দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক : বিএনপি যুগ্ম-মহাসচিব সালাহউদ্দিন আহমেদ অভিযোগ করে বলেন, ‘একদলীয় প্রহসনের নির্বাচনের সব আয়োজন সরকার সম্পন্ন করেছে। তারা গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র ব্যবস্থার কফিনে শেষ পেরেক ঠুকেছে। গৃহপালিত নির্বাচন কমিশন প্রধানমন্ত্রীর হুকুম পালনে ব্যস্ত।’ সোমবার সন্ধ্যায় বিএনপির প্যাড এ দলের সহ-দফতর সম্পাদক আবদুল লতিফ জনি স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে তিনি এ কথা জানান।

অজ্ঞাত স্থানে আত্মগোপনে থাকা দলের নতুন দায়িত্বপ্রাপ্ত মুখপাত্র সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী গতকাল (রোববার) বিরোধী দলীয় নেতাকে গণহত্যার দায়ে অভিযুক্ত করেছেন। শাপলা চত্বরে মধ্যরাতে বাতি নিভিয়ে দিয়ে সরকার গণহত্যার যে জঘণ্য নজির স্থাপন করেছে, তা কেবল প্রধানমন্ত্রীর সরাসরি নির্দেশে হয়েছে। এটা সভ্য দুনিয়ার ইতিহাসে নজিরবিহীন।’

সালাহউদ্দিন বলেন, ‘আওয়ামী লীগের রক্ষী বাহিনী বর্বরোতম গণহত্যার ইতিহাস। বাসে গান পাউডার দিয়ে শাহবাগে মানুষ পুড়িয়ে মারার ইতিহাস। এদেশের মানুষ লগি-বৈঠার তাণ্ডবের কথা এখনও ভুলে যায়নি। চলমান গণ আন্দোলনকে কুলষিত করার কু-মানসে আওয়ামী লীগ বাহিনী সুপরিকল্পিতভাবে মানুষ পুড়িয়ে মারার ঘৃন্য কর্মকাণ্ড পরিচালনা করছে। আমরা এহেন কর্মকাণ্ডের নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।’

বিএনপির যুগ্ম-মহাসচিব বলেন, ‘দেশব্যাপী আওয়ামী লীগের মন্ত্রী-এমপিরা এখন গণরোষের শিকার হচ্ছেন। কেউ কেউ নির্বাচনী এলাকায় পুলিশ পাহারায় প্রবেশ করতেও ভয় পাচ্ছে। তারপরেও প্রহসনের নির্বাচনের মাধ্যমে আওয়ামী লীগ ক্ষমতা চিরস্থায়ী করার দুঃস্বপ্ন দেখছে।’

তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী প্রায়ই সংবিধানের দোহাই দিয়ে থাকেন। তিনি সেই সংবিধানের কথা বলছেন যে সংবিধান তাকে প্রধানমন্ত্রীত্ব চিরস্থায়ী বন্দোবস্তো দিয়েছে। তার মরহুম পিতাও বাকশালী সংবিধানের মাধ্যমে রাষ্ট্রপতির পদ অনির্দিষ্টকালের জন্য ইজারা নিয়েছিলেন। যে পঞ্চদশ সংশোধনী সংসদে পাশ হয়েছে তা কেবল প্রধানমন্ত্রীর একক ইচ্ছার প্রতিফলন। সেখানে জনগণের অভিপ্রায়ের প্রতিফলন হয়নি।’

সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘আমরা নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে সাধারণ নির্বাচন চাই। যার জন্য আওয়ামী লীগই ১৭৩ দিন হরতাল-অবরোধ পালন করেছিলো। ওই সময়ে বহুমূল্যবান জান-মাল ধ্বংস করেছে তারা। দেশের জনগণ এই অবৈধ সরকারের পদত্যাগ চায়। অন্যথায় গণ-আন্দোলনের মুখে স্বৈরশাসনের পতন হতে বাধ্য। আমরা আশা করি, গণদাবির প্রতি শ্রদ্ধা রেখে প্রধানমন্ত্রী অবিলম্বে পদত্যাগ করবেন। নির্দলীয় সরকারের দাবি মেনে নেবেন।’

বিএনপির দায়িত্বপ্রাপ্ত মুখপাত্র আরও বলেন, ‘সরকার ইতোমধ্যে নির্দলীয় সরকারের দাবি মেনে না নেওয়ায় ও নির্বাচন কমিশন নির্বাচনের তফসিল স্থগিত না করায়, জনতার দাবি অনুযায়ী চলমান শান্তিপূর্ণ অবরোধ কর্মসূচি বৃহস্পতিবার বিকাল ৫টা পর্যন্ত বর্ধিত করা হলো। দেশবাসীকে কষ্ট স্বীকার করে হলেও দেশ, জাতি ও গণতন্ত্র, দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব অক্ষুন্ন রাখার স্বার্থে এই অবরোধ কর্মসূচি পালন করার জন্য ১৮ দলীয় জোট নেত্রী খালেদা জিয়ার পক্ষ থেকে আমি উদাত্ত আহবান জানাচ্ছি।’

(দ্য রিপোর্ট/টিএস-এমএইচ/এমসি/ডিসেম্বর ০২, ২০১৩)