মেহেরপুর মুক্ত দিবস ৬ ডিসেম্বর
মেহেরপুর সংবাদদাতা : ৬ ডিসেম্বর ৪৩তম মেহেরপুর মুক্ত দিবস। ১৯৭১ সালের আজকের দিনে পাক হানাদার বাহিনীর কবল থেকে মেহেরপুর জেলাকে মুক্ত করা হয়।
দীর্ঘ ৯ মাস মুক্তিযুদ্ধ চলার পর ৫ ডিসেম্বর রাত থেকে পাক বাহিনীর প্রায় দেড় হাজার সদস্য ঢাকার দিকে রওনা দেয়।
পাক হানাদার বাহিনী মেহেরপুর ত্যাগ করার আগে ৬ ডিসেম্বর মধ্যরাতে মেহেরপুর আমঝুপি ও রাজনগরের দিনদত্ত সেতু বোমা মেরে গুঁড়িয়ে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয়। এর পরপরই দিনদত্ত ব্রিজের কাছে মুক্তিযোদ্ধাদের সঙ্গে তুমুল গুলিবিনিময়ের ঘটনায় কোনো হতাহতের ঘটনা না ঘটলেও পাকবাহিনী বিপুল পরিমাণ অস্ত্র-গোলাবারুদ ফেলে রেখে যায়্, তবে ক্যাপ্টেন তালাত আহত হয়। এর আগে আমঝুপিতে এক সড়ক দুর্ঘটনায় এক মেজরের মৃত্যু হয়। ওই সময় পাক বাহিনীর ব্যবহারিক ২টি জিপ অকেজো হয়ে আমঝুপিতে দীর্ঘদিন পড়ে থাকতে দেখা যায়।
নভেম্বরের শেষ সপ্তাহে সারাদেশে পাক বাহিনীর বেগতিক অবস্থা হয়। এ অবস্থা বুঝতে পেরে ৫ ডিসেম্বর সন্ধ্যা থেকে পাকবাহিনী রাতের অন্ধকারে মেহেরপুর ত্যাগ করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। পাকবাহিনী সাফায়েত, আবু সুফিয়ান হাবু, মোহর মোক্তার, সফি, ইমানুর, বজলুর রহমান, রমজানসহ বেশ কয়েক যুবককে তাদের মালামাল বহন করার কাজে ব্যবহার করে। রাতের আঁধারে চুয়াডাঙ্গার পথে মেহেরপুর ত্যাগ করে। পাকবাহিনী প্রথমে আমঝুপি ও পরে রাজনগর দিনদত্ত ব্রিজ গুঁড়িয়ে দেয়। এ সময় সেখানে আগে থেকে আবস্থানরত মুক্তিবাহিনীর বাধার মুখে পড়ে। শুরু হয় প্রচণ্ড গোলাগুলি। এক পর্যায়ে পাকসেনারা চুয়াডাঙ্গার সেনাদের সাহায্য নিয়ে সূর্য ওঠার আগেই মেহেরপুরে সীমানা পেরিয়ে যায়।
পাকবাহিনীর হাতে আটক যুবকরা ভোরের দিকে মেহেরপুর পৌঁছে পাক বাহিনীর কবলমুক্ত মেহেরপুরের কথা প্রচার করে। এ ঘটনার ২ দিন পর ভারতে অবস্থান গ্রহণকারী মুক্তিযোদ্ধারা মেহেরপুর শহরে প্রবেশ করেন। পরে ১৬ ডিসেম্বর মুক্তিযুদ্ধের বিজয় ঘোষণা করা হয়।
৪৩তম মেহেরপুর মুক্ত দিবস উপলক্ষে মেহেরপুর জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডের উদ্যোগে র্যালি ও আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়েছে।
(দ্য রিপোর্ট/এমআর/এএস/ডিসেম্বর ০৬, ২০১৩)