ঠাকুরগাঁও পাক-হানাদার মুক্ত দিবস মঙ্গলবার
মো. শামীম রিজভী, দ্য রিপোর্ট : ঠাকুরগাঁও পাক-হানাদার মুক্ত দিবস মঙ্গলবার।১৯৭১ সালের এই দিনে ঠাকুরগাঁও শত্রুমুক্ত হয়। মুক্তিযোদ্ধা ও সর্বস্তরের জনগণ এদিন ভোরে ঠাকুরগাঁও শহরে প্রবেশ করে বাংলাদেশের পতাকা উড়িয়ে দেন। শুরু হয় বিজয়ের উল্লাস।
৭১ সালের ২৭ মার্চ কালরাতে পাকবাহিনীর হাতে প্রথম শহীদ হন রিক্সাচালক মোহাম্মদ আলী। পরদিন ২৮ মার্চ ‘জয় বাংলা ধ্বনি’ উচ্চারণ করায় শিশু নরেশ চৌহানকে গুলি করে হত্যা করে পাকবাহিনী। ২৯ মার্চ ঠাকুরগাঁও ইপিআরএর সুবেদার কাজিম উদ্দিন সংগ্রাম কমিটির সঙ্গে পরামর্শ করে হাবিলদার বদিউজ্জামানের সহায়তায় অস্ত্রাগারে হামলা চালায়। তারা সব অস্ত্র বাঙ্গালী সেনাদের হাতে তুলে দিয়ে বিদ্রোহ ঘোষণা করে। তার নির্দেশে পাকিস্তানী সেনা অফিসারদের গুলি করে হত্যা করা হয়। ফলে ব্যাটালিয়ান হেড কোয়ার্টার পুরোপুরি বাঙ্গালীদের দখলে চলে আসে। তখন থেকে ঠাকুরগাঁওয়ের প্রশাসন পরিচালিত হতে শুরু করে আলহাজ্ব ফজলুল করিমের নির্দেশে।
এ সময় ১০টি প্রশিক্ষণ ক্যাম্প চালু করা হয়। পাকিস্তানি বাহিনীকে ঠাকুরগাঁওয়ে ঢুকতে না দেওয়ার জন্য ২০টি জায়গা নির্ধারণ করে প্রতিরোধের ব্যবস্থা গড়ে তোলা হয়। কিন্তু ১০ এপ্রিল থেকে ঠাকুরগাঁওয়ের সঙ্গে মহকুমারে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। সৈয়দপুরে পাকিস্তানি সেনারা শক্ত ঘাঁটি করে এগিয়ে আসতে শুরু করে। অত্যাধুনিক অস্ত্রে সজ্জিত পাক সেনাদের সঙ্গে টিকে থাকা অসম্ভব হয়ে পড়ে স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধাদের। তখন সংগ্রাম কমিটি ১৩ এপ্রিল তাদের কন্ট্রোল রুম ও ২০টি প্রতিরোধ ক্যাম্প তুলে নিয়ে সীমান্ত অবস্থান নেয়। নেতৃবৃন্দ শহর ছেড়ে চলে যায়। ১৫ এপ্রিল শেল বর্ষণ করতে করতে ১০টি ট্রাক ও ৮টি জিপে করে পাকিস্তানি সেনারা শহরে ঢুকে পড়ে। শুরু হয় হত্যা, নির্যাতন, লুটপাট আর বাড়ি ঘরে অগ্নিসংযোগের ঘটনা। আওয়ামী লীগের ঘাঁটি বলে পরিচিত ঠাকুরগাঁওয়ের ইসলাম নগর থেকে ছাত্রনেতা আহাম্মদ আলী, ইয়াকুব আলী, মাজারুল, দবিরুল ইসলাম, নুরুজ্জামান ও সিরাজউদ্দীনকে ধরে এনে হানাদার বাহিনীর ঠাকুরগাঁও ক্যাম্পে আটক করে রাখে। কয়েকদিন পর বেয়নেট চার্জ করে হত্যার পর তাদের লাশ একযোগে শহরের টাঙ্গন ব্রিজের পশ্চিম পার্শ্বে পুতে ফেলা হয়।
