শেরপুর সংবাদদাতা : খাদ্যশস্যে উদ্বৃত্ত জেলা শেরপুরের নকলা উপজেলায় চলতি আমন মৌসুমে সুগন্ধি জাতের চিকন ধানের চাষ নেকব্লাস্ট রোগে আক্রান্ত হয়ে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

উপজেলার বিভিন্ন এলাকার ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকরা জানান, সুগন্ধি জাতের কালিজিরা, চিনিগুঁড়া ও তুলসীমালা ধানের চারা রোপণের সময় ঠিকমতো বৃষ্টি না হওয়ায় সেচ দিতে হয়েছে। ঘন সবুজের আমনের মাঠ দেখে প্রথমে কৃষকের মুখে হাসির ঝিলিক দেখা দিলেও ধানের শীষ বেরুনোর সময় নেকব্লাস্ট রোগে অধিকাংশ ধানগাছের থোড় আক্রান্ত হওয়ায় ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকরা কান্নায় ভেঙে পড়েন। সুগন্ধি জাতের অধিকাংশ ধান খেতের থোড় কয়েকদিনের মধ্যেই শুকিয়ে সাদা হয়ে যায় ও সব ধান চিটায় পরিণত হয়। ফলে প্রতি একরে যেখানে ৪০ মণ ধান উৎপন্ন হওয়ার কথা সেখানে মাত্র ৬ মণ ধান উৎপন্ন হয়েছে। এতে কৃষকরা ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হন।

নকলা পৌরসভার ১নং ওয়ার্ডের কৃষাণী শিউলী বেগম জানান, এবার প্রায় সব জমিতেই আমি তুলসীমালা ধান রোপণ করেছিলাম। কিন্তু ধানের শীষ বের হওয়ার পরপরই সব শীষ শুকিয়ে সাদা হয়ে যায়। ফলন একরে ৬-৭ মণ হলেও এ ধান বাজারে কম দামে বিক্রি করতে হয়।

নকলা পৌরসভার ওয়ার্ড কাউন্সিলর ছায়েদুল ইসলাম জানান, ক্ষেতের ধানগাছের শীষ মরার আগে নকলা উপজেলা কৃষি অফিসের উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা দুয়েকদিন মাঠ পরিদর্শনে এলেও পরবর্তী পর্যায়ে তাদের আর দেখা যায়নি।

গণপদ্দী ইউনিয়নের আদমপুর গ্রামের কৃষক মোবারক আলী ও হানিফা জানান, অজ্ঞাত রোগে আক্রান্ত হওয়ায় আমরা কোনো সন্তোষজনক ফলন পাইনি।

নকলা উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, চলতি আমন মৌসুমে ৩০ হাজার ৬৮৮ একর জমিতে আমন ধানের চাষ হয়েছে। এর মধ্যে ৭ হাজার ১০০ একর জমিতে ব্রি-জাতের ধান রোপণ করা হয়। বাকি ২৩ হাজার ৫৮৮ একর জমিতে দেশি জাতের ধান চাষ করা হয়েছে। ব্রি-জাতের ধানের ফলন আশানুরূপ হলেও তুলসীমালা, চিনিগুঁড়া ও কালিজিরা ধানের শীষ নেকব্লাস্ট রোগে আক্রান্ত হয়ে শুকিয়ে সাদা হয়ে গেছে। এলাকার কৃষকদের কাছ থেকে জানা যায়, এবার সুগন্ধি জাতের চিকন ধানের আবাদ বেশি হয়েছিল কিন্তু নেকব্লাস্ট রোগে আক্রান্ত হওয়ায় ফলন ব্যাহত হয়েছে।

(দ্য রিপোর্ট/এসএম/এএস/ডিসেম্বর ০৬, ২০১৩)