দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক : দমন-পীড়ন চালিয়ে চলমান আন্দোলন সরকার রুখতে পারবে না বলে হুঁশিয়ার করেছে বিএনপি। একই সঙ্গে বিএনপি চলমান সংকট সমাধানে প্রধানমন্ত্রীকে সন্মানজনকভাবে পদত্যাগ করারও আহ্বান জানিয়েছে। বিরোধী দলকে নিশ্চিহ্ন করে একদলীয় শাসন কায়েম করাই আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক মেনিফেস্টো বলেও মন্তব্য করেছে দলটি।

দলের মুখপাত্র যুগ্মমহাসচিব সালাহউদ্দিন আহমেদ রবিবার সকালে টেলিফোনে সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা দৃঢ়তার সঙ্গে বলে দিতে চাই, শত দমন-পীড়ন, হত্যা-নির্যাতন ও মামলা-হামলায় চলমান আন্দোলন আরও বেগবান হবে। একে রুখতে পারবে না সরকার। এখনও সময় আছে, সরকারকে আহ্বান জানাব, সব নেতাকর্মীর মুক্তি দিন। সব মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করুন। নির্দলীয় সরকারের দাবি মেনে নিন।’

দেশব্যাপী চলমান অবরোধ কর্মসূচি শান্তিপূর্ণভাবে পালনের জন্য দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানান বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব।

নয়াপল্টন কার্যালয় থেকে শনিবার ভোরে রুহুল কবির রিজভীকে গ্রেফতারের পর সালাহউদ্দিন আহমেদকে দলের মুখপাত্রের দায়িত্ব দেওয়া হয়। পুলিশ কার্যালয়ে নেতাকর্মীদের প্রবেশ করতে দিচ্ছে না বলে অভিযোগ করেছে বিএনপি। এরকম অবস্থায় সালাহউদ্দিন আহমেদ দলের মুখপাত্রের দায়িত্ব পেয়েও কার্যালয়ে প্রবেশ করতে পারছেন না।

তিনি আত্মগোপনে থেকে দলের দায়িত্ব পালন ও নেতাকর্মীদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন। টেলিফোন করে ও বিবৃতি দিয়ে দলের অবস্থান দেশবাসী ও নেতাকর্মীদের কাছে তুলে ধরছেন।

বিরোধীদলীয় নেতাকে রাস্তায় এসে আন্দোলন করার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আহ্বানের জবাবে যুগ্ম মহাসচিব সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীকে সবিনয়ে বলতে চাই, পেটুয়া পুলিশ বাহিনী ও আওয়ামী লীগের দানবের সঙ্গে শান্তিপ্রিয় আন্দোলনকারী মানবের লড়াই হয় না। ক্ষমতার উত্তাপে প্রধানমন্ত্রী অন্ধ হলেও প্রলয় বন্ধ হবে না।’

নির্দলীয় সরকারের দাবি মেনে নেওয়ার আবারও আহ্বান জানিয়ে বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবি সব গণতন্ত্রকামী মানুষের দাবি। জাতিসংঘসহ সকল আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের দাবিতে পরিণত হয়েছে। আমরা বলতে চাই, শত সহস্র শহীদের রক্তে স্নাত নির্দলীয় সরকারের দাবি আদায়ের কোনো বিকল্প নেই।’

সংলাপ সম্পর্কে সরকারের মন্ত্রী-নেতাদের বক্তব্যকে ‘বিভ্রান্তিমূলক’ অভিহিত করে বিএনপির মুখপাত্র বলেন, ‘মহাজোটের অবৈধ সরকার দেশে একরতফাভাবে প্রহসনের নির্বাচন করতে চায়। পদলেহী মেরুদণ্ডহীন নির্বাচন কমিশন দিয়ে সেই আয়োজন শেষ প্রায়।’ তিনি অভিযোগ করেন, ‘একদিকে সরকার মুখে সংলাপের কথা বলছে। অন্যদিকে তারা প্রতিনিয়ত রাজপথে অজস্র বুলেটে ঝাঁঝরা করছে গণতন্ত্রকামী মানুষের বুক। প্রধানমন্ত্রী ও নেতা-মন্ত্রীরা আলোচনা ও সংলাপের মালা জপতে জপতে দেশবাসীর সঙ্গে প্রতারণায় লিপ্ত রয়েছে।’

সালাহউদ্দিন আরও অভিযোগ করেন, ‘র‌্যাব-পুলিশ-বিজিবি পরিবেষ্টিত আওয়ামী লীগের সশস্ত্র ক্যাডাররা প্রতিনিয়ত বিরোধী দলের অসংখ্য নেতাকর্মীদের হত্যা করছে।’

দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয় ভাঙচুর ও তছনছ করে দলের শীর্ষ নেতাদের বারে বারে গ্রেফতার করা হচ্ছে অভিযোগ করে সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘বিরোধী দলের অফিস ভাঙচুর করা আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক সংস্কৃতি। বাসে আগুন দিয়ে মানুষ পুড়িয়ে হত্যা করা ক্ষমতাসীনদের বর্ণাঢ্য ঐতিহ্য। বিরোধী দলকে নিশ্চিহ্ন করে একদলীয় শাসন কায়েম করাই তাদের রাজনৈতিক মেনিফেস্টো।’

(দ্য রিপোর্ট/ টিএস-এমএইচ/এইচএসএম/ডিসেম্বর ০১, ২০১৩)