বিজয় দিবসে মুক্তি পাচ্ছে ১৭ বন্দি
কাজী জামশেদ নাজিম, দ্য রিপোর্ট : মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে ১৭ জন কারাবন্দিকে মুক্তি দিচ্ছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। বিশেষ দিনে কারাবন্দিদের মুক্তিদান কার্যক্রমের আওতায় এ ১৭ জনকে মুক্তি দেওয়া হচ্ছে।
এর আগে চলতি বছরের বিজয় দিবসকে সামনে রেখে মুক্তিদানের জন্য দেশের বিভিন্ন কারাগার থেকে ৬৪ জন কারাবন্দির নামের একটি তালিকা করা হয়। ওই তালিকা যাচাই-বাছাই শেষে ১৭ জন কারাবন্দিকে মুক্তি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রনালয়।
জানা যায়, মুক্তিযোগ্য তালিকার ১৭ জনের মধ্যে দুই জন মহিলাও রয়েছে। বাকি ১৫ জনের মধ্যে বেশিরভাগের বয়সই ৫০ এর বেশি। তারা কারাগারে অনেকটাই অচল ও অক্ষম অবস্থায় আছে। তাদের সাজার মেয়াদ শেষ হতে আর মাত্র কয়েকমাস বাকি।
সূত্র জানায়, ইতিমধ্যেই তালিকার ১৭ বন্দি মুক্তির সুপারিশ সংক্রান্ত একটি প্রতিবেদন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে পাঠানো হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর সম্মতি পেলেই তারা সবাই মুক্তি পাবেন।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কতৃপক্ষ জানিয়েছে, আগামী ১৬ ডিসেম্বর মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে গত ৯ অক্টোবর সকাল ১১টায় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (কারা) মাইন উদ্দিন খন্দকারের সভাপতিত্বে এক সভা অনুষ্ঠিত হয়। ওই সভায় কমিটির সিদ্ধান্তে মুক্তিযোগ্য কারাবন্দিদের তালিকা যাচাই-বাছাই করে ১৭ জনের মুক্তির সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করা হয়। পরে মুক্তিযোগ্যদের তালিকা সংক্রান্ত একটি প্রতিবেদন (পত্রসংখ্যা- ২২.২২.১.০.২০.২০০৮-৬৬৭) প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে পাঠানো হয়।
এর আগে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে মুক্তিযোগ্য বন্দিদের তালিকাসহ প্রস্তাব প্রেরণের জন্য সকল জেলা ম্যাজিস্ট্রেটকে অনুরোধ জানানো হয়েছিল।
এই অনুরোধের পরিপ্রেক্ষিতে দেশের ৬৪টি জেলার মধ্যে ৩৯টি জেলায় মুক্তিযোগ্য কয়েদি না থাকায় শূন্য প্রতিবেদন পাঠানো হয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রাণালয়ে। বাকি ২৫ টি জেলা থেকে ৬৪ জন মুক্তিযোগ্য কয়েদি নির্বাচন করা হয়।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট কমিটি সব বন্দির বয়স, শাস্তির ধারা, সাজার মেয়াদ, ভোগকৃত দণ্ডের সময়কাল ও কারা অপরাধ পর্যালোচনা করে। যাচাই-বাছাই শেষে ৬৪ বন্দির মধ্যে ১৭ জন কয়েদির বিষয়ে সর্বসম্মতিক্রমে সুপারিশ করে ওই কমিটি।
মুক্তিযোগ্য কয়েদির তালিকায় রয়েছেন, পিরোজপুর কারাগারে কয়েদি মনি শংকর ভক্ত (কনং-২৫৫৪/এ), দিনাজপুর কারাগারের মো: রাসেল (৪২৭০/এ), আলী হোসেন (৮৪০০/এ) ও মো মোস্তাফিজুর রহমান (৪২৭০/এ), কিশোরগঞ্জ কারাগারের বাবর আলী (৯৮৩৮/এ), সুনামগঞ্জ কারাগারের নুরুল (৫২৮৯/এ), কুমিল্লা কেন্দ্রীয় কারাগারের বাবুল (৩৩৪৫/এ), গাইবান্ধা কারাগারের আবদুল জলিল (৩৪২৮/এ), চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারের মো: লিটন (২৫০৮/এ), কাশিমপুর হাইসিকিউরিটি কেন্দ্রীয় কারাগারের ইয়াছিন রবি মিয়া (১০৭৯/এ), যশোর কেন্দ্রীয় কারাগারের রিয়াজ উদ্দিন দপ্তরি (৮৪৩৭/এ), সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগারের মানিক মিয়া (৫৮৩৪/এ), জামালপুর কারাগারের মোছা. জান্নাত আরা (৯৯৯১/এ), ময়না (৯৮৯৬/এ) ও ভগল সেক (৯৮২৪/এ)।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (কারা) মাইন উদ্দিন খন্দকার জানান, প্রতিবছর দুই ঈদ ও মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে কারাবন্দিদের মুক্তি দেয়া হয়। এটি একটি নিয়মিত প্রক্রিয়া।
তিনি জানান, কারাবন্দিদের মুক্তিদানের বিষয়ে কয়েকটি নিয়ম নির্ধারণ করা হয়। যারা ওই নির্ধারিত নিয়মে পড়েন, কেবল তাদেরই মুক্তি দেয়া হয়।
(দ্য রিপোর্ট/কেজেএন/এআইএম/এমডি/ডিসেম্বর ০৪, ২০১৩)