দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক : দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে যাচাই-বাছাইয়ের পর ৮৪৭ প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বৈধ হয়েছে। এর মধ্যে সাতটি আসনে মাত্র একজন করে প্রার্থী মনোনয়ন দাখিল করেছিল। তাদের নিয়ে বাছাইয়ের পর ৩৩টি আসনে একজন করে বৈধ প্রার্থী রয়েছেন। এরা সবাই বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন।

এদিকে লক্ষীপুর-৩ আসনে দুই জন প্রার্থীর কারোই মনোনয়নপত্র বৈধ হয়নি। তবে নির্বাচন কমিশনে আপিল আবেদনের পর নির্ধারিত হবে কোনো প্রার্থী থাকছেন কিনা ওই আসনে। ২৫ নভেম্বর ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী ৫ জানুয়ারি ভোট হবে। ২ ডিসেম্বরের মধ্যে জমা দেওয়া মনোনয়নপত্র ৫ ও ৬ ডিসেম্বর রিটার্নিং কর্মকর্তা যাচাই-বাছাই করেন।

ইসি কর্মকর্তারা জানান, বাতিল হয়ে যাওয়া মনোনয়নপত্র দাখিলকারীরা রিটার্নিং কর্মকর্তার সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে ৭-৯ ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন কমিশনে আপিল করতে পারবেন। এরপরও প্রার্থীরা সন্তুষ্ট না হলে ইসির সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ আদালতে যাওয়ারও সুযোগ রয়েছে। ১৩ ডিসেম্বর পর্যন্ত বৈধ প্রার্থীরা মনোনয়ন প্রত্যাহারের সময় পাবেন।

নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের ব্যবস্থাপনা ও সমন্বয় শাখা জানায়, স্বতন্ত্র ও ২০টি রাজনৈতিক দল মিলে ৩০০ আসনে এবার ১১০৭টি মনোনয়নপত্র দাখিল করেন প্রার্থীরা। এর মধ্যে ৮৪৭টি মনোনয়নপত্র বৈধ হয়েছে। বাতিল হয়েছে ২৬০ জনের মনোনয়নপত্র।

সাতজন মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের আবেদন করলেও তা নির্ধারিত সময়ের আগে গ্রহণ করেনি রিটার্নিং কর্মকর্তারা। তবে সবকিছু আবারও যাচাই করে চূড়ান্ত সংখ্যা পরে নির্ধারিত করা হবে বলে জানান কর্মকর্তারা।

ঋণখেলাপি, প্রয়োজনীয় তথ্য না দেওয়া, মিথ্যা তথ্য প্রদান, বিলখেলাপি, স্বতন্ত্র প্রার্থীদের ১ শতাংশ ভোটারের সমর্থনের পক্ষে তথ্যাদি দিতে ব্যর্থ হওয়ায় এসব মনোনয়নপত্র বাতিল হয়েছে।

দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনেই দেশের ইতিহাসে সর্বনিম্ম মনোনয়নপত্র দাখিল হয়েছে। এর মধ্যে মাত্র সাড়ে ৮শ’ বৈধ প্রার্থী হলে (আপিলের পর যদি কারো প্রার্থিতা ফিরে পায়) তাও নতুন রেকর্ড হতে যাচ্ছে। ১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি নির্বাচনে বিএনপির সর্বোচ্চ ৪৯ জন বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হওয়ার রেকর্ড রয়েছে।

বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায়নির্বাচিত হতে যাচ্ছেন যারা :

লালমনিরহাট-২ আসনে নুরুজ্জামান আহমেদ, নাটোর-১ মো. আবুল কালাম, নাটোর-২ শফিকুল ইসলাম শিমুল, নাটোর-৩ জোনাইদ আহমেদ পলক, যশোর-১ শেখ আফিল উদ্দিন, বাগেরহাট-১ শেখ হেলাল উদ্দিন, বাগেরহাট-২ মীর শওকত আলী বাদশা, পিরোজপুর-১ একেএমএ আউয়াল (সাইদুর রহমান), টাঙ্গাইল-৩ আমানুর রহমান খান রানা, কিশোরগঞ্জ-১ সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম, কিশোরগঞ্জ-৪ রেজওয়ান আহম্মদ তৌফিক, মানিকগঞ্জ-২ মমতাজ বেগম, গাজীপুর-২ মো. জাহিদ আহসান রাসেল, ফরিদপুর-১ মো. আব্দুর রহমান, ফরিদপুর-৩ খন্দকার মোশাররফ হোসেন, সিলেট-১ আবুল মাল আবদুল মুহিত, মৌলভীবাজার-৪ আব্দুস শহীদ, কুমিল্লা-৭ অধ্যাপক মো. আলী আশরাফ, কুমিল্লা-১০ আ হ ম মোস্তাফা কামাল, ফেনী-২ নিজাম উদ্দিন হাজারী, চট্টগ্রাম-৭ মোহাম্মদ হাছান মাহমুদ, চাঁদপুর-১ ড. মহিউদ্দীন খান আলমগীর, চাঁদপুর-৩ দীপু মনি, নোয়াখালী-২ মোরশেদ আলম, নোয়াখালী-৫ ওবায়দুল কাদের, রংপুর-৫ এএইচএন আশিকুর রহমান, রাজশাহী-১ ওমর ফারুক ও রাজশাহী-৪ এনামুল হক, সিরাজগঞ্জ-৩ ইসহাক হোসেন তালুকদার, মুন্সীগঞ্জ-৩ মৃনাল কান্তি দাস, নরসিংদী-৫ রাজিউদ্দিন আহমেদ রাজু ও সুনামগঞ্জ-২ আসনে সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত।

ঢাকা মহানগরে ৭টি মনোনয়নপত্র বাতিল :

ঢাকা মহানগরের ১৫টি সংসদীয় আসনে মোট ৬১টি মনোনয়নপত্র জমা পড়েছিল। যাচাই-বাছাই শেষে ৭ জনের মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়েছে। তবে জাতীয় পার্টি (জাপা) থেকে এখন পর্যন্ত মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের আবেদন জমা পড়েনি। ঢাকা-১৭ সংসদীয় আসনে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছিলেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মো. এরশাদ। এখনও পর্যন্ত তিনি মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের আবেদন করেননি।

উল্লেখ্য, জাতীয় পার্টি থেকে ঢাকা মহানগরে ১৫ জন প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন।

(দ্য রিপোর্ট/এমএস/এস/এনডিএস/ডিসেম্বর ০৬,২০১৩)