জোসনা জামান, দ্য রিপোর্ট : দাতাদের টাকা রক্ষায় দৌঁড়ঝাপ শুরু করেছে পরিকল্পনা কমিশন। বর্তমান পরিস্থিতিতে সময়মতো জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) বৈঠকে অনুমোদন না হওয়ায় বিশ্বব্যাংক, এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক ও চীনসহ বিভিন্ন দাতা সংস্থার প্রতিশ্রুত অর্থ অন্যদেশে চলে যাওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।

এ পরিপ্রেক্ষিতে যেসব প্রকল্প জাতীয় নির্বাচনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট নয়, কিন্তু জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ সেসব প্রকল্পের বিষয়ে সিদ্ধান্ত জানাতে নির্বাচন কমিশনকে চিঠি দিয়েছে পরিকল্পনা কমিশন।

এ বিষয়ে পরিকল্পনা সচিব ভূঁইয়া সফিকুল ইসলাম দ্য রিপোর্টকে বলেন, হঠাৎ করেই একনেক বন্ধ হয়ে যাওয়ার কারণে অনেক সমস্যার সৃষ্টি হচ্ছে। বিশেষ করে বৈদেশিক সহায়তাপুষ্ট প্রকল্পগুলো শেষ পর্যন্ত কি হবে বলা যাচ্ছে না। কেননা এগুলো সময়মতো অনুমোদন না দিলে ঋণ চুক্তি স্বাক্ষর করা যাবে না। ফলে দাতারাতো আমাদের জন্য টাকা নিয়ে বসে থাকবে না। কোন কোন প্রকল্প নির্ধারিত সময়ে দাতাদের বোর্ডে অনুমোদন করা না গেলে পরবর্তীতে আবার নতুন করে প্রক্রিয়াকরণ করতে বছর খানেক সময় লেগে যেতে পারে। ফলে রাজনৈতিক পরিস্থিতির কারণে দাতারা প্রতিশ্রুত টাকা অন্য দেশে বিনিয়োগ করতে বাধ্য হবে। তাই দ্রুত এ বিষয়ে পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন।

তিনি জানান, দাতা সংস্থাগুলোর প্রতিনিধিরা প্রায়ই আসছেন এবং প্রকল্প অনুমোদনের জন্য তাগাদা দিচ্ছেন।

সূত্র জানায়, ২৭ নভেম্বর নির্বাচন কমিশনে পাঠানো চিঠিতে পরিকল্পনা কমিশনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ১৯৭২ সালের রিপ্রেজেনটেশন অব পিপল অর্ডার (আরপিও) এর ৩-ক ধারায় বর্ণিত নির্বাচন পূর্ব সময়ে কোন সরকারি, আধা সরকারি ও স্বায়ত্বশাসিত প্রতিষ্ঠানে রাজস্ব বা উন্নয়ন তহবিলভূক্ত কোন প্রকল্পের অনুমোদন, ঘোষণা, ভিত্তিপ্রস্থর বা ফলক উম্মোচন করা যাইবে না। বিধি অনুযায়ী ২৫ নভেম্বর জাতীয় নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর একনেক বৈঠক বাতিল করা হয়। কিন্তু বৈদেশিক সহায়তাপ্রাপ্ত কারিগরি সহায়তা প্রকল্প, যা সরাসরি নির্বাচনে প্রভাব পড়ে এমন কার্যক্রমের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট নয় সেসব বৈদেশিক চুক্তি সংশ্লিষ্ট প্রকল্প অনুমোদন হওয়া প্রয়োজন। বলা হয়েছে, সকল কারিগরি সহায়তা প্রকল্প পরিকল্পনা মন্ত্রী অনুমোদন করে থাকে, এর জন্য একনেক বৈঠকের প্রয়োজন হবে না। এ ছাড়া চলমান প্রকল্পের সংশোধনীর ক্ষেত্রে (যা প্রকল্প বাস্তবায়নের স্বার্থে সংশোধন জরুরি)যেমন যেসব প্রকল্প সমাপ্তির পথে সেসব প্রকল্পের সুষ্ঠু সমাপ্তির জন্য অনুমোদন দরকার। এক্ষেত্রেও যেসব প্রকল্পের ব্যয় বৃদ্ধি অনাধিক ২০ শতাংশ অথবা মোট সংশোধিত প্রাক্কলিত ব্যয় ২৫ শতাংশের নিচে সেসব প্রকল্প জনস্বার্থে অনুমোদন হওয়া প্রয়োজন।

এ অবস্থায় নির্বাচন কমিশনের কাছে বৈদেশিক সহায়তাপুষ্ট কারিগরি সহায়তা প্রকল্প এবং পরিকল্পনা মন্ত্রীর এখতিয়ারভূক্ত সংশোধিত প্রকল্পের অনুমোদন করা যাবে কি না সে বিষয়ে নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের মতামত বা ব্যাখ্যা চাওয়া হয়েছে।

এদিকে নির্বাচন কমিশন সূত্রে জানা গেছে, শিগগিরই পরিকল্পনা কমিশনকে এই বিষয়ে মতামত জানানো হবে।

(দ্য রিপোর্ট/জেজি/এসবি/এমডি/ডিসেম্বর ০৪, ২০১৩)