বাংলাদেশে বিনিয়োগকারীদের আস্থা কমছে : বিশ্বব্যাংক
প্রকাশিতব্য প্রতিবেদনে বিশ্বব্যাংক বলেছে, বিশ্বব্যাংকের পাশাপাশি আর্থিক খাতের কেলেঙ্কারি রাষ্ট্রায়ত্ব ব্যাংকগুলোকে দেউলিয়াত্বের ঝুঁকিতে ফেলেছে। তবে বিশ্বমন্দা ও দেশের অভ্যন্তরীণ পরিস্থিতি অনূকূল না থাকলেও বাংলাদেশের অর্থনীতি প্রাণবন্ত রয়েছে।
বিশ্বব্যাংকের ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০১২-১৩ অর্থবছরে মোট দেশজ উৎপাদন (জিডিপি) প্রবৃদ্ধি হবে ৬ শতাংশ। যদিও ২০১১-১২ অর্থবছরে তা ছিল ৬.২ শতাংশ। আর ২০১১-১২ অর্থবছরে তা ছিল ৬.৭ শতাংশ। রাজনৈতিক অস্থিরতার পাশাপাশি বিদ্যুৎ, জ্বালানি, গ্যাস ও অবকাঠামো উন্নয়নের দুবর্লতায় অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে ধীর গতি প্রতিফলিত হয়েছে। ফলে দেশের বেসরকারি বিনিয়োগ ২০১১-১২ অর্থবছরের চেয়ে ২০১২-১৩ অর্থবছরে ১.২ শতাংশ কমেছে।
রাজনৈতিক অস্থিরতা ছাড়াও রাষ্ট্রায়ত্ব প্রতিষ্ঠানের ঋণ কেলেঙ্কারির বিষয়টি উল্লেখ করে বিশ্বব্যাংক ওই প্রতিবেদনে বলেছে, চাপের মুখে রয়েছে ব্যাংকি খাত। আর ঋণখেলাপির ঘটনা ব্যাংকগুলোকে দেউলিয়াত্বের মধ্যে ঠেলে দিয়েছে বলে মনে করে সংস্থাটি। আর তাই এ বিষয়ে দ্রুততার সঙ্গে গুরুত্ব আরোপের কথা জানিয়েছে বিশ্বব্যাংক। এছাড়া গত অর্থবছর জুড়ে শেয়ারবাজারের অবস্থাকে ‘দুর্বল কার্যক্রম’ বলে উল্লেখ করা হয়।
ওই প্রতিবেদনে গত অর্থবছরের মূল্যস্ফীতি এবার অনেকটা কমে এলেও এর হার উচ্চ পর্যায়ে রয়েছে বলে মন্তব্য করেছে বিশ্বব্যাংক। সংস্থাটি বলেছে, গত অর্থবছরে বার্ষিক গড় মূল্যস্ফীতি ৮.৭ শতাংশ থেকে ৬.৮ শতাংশে নেমে আসে। মূলত উৎপাদন বৃদ্ধি, বড় আমদানিকারক দেশের চাহিদা হ্রাস ও বিভিন্ন দেশের খাদ্য মজুদ হ্রাস পাওয়ায় আন্তর্জাতিক বাজারে পণ্যের দাম কমেছে। এদিকে চলতি অর্থবছরে আগস্ট মাসে মূল্যস্ফীতির হার দাঁড়িয়েছে ৭.৪ শতাংশ। আসন্ন জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে বাংলাদেশ ব্যাংকও তাদের সংকোচনমূলক মুদ্রানীতি অব্যাহত রেখেছে।
প্রকাশিতব্য প্রতিবেদনে বিশ্বব্যাংক বলেছে, সার্বিকভাবে দেশের আমদানি কমে আসা ও রফতানি বাড়ায় বাণিজ্য ঘাটতি কমেছে।২০১২-১৩ অর্থবছরে বাণিজ্য ঘাটতির পরিমাণ ছিল ৭০০ কোটি ডলার।যা আগের অর্থবছরে ছিল ৯৩০ কোটি ডলার।
বিশ্বব্যাংক মনে করছে, গত অর্থবছরের রাজস্ব নীতি ছিল বাজেট অনুযায়ী সামঞ্জস্যপূর্ণ। অনুদান বাদে বাজেটে ঘাটতি লক্ষ্যমাত্রা ছিল জিডিপির ৫ শতাংশ। তবে অর্থবছর শেষে তা হয় ৪.৩ শতাংশ। চলতি অর্থবছরের বাজেট ঘাটতির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৪.৬ শতাংশ।
বিশ্বব্যাংকের প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, সামষ্টিক অর্থনীতির অবস্থার উন্নতি হওয়ায় আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) বর্ধিত ঋণ সুবিধা সঠিক পথে রয়েছে। নতুন মূল্যসংযোজন কর আইন প্রায়োগিক অবস্থায় রয়েছে। জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) ইতোমধ্যে অনলাইনে আয়কর রেজিস্ট্রেশন ও ব্যাংক কোম্পানি আইন সংশোধন করা হয়েছে। এগুলো সার্বিক র্অথনীতিকে ইতিবাচক ধারায় পরিচালিত করবে বলে মনে করে বিশ্বব্যাংক।
(দিরিপোর্ট২৪/জ্যোৎস্না জামান/এইচএস/এইচএসএম/অক্টোবর ২২, ২০১৩)