিম
ডায়াবেটিস ও হরমোন বিশেষজ্ঞ (এন্ডোক্রাইনোলজিস্ট)
শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল
চেম্বার : কমফোর্ট ডক্টরস্ চেম্বার, ১৬৫-১৬৬, গ্রীন রোড, ঢাকা।
মোবাইল : ০১৯১৯০০০০২২, ই-মেইল : selimshahjada@gmail.com