রাজু আহমেদ, বালি (ইন্দোনেশিয়া থেকে) : ২০০৫ সালে হংকং সম্মেলনে ঘোষিত ৯৭ ভাগ পণ্যে শুল্কমুক্ত সুবিধা বাস্তবায়নের প্রতিশ্রুতি ছাড়া বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার বালি সম্মেলন থেকে নতুন কিছুই পাচ্ছে না বাংলাদেশসহ স্বল্পোন্নত দেশগুলো। স্থানীয় সময় রাত ৯টায় প্রকাশিত সম্মেলনের খসড়া ঘোষণায় শতভাগ পণ্যে শুল্কমুক্ত সুবিধাসহ বাংলাদেশের কোনো দাবিই পূরণ হয়নি।

এদিকে খাদ্য নিরাপত্তার বিষয়ে ভারত ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে সমঝোতা না হওয়ায় নির্ধারিত সময়ে শেষ হতে পারেনি বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থা বা ডব্লিউটিওর নবম মন্ত্রী পর্যায়ের সম্মেলন। বালির নুসা দুয়া কনভেনশন সেন্টারে শুক্রবার স্থানীয় সময় বিকেল ৩টায় সমাপনী অনুষ্ঠান হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু সমঝোতা না হওয়ায় দুপুরে ওই অনুষ্ঠানের সময় অনির্দিষ্ট করা হয়। গভীর রাতে সম্মেলন শেষ হতে পারে বলে এই প্রতিবেদককে জানিয়েছেন ডব্লিউটিওর মুখপাত্র কিথ রকওয়েল।

তবে নিজেদের অবস্থান থেকে এখনো কোনো পক্ষই ছাড় দিতে রাজি না হওয়ায় সিদ্ধান্ত ছাড়াই সম্মেলন শেষ হওয়ার আশঙ্কা করছেন অনেকে। এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত (বালি সময় রাত পৌনে ১টা) বিরোধী পক্ষগুলোকে একটি সিদ্ধান্তে আনার চেষ্টা করছেন ডব্লিউটিও মহাপরিচালক।

সমাপনী অনুষ্ঠান ঘোষণার মধ্য দিয়ে শেষ হওয়ার কথা মন্ত্রী পর্যায়ের সম্মেলন। তবে ভর্তুকি মূল্যে খাদ্য বিতরণকে কৃষি চুক্তির আওতায় আনার পক্ষে যুক্তরাষ্ট্রের অনড় অবস্থান এবং এই ইস্যুতে ভারতের ভিন্নমত পুরো সম্মেলনকে স্থবির করে রেখেছে। ফলে গভীর রাত পর্যন্ত আলোচনা চলতে পারে বলে ধারণা করছেন বিভিন্ন দেশের প্রতিনিধিরা।

সকালে এক সংবাদ সম্মেলনে ডব্লিউটিও মুখপাত্র কিথ রকওয়েল বলেন, ‘বালি প্যাকেজ নিয়ে সব পক্ষ অনেকটা কাছাকাছি অবস্থানে রয়েছে। তবে একটি সমঝোতায় পৌঁছতে আরো কয়েক ঘণ্টা সময় দিতে হবে।’

তিনি জানান, ‘খাদ্য নিরাপত্তা ইস্যুতে মূল দুই বিরোধী পক্ষ ভারত ও যুক্তরাষ্ট্রসহ বিভিন্ন দেশের প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনা অব্যাহত রেখেছেন। এই ইস্যুতে মীমাংসা হলেই বালি সম্মেলন সাফল্যের সঙ্গে শেষ হতে পারে।’

তবে আগের দিনই ভারতের বাণিজ্য ও শিল্পমন্ত্রী আনন্দ শর্মা জানিয়ে দিয়েছেন, ‘দর কষাকষি প্রক্রিয়ায় খাদ্য নিরাপত্তা ইস্যুতে কোনো ছাড় দেবে না তার দেশ।

তিনি বলেন, ‘১২০ কোটি মানুষের দেশ ভারত ৭০ কোটি দরিদ্র মানুষকে তাদের ন্যূনতম খাদ্য চাহিদা পূরণে বিশেষ কর্মসূচি বাস্তবায়ন করছে। এটি নাগরিকদের আইনসঙ্গত অধিকার। এই ইস্যুতে কোনো আপসের সুযোগ নেই।'

(দ্য রিপোর্ট/আরএ/এস/এমসি/ডিসেম্বর ০৭, ২০১৩)