এদিকে সদর থানার ফাঁড়াবাড়িতে সন্তান মুক্তিযোদ্ধা হওয়ার অপরাধে বাবা শেখ শহর আলী ও তার ভাই শেখ বহর আলীসহ ১৯ জন নিরীহ গ্রামবাসীকে ধরে এনে হত্যা করে তাদের লাশ আব্দুর রশিদ ডিগ্রী কলেজের পাশে একই গর্তে মাটি চাপা দেওয়া হয়। হানাদার বাহিনী ও তার দোসররা সবচেয়ে বড় গণহত্যাকাণ্ড চালায় সদর উপজেলার জাঠিভাঙ্গা গ্রামে। সেখানে স্থানীয় রাজাকারদের সহায়তায় পাকবাহিনী আশপাশের ৩/৪টি গ্রামের প্রায় ৮ হাজার নিরিহ গ্রামবাসীকে ধরে এনে গুলি করে হত্যা করে লাশ মাটি চাপা দেয়। জগন্নাথপুর, গড়েয়া শুকানপুকুরী এলাকার কয়েক হাজার লোক ভারত অভিমূখে যাওয়ার সময় পাথরাজ নদী এলাকায় রাজাকাররা তাদের আটক করে। স্বর্ণালংকার লুটপাট চালিয়ে হত্যার পর তাদের লাশ নদীতে গণকবর দেওয়া হয়। রুহিয়ার রামনাথ হাটে ফজলুল করিমের আত্মীয় হওয়ার অপরাধে পাক সেনারা রফিকুল, রেজাউল, বেলাল ও দেলোয়ারসহ ১১ জনকে বাড়ি থেকে ধরে এনে হত্যা করে। এরপর পীরগঞ্জ থানার আওয়ামী লীগ নেতা ডা. সুজাউদ্দীন, অধ্যাপক গোলাম মোস্তাফা, আতাউর রহমান, আব্দুল জব্বার ও মোজাফ্ফর আলীসহ ৭ জন রাজনৈতিক নেতাকে ধরে এনে পীরগঞ্জ-ঠাকুরগাঁও পাকা সড়কের পাশে ভাতার মারি নামক আখফার্মে হত্যা করে। বিভিন্ন সময়ে এ থানার প্রায় ৩ হাজার নিরিহ মানুষকে স্থানীয় রাজাকারদের সহায়তায় ক্যাম্পে ধরে এনে তাদের হত্যা করে জগথা রাইস্ মিল ও সরকারি কলেজের পাশে মাটি চাপা দেওয়া হয়।
জেলার রাণীশংকৈল থানা ক্যাম্পের পাকবাহিনী স্থানীয় রাজাকারদের সহায়তায় বিভিন্ন গ্রাম থেকে প্রায় ৫ হাজার লোককে ধরে এনে খুনিয়াদিঘী নামক পুকুর পাড়ে সারিবদ্ধভাবে ব্রাশফায়ারের হত্যা করে তাদের লাশ পুকুরের পানিতে ভাসিয়ে দেয়। গুলি করার আগে তাদের পুকুর পাড়ের একটি শিমুল গাছের সঙ্গে হাতে পায়ে লোহার পেরেক গেথে দিয়ে মুক্তিযোদ্ধাদের বিভিন্ন খবর জানতে বর্বর নির্যাতন চালায়। তখন থেকেই ওই পুকুরটি খুনিয়া দিঘি নামে পরিচিত।
বালিয়াডাঙ্গী থানার মুক্তিযোদ্ধা সংগঠক আলহাজ্ব দবিরুল ইসলাম (বর্তমান এমপি) এর বাবা আকবর আলীকে বাড়ী থেকে ধরে এনে গুলি করে হত্যা করে লাশ তীরনই নদীতে ফেলে দেয়। পাকবাহিনী ২৫ নিরিহ লোককে বাড়ি থেকে ডেকে এনে বালিয়াডাঙ্গী ক্যাম্পে এক লাইনে দাঁড় করিয়ে গুলি করে হত্যা করা হয়। হরিপুর থানার শাইফুদ্দীন, মহিরউদ্দীন, নুরুল ইসলাম, নজরুল ইসলাম, মজিবর রহমান ও তার