জাতীয় পার্টি নির্বাচনে অংশ নেবে না : এরশাদ
দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক : জাতীয় পার্টি আসন্ন নির্বাচনে অংশ নেবে না বলে জানিয়েছেন দলটির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ। বনানীতে তার রাজনৈতিক কার্যালয়ে মঙ্গলবার দুপুর ১২টায় এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ ঘোষণা দেন।
তিনি বলেন, ‘আমি প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলাম সব দল অংশগ্রহণ করলে আমি নির্বাচনে যাবো। যেহেতু সব দল নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেনি তাই জাতীয় পার্টিও এই নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে না। আমি আমার প্রতিশ্রুতি রক্ষা করেছি।’
আবেগতাড়িত কণ্ঠে তিনি আরো বলেন, ‘জাতির কাছে আমি তিনটি প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলাম। এককভাবে নির্বাচন করবো, কারো ক্ষমতায় যাওয়ার সিঁড়ি হবো না এবং সব দল অংশ না নিলে নির্বাচনে যাবো না। এককভাব নির্বাচনের জন্য আমি ২৯৯ আসনে প্রার্থী দিয়েছিলাম। সারাদেশে আগুন জ্বলছে, অর্থনীতি ধ্বংসের পথে, গার্মেন্টস জ্বলছে, মানুষের জীবনের কোনো মূল্য নেই। সারা পৃথিবীর কাছে আমরা হেয় প্রতিপন্ন হচ্ছি। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে মুখ দেখাবার অবস্থা নেই। তাই এই পরিবেশে জাতীয় পার্টি নির্বাচনে অংশ নেবে না। যেহেতু সব দল আসেনি তাই আমি নির্বাচনে যাচ্ছি না। আমি আমার প্রতিশ্রুতি রক্ষা করেছি।’
এরশাদ বলেন, ‘তোমরা আমার সম্পর্কে অনেক কথা বলো, আমি নাকী সকালে এক কথা, বিকেলে অন্য কথা বলি। এর কিছুটা সত্য। কিন্তু তোমরা এর কারণ উপলব্ধি করো না। ১৯৯০ সালের ৬ ডিসেম্বর ক্ষমতা ছাড়ার পরপরই আমাকে জেলে নেওয়া হয়েছিলো। ছয় বছর দুই মাস জেলে ছিলাম। ইফতারে একটা মিষ্টি চেয়েছিলাম। আমাকে মিষ্টি দেওয়া হয়নি। অসুস্থ ছিলাম, আমার তৈরি করা হাসপাতালে আমাকে চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়নি। আমি আট বছর সেনাপ্রধান ছিলাম। আমার সেনানিবাসের হাসপাতালে চিকিৎসা নেওয়ার অধিকার আছে। আমি সেনাকুঞ্জ, অডিটোরিয়াম, আর্মি স্টাফ কলেজ তৈরি করেছি। আমাকে ২০ বছর সেনানিবাসে যেতে দেওয়া হয়নি। আমার নামে ৭৪টি মিথ্যা মামলা দেওয়া হয়েছিলো।’
আবেগতাড়িত কণ্ঠে তিনি আরো বলেন, ‘আমার ক্ষমতা ছাড়ার পাঁচ বছর পর মঞ্জু হত্যার মামলা হয়েছে। অথচ মামলার রায় এখনো হয়নি। আশা করেছিলাম, গত মাসে মামলার রায় হবে। কিন্তু রায় দুই মাস পিছিয়ে ২১ জানুয়ারি পর্যন্ত ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছে। ঘটনার ১৪ বছর পর যখন কোনো মামলায় আমাকে আটকানো যাচ্ছিল না তখন মঞ্জু হত্যা মামলা দায়ের করা হয়। সেই মামলা ১৮ বছর ধরে চলছে। ১৩ জন জাজ বদলি হয়েছে। কিন্তু মামলার গতি বদলায়নি। অর্থাৎ আমাকে ঝুলিয়ে রাখতেই হবে। কোনো সাক্ষী আমার বিরুদ্ধে একটি কথাও বলেনি। এবার চুপ থাকবো না।’
এরশাদ বলেন, ‘আমি শৃঙ্খলিত রাজনীতিবিদ। আমি কোনো সুবিচার পাইনি। ১৯৯০ সালের ৬ ডিসেম্বর আমাকে বন্দি করা হয়েছিলো। আমি এখন সরে এসেছি। আমি অনেক সহ্য করেছি। আমার অসহায়ত্বের কথা তোমাদের বুঝতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘আমি স্বাধীনভাবে রাজনীতি করতে চাই। আমি মৃত্যু ও জেলের ভয় করি না। কারো কাছে হাত পাতি না। আমি আমার প্রতিশ্রুতি রক্ষা করেছি।’
এরশাদ উপস্থিত সাংবাদিকদের বলেন, ‘অনেকে বলে আমি এক হাজার কোটি টাকা নিয়েছি। যদি টাকাই নিয়ে থাকি তাহলে নির্বাচন বর্জন করলাম কেনো। তোমরা আমাকে নিয়ে বিদ্রূপ করে লিখো না।’
মস্ত্রিপরিষদে জাপা নেতাদের অংশগ্রহণের প্রশ্নে এরশাদ বলেন, ‘সর্বদলীয় সরকারের প্রস্তাব আমি দিয়েছিলাম। আমি কেবল শুরু করলাম, এ বিষয়ে এখনো সিদ্ধান্ত নেইনি। আমি নির্বাচন করবো না। নির্বাচন করার জন্য তারা মন্ত্রিপরিষদে যোগ দিয়েছিলেন। যদি নির্বাচন না হয় তাহলে তারা থাকবে কেনো?’
জাপা থেকে চলে যাওয়া নেতাদের সম্পর্কে এরশাদ বলেন, ‘অনেকে চলে গিয়েছিলেন। আবার ফিরে এসেছেন। আশা করি যারা চলে গেছেন, তারাও আবার ফিরে আসবেন।’
জাপা নেতাদের মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার বিষয়ে এরশাদ বলেন, ‘আমি নির্দেশ দিয়েছি। আমার দলের নেতারা মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করে নেবে।’
সংবাদ সম্মেলনে এরশাদের পাশে জাতীয় পার্টির আর কোন নেতাকে দেখা যায়নি। এছাড়া অন্য সংবাদ সম্মেলনে এরশাদের প্রেসসচিব স্বাক্ষরিত প্রেস রিলিজ দেওয়া হলেও এবার তা দেওয়া হয়নি। এবার এরশাদের নিজের হাতে লেখা প্রেস রিলিজ সাংবাদিকদের দেওয়া হয়।
(দ্য রিপোর্ট/ সাআ/এমএআর/ডিসেম্বর ০৩, ২০১৩)
রতিবেদক : জরুরি সংবাদ সম্মেলন ডেকেছেন হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ। বনানীতে তার রাজনৈতিক কার্যালয়ে মঙ্গলবার দুপুর ১২টায় এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। এরশাদের প্রেস অ্যান্ড পলিটিক্যাল সেক্রেটারি সুনীল শুভ রায় এ তথ্য জানিয়েছেন।
তিনি জানান, দেশের বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি, জাতীয় পার্টির নেতাকর্মীদের মনোনয়নপত্র জমা দিতে না পারা ও সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে এ সং
- See more at: http://thereport24.com/?page=details&article=21.4845#sthash.AIXEVO6q.dpuf