দূরপাল্লার পরিবহন সংকট
শুক্রবারেও ‘অবরুদ্ধ’ নগরবাসী
রানা হানিফ, দ্য রিপোর্ট : গেলো সপ্তাহের ছয়দিন বিরোধী দলের ডাকা অবরোধের পর শুক্রবারও ‘অবরুদ্ধ’ ছিলো রাজধানীবাসী। ঘর থেকে বের হতে পারলেও রাস্তায় চরম যানজটে পড়তে হয়েছে নগরবাসীকে। তাই অনেককেই পায়ে হেটে গন্তব্যে যেতে দেখা যায়।
এদিকে টানা অবরোধের পর বৃহস্পতিবার রাত থেকেই দূরপাল্লার গণপরিবহন ঢাকা থেকে ছাড়তে শুরু করে এবং বিভিন্ন জেলা থেকে ঢাকায় আসতে থাকে। দীর্ঘ অবরোধের কারণে ঢাকা ছেড়ে যাওয়া ও ঢাকায় ফেরা মানুষকে পরিবহন সংকটের কারণে পোহাতে হয়েছে চরম দুর্ভোগ।
শুক্রবার সকালে রাজধানীর অধিকাংশ দূরপাল্লার বাস কাউন্টারে গিয়ে দেখা যায় যাত্রীদের ভিড়। রাজধানীর মধ্যে যানজট ও বিভিন্ন জেলা থেকে বাস ফিরতে দেরি করায় অধিকাংশ কোচের সিডিউল বিলম্ব হচ্ছে বলে জানা যায় কাউন্টারগুলো থেকে। তবে এনিয়ে যাত্রীদের মধ্যে কোনো ক্ষোভ দেখা যায়নি।
রাজধানীর চিত্র : গত সপ্তাহে প্রধান বিরোধী জোটের ঢাকা সপ্তাহব্যাপী অবরোধের পর শুক্রবার রাজধানীতে দেখা দেয় চরম যানজট। এই দিন প্রাথমিক সমাপনী ও বিভিন্ন শ্রেণীর বার্ষিক পরীক্ষা থাকায় সকাল থেকেই রাজধানীতে লেগে থাকে ভয়াবহ যানজট। একই সঙ্গে গণপরিবহন সংকট ভুগিয়েছে নগরবাসীকে। ব্যস্ততার জন্য অনেকেই নিজের গন্তব্যে ছুটেছেন পায়ে হেটে। শুক্রবার অফিস না থাকলেও বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অনুষ্ঠিত বার্ষিক ও সমাপনী পরীক্ষার কারণে এই যানজটের সৃষ্টি হয়েছে বলে মনে করছেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের ট্রাফিক বিভাগ। একই সঙ্গে সপ্তাহব্যাপী টানা অবরোধের পর কেনা-কাটা ও পারিবারিক কর্মকাণ্ড সারতে শুক্রবারকে বেছে নিয়েছে নগরবাসী।
শুক্রবার রাজধানীর রাস্তায় গণপরিবহনের তুলনায় রিকশা ও প্রাইভেট গাড়ির সংখ্যা ছিলো বেশি। এতে গণপরিবহনগুলো তীব্র জটের মুখে পড়েছে।
মোহাম্মদপুর বাস স্ট্যান্ডের এটিসিএল বাস কাউন্টার থেকে জানানো হয়, সকাল ৮টায় ছেড়ে যাওয়া তিনটি বাস আরামবাগে পৌঁছায় বেলা সাড়ে ১১টায়। বাসগুলো আরামবাগ থেকে ১২টার দিকে ছাড়লেও বিকেল ৩টার দিকেও মোহাম্মদপুর পৌঁছায়নি।
এদিকে তীব্র যানজটের শিকার হয়ে অধিকাংশ যাত্রীকে বাস থেকে নেমে পায়ে হেটে গন্তব্যের দিকে যেতে দেখা যায়।
দূরপাল্লার পরিবহন সংকট :
টানা অবরোধের পর বৃহস্পতিবার রাত হতে রাজধানী থেকে দেশের বিভিন্ন জেলায় ছেড়ে গেছে দূরপাল্লার পরিবহন। তবে যাত্রীর তুলনায় বাসের সংখ্যা কম হওয়ায় শুক্রবার সকাল থেকে কাউন্টারগুলোতে দেখায় যায় প্রচন্ড ভিড়। একই সঙ্গে রাজধানীর মধ্যে যানজট ও বিভিন্ন জেলা থেকে বাস ফিরে আসতে দেরি হওয়ায় অধিকাংশ কোচের সিডিউল মিস হয়। শ্যামলীর হানিফ পরিবহনের কাউন্টারে যোগাযোগ করা হলে ম্যানেজার জাকির হোসেন দ্য রিপোর্টকে বলেন, ‘অবরোধ ছাড়ার পর বৃহস্পতিবার রাত ৮টা থেকে আমাদের বাস চলাচল শুরু করে। যা আজ (শুক্রবার) সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত চলবে। ৬টার পর ঢাকা থেকে কোনো কোচ আর ছেড়ে যাবে না। শনিবার থেকে অবরোধ থাকায় সন্ধ্যা ৬টার মধ্যেই আমরা সব কোচ ছেড়ে দিতে চেষ্টা করবো। তবে পাটুরিয়া ফেরিঘাটে দীর্ঘ যানজট থাকায় দক্ষিণাঞ্চলের কোচগুলো আরো আগে বন্ধ করে দেওয়া হতে পারে।’
(দ্য রিপোর্ট/এইচআর/এমএআর/ডিসেম্বর ০৬, ২০১৩)