ভাই এবং হরিপুর মসজিদের ইমামসহ প্রায় শতাধিক ব্যক্তিকে হরিপুর পাকবাহিনীর ক্যাম্পে ধরে আনা হয়। কিন্তু সেখান থেকে কেউ আর ফিরে আসেনি। হরিপুরের ঝিগড়া গ্রাম, কুসলডাঙ্গীর বহু মানুষকে একসঙ্গে ডেকে বেয়নেট দিয়ে খুটিয়ে হত্যা করে মাটি চাপা দেওয়া হয়। কামারপুকুর নামক এলাকায় প্রায় অর্ধশত হিন্দু-মুসলিমকে একসঙ্গে গণকবর দেওয়া হয় বলে স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধারা জানান।
মুক্তিযুদ্ধের সময় ঠাকুরগাঁও ছিল ৬ নম্বর সেক্টরের অন্তর্ভুক্ত। কমান্ডার ছিলেন পাকবাহিনীর স্কোয়াড্রেন লিডার খাদেমুল বাশার। এ সেক্টরে প্রায় ১০ হাজার মুক্তিযোদ্ধা ছিল। এর মধ্যে ১ হাজার ইপিআর, ৭ শ’ আনসার, মুজাহিদ ও পুলিশ এবং অবশিষ্টরা এফ এফ। সমগ্র সেক্টরে ১ হাজার ১২০টির মত গেরিলা বেইস গড়ে তোলা হয়। ৮ মের আগ পর্যন্ত সুবেদার কাজিম উদ্দিন এর দায়িত্বে ছিলেন। ৯ মে ক্যাপ্টেন নজরুল, কাজিম উদ্দিনের কাছ থেকে দায়িত্ব বুঝে নেন। জুলাই মাসের ১ম সপ্তাহে স্কোয়াড্রেন সদরু উদ্দিন এবং ১৭ জুলাই ক্যাপ্টেন শাহারিয়া সাব সেক্টরের দায়িত্ব গ্রহণ করেন।
ঠাকুরগাঁওয়ে মুক্তিবাহিনীর সঙ্গে পাকিস্তানিবাহিনীর সম্মুখ যুদ্ধ শুরু হয় জুলাই মাসের প্রথম দিকে। প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত গেরিলারা হানাদার বাহিনীর ঘাটির উপর আক্রমণ চালিয়ে ব্যাপক ক্ষতি করেন। বেশ কিছু ব্রীজ ও কালভার্ট উড়িয়ে দেন তারা। দালাল রাজাকারদের বাড়ি ও ঘাটিতে হামলা চালান। নভেম্বর মাসের ৩য় সপ্তাহ থেকে মুক্তিযোদ্ধারা ব্যাপক অভিযান চালান। ২১ নভেম্বর হতে ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত উল্লেখযোগ্য যুদ্ধ হয় বালিয়াডাঙ্গী, পীরগঞ্জ, রানীশংকৈল ও হরিপুর থানা অঞ্চলে।
এ যুদ্ধে বেশির ভাগ ফলাফল মুক্তিবাহিনীর অনুকুলে আসে। মুক্তিবাহিনীর যৌথ অভিযানে পঞ্চগড় মুক্তিবাহিনীর দখলে আসলে পাকবাহিনীর মনোবল ভেঙ্গে যায়। এরপর ভারতীয় মিত্রবাহিনী ও মুক্তিবাহিনীর যৌথ আক্রমণ শুরু হয় ঠাকুরগাঁও অঞ্চলে। রণাঙ্গণে পাকিস্তানিবাহিনী পর্যুদস্ত হয়ে পড়ে। মিত্রবাহিনী যাতে ঠাকুরগাঁও দখল করতে না পারে সেজন্য পাকসেনারা ৩০ নভেম্বর ভুলী ব্রীজ উড়িয়ে দেয়। তারা সালন্দর এলাকায় সর্বত্র বিশেষ করে ইক্ষু খামারে মাইন পুতে রাখে। মিত্রবাহিনী ভুলী ব্রীজ সংস্কার করে ট্যাংক পারাপারের ব্যবস্থা