দ্য রিপোর্ট ডেস্ক : ব্রাজিল বিশ্বকাপের ড্র অনুষ্ঠানের বাকি এক সপ্তাহ। বিশ্বকাপের ৩২টি দেশের ফুটবলাররা ব্রাজিলে আসবে আর মাত্র ৬ মাস পর। অথচ বিশাল এই ফুটবলযজ্ঞের ভেন্যুগুলো এখনো পুরোপুরি প্রস্তুত হয়নি। ফলে শেষ পর্যন্ত কিছুটা শঙ্কা থাকছেই।

দুয়ারে যখন উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের আয়োজন। ঠিক সেই সময়ে সাও পাওলো এরিনায় মঙ্গলবার সংঘটিত হয়েছে দুর্ঘটনা। ফলে উদ্বোধন আয়োজনের মহামঞ্চ স্টেডিয়ামের চলমান নির্মাণ কাজ আরেক দফা থমকে গেছে। স্থানীয়দের স্টেডিয়ামটি ফিফা কর্তৃপক্ষের হাতে তুলে দেওয়ার সর্বশেষ সময় ৩১ ডিসেম্বর। এমন পরিস্থিতিতে স্টেডিয়ামটি সম্পূর্ণভাবে প্রস্তুত করা সম্ভব হবে কিনা; তা এখনো নিশ্চিত করতে পারেনি স্থানীয়রা।

সবচেয়ে দুঃখজনক ঘটনা; এর আগে আরো দু’টি স্টেডিয়ামে দুর্ঘটনা, সেই ঘটনায় ২ শ্রমিকের মৃত্যুতে পরিস্থিতি জটিল আকার ধারণ করে। ফলে ১১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ব্যয় করে টুর্নামেন্ট আয়োজনের প্রতিবাদ জানিয়ে স্থানীয়রা বিক্ষোভ করেছে। সবকিছু মিলিয়ে টুর্নামেন্টের সময় যত ঘনিয়ে আসছে ততই শঙ্কা বাড়ছে। গত জুনে সরকারি দুর্নীতি, অধিক হারে রাজস্ব আদায় এবং স্টেডিয়াম নির্মাণের জন্য ব্যাপক অর্থ ব্যয়ের প্রতিবাদে রাস্তায় নেমে আসে ১০ লাখেরও বেশি নাগরিক। সম্প্রতি নতুন করে সেখানে ফের বিক্ষোভ প্রদর্শন করা হচ্ছে। সব বিষয় নিয়ে বলতে গেলে টালমাটাল অবস্থায় রয়েছে বিশ্বকাপ আয়োজক দেশটি।

ব্রাজিল প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল যে বিশ্বকাপকে সামনে রেখে তাদের অবকাঠামোগত সংস্কার কার্যক্রম দ্রুততার সঙ্গেই সেরে ফেলবে। অথচ বিশাল এই আয়োজনের জন্য পরিকল্পনার প্রাথমিক কাজগুলোই তারা এখনো পর্যন্ত শেষ করতে পারেনি। এমনকি স্থানীয় এবং দেশি-বিদেশি সমর্থকদের যাতায়াতের জন্য ব্রাজিলীয় ৩টি শহরের বিমান বন্দর সংস্কারের যে পরিকল্পনা ছিল; তার কোনো অগ্রগতি লক্ষ্য করা যাচ্ছে না। দেশের ৩০ লাখ ফুটবল অনুরাগীর সঙ্গে অন্তত ৬ লাখ বিদেশি সমর্থক বিশ্বকাপ উপলক্ষে ব্রাজিলের বিভিন্ন শহর ভ্রমণ করবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। আয়োজকরা দর্শকদের যাতায়াতের এই চাহিদা আদৌ পুরণ করতে পারবে কিনা তা নিয়ে যথেষ্ট সন্দেহ সৃষ্টি হয়েছে।

আমাজানের পাদদেশে অবস্থিত স্বাগতিক শহর কুইয়াবারের চিত্রও একই রকম। ৪৩ হাজার দর্শক ধারণ ক্ষমতার স্টেডিয়ামের দর্শকদের জন্য সেখানে হোটেলের ধারণ ক্ষমতা মাত্র ১৩ হাজার। সুযোগ নিয়ে ভাড়াও বাড়িয়ে দিয়েছে হোটেলগুলো। অপরদিকে এ পর্যন্ত ১০ দফা ভাড়া বাড়িয়েছে বিমানগুলো।

১২ স্টেডিয়াম প্রস্তুত করার জন্য শেষ সময় নির্ধারণ করা হয় চলতি বছরের ৩১ ডিসেম্বর। ফিফার মতে সময় বাড়ানোর এখন আর কোনো সুযোগ নেই। স্থানীয় তথ্য মতে, ইতোমধ্যে ১১টি স্টেডিয়ামে ৯০ শতাংশ প্রস্তুতি কাজ শেষে হয়েছে। তবে সাও পাওলোতে দুর্ঘটনার কারণে কাজে ধীর গতিতে চলছে। ফলে তা সবার মাথা ব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এ ব্যাপারে স্থানীয় আয়োজক কমিটির প্রধান রিকার্ডো ট্রেড বলেছেন, ‘১২টি শহরের ব্যাপারে আমরা পরিপূর্ণভাবে আত্মবিশ্বাসী।’ ব্রাজিলের স্থপতি ও প্রকৌশল ইউনিয়নের সভাপতি হোসে রবার্তো বের্নাসকোনি বলেছেন, নির্ধারিত সময়ের চেয়ে অন্তত এক সপ্তাহ থেকে শুরু করে, ১০ দিন এবং কোনো কোনো ক্ষেত্রে একমাসেরও বেশি সময় লাগতে পারে সব কিছু প্রস্তুত হতে।’

(দ্য রিপোর্ট/এএস/এইচএসএম/ডিসেম্বর ০২, ২০১৩)