কাজী জামশেদ নাজিম, দ্য রিপোর্ট : বুধবার রাত সোয়া ১টা। আমেরিকান অ্যাম্বেসির সামনে দিয়ে হাঁটতে গা শিউরে ওঠে। রাস্তার ল্যাম্পপোস্ট ছাড়া কোনো ফ্ল্যাটেই আলোর চিহ্ন নেই। ভূতুড়ে এক পরিবেশ পার করেই দূতাবাস গলি। প্রবেশেই র‌্যাবের বাধা। কালো গাড়ি আর কালো পোশাকে র‌্যাবের সামনে পড়লেই পরিচয় পর্ব। গণমাধ্যমকর্মী পরিচয় দেওয়ার পর ভেতরে যাওয়ার অনুমতি। ১০ গজ সামনে গিয়েই দৃষ্টিগোচর হয় প্রেসিডেন্ট পার্কের আলোকসজ্জিত নেমপ্লেট। শত শত লোকের আনাগোনা। কেউ হাঁটছে, কেউবা বসে বসে গল্প করছে। কেউ কেউ প্রতীক্ষা করছে কখন আসবে র‌্যাব বা ডিবির গাড়ি। এই বুঝি জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ গ্রেফতার হলেন।

প্রেসিডেন্ট পার্কের ভেতরে পৌঁছেই চোখে পড়ে ভিন্নচিত্র। গাড়ির গ্যারেজের চারপাশে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে অনেক নেতাকর্মী। তাদের মধ্যে দেখা হয় জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য মীর আবদুস সবুর আসাদের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘দলের সিদ্ধান্তে এখনো অটল রয়েছেন পল্লীবন্ধু হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ। সর্বশেষ রাত ১২টার দিকে মহাসচিব রুহুল আমিন হাওলাদার দলের চেয়ারম্যানের সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে চলে যান। বর্তমানে যেসব নেতাকর্মী রয়েছেন তারা নিজের থেকেই এখানে অবস্থান করছেন। অদৃশ্য এক গুঞ্জনের বশে সবাই দলের চেয়ারম্যানের কখন কি হয়, তা দেখতেই যেন অবস্থান করছেন।

জাতীয় পার্টির একাধিক নেতার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সাম্প্রতিক সময়ে প্রেসিডেন্ট পার্কে এতো রাতে এতো লোকের আনাগোনা হয়নি। দলীয় কর্মীরা কখনো দলের চেযারম্যানের সঙ্গে দেখা করতে এলে সন্ধ্যার আগেই ফিরে গেছেন। নির্বাচনকালীন সরকারের জাতীয় পার্টির মন্ত্রীদের পদত্যাগের নির্দেশ দেওয়ার পরই গুঞ্জন রটেছে, এরশাদ যেকোনো সময় গ্রেফতার হতে পারেন। র‌্যাব ও পুলিশ প্রেসিডেন্ট পার্ক ঘিরে রাখায় এ গুঞ্জন অনেকটা সত্যি বলে তাদের কাছে প্রতীয়মান হচ্ছে। তাই নেতাকর্মীরা সারারাত এখানে অবস্থান করবেন বলে জানিয়েছে। প্রেসিডেন্ট পার্কের ছয়তলায় অবস্থান করছেন হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ। আর বাড়িটির নিচে অবস্থান করছেন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বিপুলসংখ্যক সদস্য, দলের নেতাকর্মী ও গণমাধ্যমকর্মী।

(দ্য রিপোর্ট/এএস/এস/এইচএসএম/ডিসেম্বর ০৫, ২০১৩)