করেন। ১ ডিসেম্বর ভুলী ব্রীজ পার হলেও মিত্রবাহিনী যত্রতত্র মাইন থাকার কারণে ঠাকুরগাঁও শহরে ঢুকতে পারেনি। ওই সময় শত্রুদের মাইনে ২টি ট্যাংক ধ্বংস হয়ে যায়। এরপর এফ এফ বাহিনীর কমান্ডার মাহাবুব আলমের নেতৃত্বে মাইন অপসারণ করে মিত্রবাহিনী ঠাকুরগাঁওয়ের দিকে অগ্রসর হয়। ২ ডিসেম্বর সারারাত প্রচণ্ড গোলাগুলির পর শত্রুবাহিনী ঠাকুরগাঁও থেকে পিছু হটে। ৩ ডিসেম্বর ভোর রাতে শত্রু মুক্ত হয় ঠাকুরগাঁও। ওই রাতেই মুক্তিবাহিনী ও সর্বস্তরের জনগণ মিছিলসহ ঠাকুরগাঁও শহরে প্রবেশ করে স্বাধীন বাংলাদেশের পতাকা উড়িয়ে দেয়। এ বিজয় ছিনিয়ে আনতে ১০ হাজার নারী-পুরুষকে প্রাণ দিতে হয়। পাশবিক নির্যাতনের শিকার হন ২ হাজার মা-বোন।
অন্যদিকে, ১৯৭১ সালের ৩ ডিসেম্বর সারা বাংলাদেশের মুক্তিসংগ্রামও ভিন্নমাত্রা পায়। পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে শুরু হয় সম্মুখ যুদ্ধ। এতদিন চোরাগোপ্তা আক্রমণ থেকে সরে এসে ভারতীয় মিত্রবাহিনীর সঙ্গে এক সারিতে সম্মুখ যুদ্ধে এগিয়ে যায় বীর বাঙ্গালি। মনোবল বাড়ে বাংলার দামাল ছেলেদের, সময় ঘনিয়ে আসতে শুরু করে এই মাটি আর বাংলার স্বাধীনতার শত্রুদের।
পাকিস্তানি জঙ্গি বিমান একযোগে ভারতের কয়েকটি শহরে হামলা চালায়। বাঙ্গালির মুক্তিযুদ্ধকে আন্তর্জাতিক যুদ্ধে পরিণত করার জন্য শেষ অস্ত্র বেছে নেয় পাকিস্তানিবাহিনী। তারা আকস্মিকভাবে স্থল ও আকাশ-পথে ভারতের পশ্চিমাঞ্চল আক্রমণ করার ফলে সর্বাত্মক যুদ্ধ শুরু হয়। ভারতের অমৃতসর, পাঠানকোট, শ্রীনগর, অবন্তীপুর, যোধপুর, আম্বালা ও আগ্রা বিমান ঘাঁটিতে আক্রমণ চালায় পাকিস্তান। মধ্যরাতে ভারতও সর্বাত্মক যুদ্ধ ঘোষণা করে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে। পাকিস্তানের ভারত আক্রমণের জের ধরে এ দিনে গঠন হয় বাংলাদেশ-ভারত যৌথ কমান্ড। ভারত ও বাংলাদেশ বাহিনী সম্মিলিতভাবে পূর্ব সীমান্তে অভিযান শুরু করে। ভারতীয় বাহিনী বাংলাদেশের পাক অবস্থানকে ঘিরে ফেলার প্রচেষ্টায় সীমান্তের ৭টি এলাকা দিয়ে প্রচণ্ড আক্রমণ চালায়। পূর্বাঞ্চলে পাকিস্তানের চার ডিভিশন সৈন্য ভারতের সাত ডিভিশন সৈন্য ও মুক্তিযোদ্ধাদের মুখোমুখি হয়।
