দ্বিতীয় দিনে অবরুদ্ধ জাবি উপাচার্য
জাবি প্রতিনিধি : টানা দ্বিতীয় দিনের মতো অবরুদ্ধ হয়ে আছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) উপাচার্য অধ্যাপক আনোয়ার হোসেন। আচার্যের আদেশ বাস্তবায়নে উপাচার্যের পদত্যাগ ও উপাচার্য প্যানেল নির্বাচনের তারিখ ঘোষণার দাবিতে উপাচার্যকে অবরুদ্ধ করে ‘শিক্ষক-শিক্ষার্থী-কর্মকর্তা-কর্মচারী ঐক্য ফোরাম’ ব্যানারে আন্দোলনরত শিক্ষকেরা।
গত সোমবার রাত পৌনে ১০টার দিকে উপাচার্যের বাসভবনের সামনে এ অবস্থান নেন তারা।
এদিকে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই উপ-উপাচার্য অধ্যাপক এম এ মতিন (শিক্ষা) ও অধ্যাপক আফসার আহমদ (প্রশাসন) টানা ১৩ দিন অবরুদ্ধ থাকার পর গত সোমবার বন্দিদশা থেকে মুক্ত হয়েছেন।
সোমবার বিকেল ৫টা ৩০ মিনিটে উপাচার্য অধ্যাপক আনোয়ার হোসেন ছুটি শেষে ক্যাম্পাসে ফিরে আসায় দুই উপ-উপাচার্যকে মুক্ত করে দেয় আন্দোলনকারী শিক্ষকরা।
জানা যায়, একই দাবিতে টানা ১৩ দিন অবরুদ্ধ থাকার পর সোমবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে অবরোধ তুলে নিয়ে দুই উপ-উপাচার্যকে মুক্ত করে দেন আন্দোলনকারী শিক্ষক-শিক্ষার্থী-কর্মকর্তা-কর্মচারী ঐক্য ফোরাম।
রাত পৌনে ১০টার দিকে আন্দোলনকারী শিক্ষকরা উপাচার্যের সঙ্গে দেখা করতে তার বাসভবনে যান। কিন্তু উপাচার্য শারীরিকভাবে অসুস্থ থাকায় আন্দোলনকারী শিক্ষকদের সঙ্গে দেখা করতে অপারগতা প্রকাশ করেন। এরপর রাত ১০টার দিকে আন্দোলনকারী শিক্ষকরা উপাচার্যের বাসভবনের সামনে অবস্থান নেন। এতে উপাচার্য তার নিজ বাসভবনে অবরুদ্ধ হয়ে পড়েন।
অবরোধের বিষয়ে আন্দোলনকারী শিক্ষক-শিক্ষার্থী-কর্মকর্তা-কর্মচারী ঐক্য ফোরামের সদস্য সচিব কামরুল আহছান বলেন, সোমবার রাতে আমরা উপাচার্যের সঙ্গে দেখা করতে যাই। কিন্তু তিনি অসুস্থতার কথা বলে আমাদের বাসায় ঢুকতে দেননি। তাই আচার্যের আদেশ বাস্তবায়নে উপাচার্য প্যানেল নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা এবং শিক্ষকদের বিরুদ্ধে করা রিট প্রত্যাহারের দাবিতে আমরা উপাচার্যের বাসভবনের সামনে অবস্থান নিয়েছি।
এসময় উপাচার্য ‘দুর্বৃত্ত ও কর্মচারী সমিতির বিতর্কিত’ নেতাদের সঙ্গে সভা করলেও আন্দোলনকারীদের বাসভবনে প্রবেশের অনুমতি দেননি বলেও অভিযোগ করেন তিনি ।
এদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ অফিস থেকে প্রেরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে উপাচার্য জানিয়েছেন, তার বাসার টেলিভিশনের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয়া হয়েছে। আন্দোলনরত শিক্ষকগণ উপাচার্যের বাসায় নিয়োজিত কর্মচারী ও তাঁর অফিসের কর্মকর্তাদের প্রবেশ করতে দিচ্ছেন না।
এ বিষয়ে উপাচার্য বলেন, ‘কিছু সংখ্যক শিক্ষকের নৈতিকতা পরিপন্থী এ ধরনের আন্দোলনের মাধ্যমে দীর্ঘ কয়েক মাস ধরে বিশ্ববিদ্যালয় প্রায় অচল হয়ে পড়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের অচলাবস্থা নিরসনে মহামান্য রাষ্ট্রপতি ও আচার্যের নির্দেশনা মোতাবেক পর্যায়ক্রমে সব ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে। কিন্তু আন্দোলনকারী শিক্ষকগণের বাধা ও বিরোধীতার মুখে কোনো পদক্ষেপই বাস্তবায়ন করা যাচ্ছে না।’
উপাচার্য আন্দোলনরত শিক্ষকদের তার বাসবভনের সামনে থেকে অবস্থান প্রত্যাহারের আহবান জানিয়েছেন।
অন্যদিকে শিক্ষক-শিক্ষার্থী-কর্মকর্তা-কর্মচারী ঐক্য ফোরামের সর্বাত্মক ধর্মঘটের কারণে ১৪ দিন ধরে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। তবে ক্লাস পরীক্ষা ধর্মঘটের আওতায় না থাকায় শিক্ষা কার্যক্রম নিয়মিতভাবে চলছে।
(দ্য রিপোর্ট/এএস/এআইএম/এমডি/ডিসেম্বর ০৩, ২০১৩)