একাত্তরের এ দিনেই বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর সার্থক হামলায় নারায়ণগঞ্জের গোদনাইল ও চট্টগ্রামের ফুয়েল পাম্প মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হয়। বীর মুক্তিযোদ্ধারা এ সময় একের পর এক যোগাযোগ ব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন ও ক্ষতিগ্রস্ত করে পাকিস্তানি সেনাদের ফাঁদে পড়া ইঁদুরের মতো কোণঠাঁসা করে ফেলতে থাকে। পাশাপাশি যথাযথ সমর পরিকল্পনা নিয়ে ভারতীয় সেনা সাহায্য, বিশেষ করে ছত্রীসেনাদের অবতরণের উপযুক্ত পরিবেশ তৈরি করে। পরে স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে ভারতীয় সেনাবাহিনীর অনেক কর্মকর্তা মুক্তিযোদ্ধাদের অসীম সাহস ও সুচতুর পরিকল্পনার প্রশংসা করেছেন।
এদিন কুমিল্লায় মেজর আইনউদ্দিনের নেতৃত্বে মুক্তিবাহিনী মিয়াবাজারে পাকসেনাদের ওপর হামলা চালায়। ভারতীয় আর্টিলারি বাহিনীর সহযোগিতায় মুক্তিযোদ্ধারা মিয়াবাজার দখল করে নেন। আখাউড়ার আজমপুর স্টেশনে দুইপক্ষই নিজ নিজ অবস্থানে থেকে দিনভর যুদ্ধ চালিয়ে যায়। সিলেটের ভানুগাছায় পাকিস্তানিবাহিনীর সঙ্গে যুদ্ধে ১৭ জন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন। নোয়াখালীতে সুবেদার মেজর লুত্ফর রহমানের নেতৃত্বে মুক্তিযোদ্ধাদের একটি দল সোনাইমুড়ি মুক্ত করেন। এরপর তারা চৌমুহনীতে নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠার চেষ্টায় পাকিস্তান সেনাবাহিনীর ওপর আক্রমণ চালান।
মেজর জাফর ইমামের নেতৃত্বে মুক্তিবাহিনী মাইজদীতে পাকবাহিনীর উপর আক্রমণ চালায়। রংপুরের পলাশবাড়ীতে ১২ জন পাকসেনা আত্মসমর্পণ করে। সাতক্ষীরা থেকে পিছু হটে দৌলতপুরের দিকে যায় পাকিস্তানিবাহিনী। সব সেতু ভেঙে দেওয়ায় মুক্তিযোদ্ধারা তাদের পিছু নিলেও বাধাগ্রস্ত হন।
এদিকে, জামায়াতে ইসলামীর আমীর গোলাম আজম পূর্ব পাকিস্তান থেকে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী নিয়োগ করা উচিত বলে লাহোরে মত প্রকাশ করেন। পাকিস্তান বিমানবাহিনী ভোর রাতে আগরতলা শহরের উপর আক্রমণ পরিচালনা করে। মুক্তিযোদ্ধারা বিজয়ের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে গেলেও হাল ছাড়েনি শত্রুরা। ১১নং সেক্টরের মুক্তিবাহিনী কামালপুর বিওপি আক্রমণের প্রস্তুতি গ্রহণ করে। পাকিস্তান এয়ারলাইন্স পূর্ব ও পশ্চিম অংশের মধ্যে সব ফ্লাইট বাতিল করে। সামরিক কর্তৃপক্ষ সন্ধ্যা থেকে ভোর পর্যন্ত ঢাকায় সান্ধ্যআইন জারি ও নিষপ্রদীপ ব্যবস্থা পালনের নির্দেশ দেয়।
(দ্য রিপোর্ট/এসবি/ডিসেম্বর ০৩, ২০১৩)