মাহফুজ স্বপন ও রাজু হামিদ, দ্য রিপোর্ট : নির্বাচন কমিশন চুপচাপ, তাই আচরণবিধি মানছেন না ক্ষমতাসীন দলের প্রার্থীরা। প্রকাশ্যে প্রচার-প্রচারণা চালাচ্ছেন তারা। ভয়ে মুখ খুলছেন না প্রতিদ্বন্দ্বীরাও।

প্রার্থীরা এসব বিষয়ে অভিযোগ না করলেও গণমাধ্যমে প্রায় প্রতিদিনই আচরণবিধি লঙ্ঘনের ঘটনা প্রকাশ পাচ্ছে। তবে শনিবার পর্যন্ত কোনো প্রার্থীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। সর্বশেষ গত ৫ ডিসেম্বর আচরণবিধি লঙ্ঘন করে ফরিদপুরের সদরপুরে নিজের নির্বাচনী ক্যাম্প উদ্বোধন করেন আওয়ামী লীগ সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কাজী জাফর উল্যাহ। ক্যাম্প উদ্বোধনের পর অর্ধশতাধিক মোটরসাইকেল নিয়ে তিনি এলাকায় শোডাউন করেন।

নির্বাচনী আচরণবিধির ১২ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী কোনো প্রার্থী ভোট গ্রহণের জন্য নির্ধারিত দিনের তিন সপ্তাহ আগে কোনো ধরনের নির্বাচনী প্রচারণা চালাতে পারবেন না। সে অনুযায়ী আগামী ১৩ ডিসেম্বরের আগে প্রকাশ্য প্রচার-প্রচারণা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ।

কাজী জাফর উল্যাহর আচরণবিধি লঙ্ঘনের বিষয়টি গত ৫ ও ৬ ডিসেম্বর গণমাধ্যমে ফলাও করে প্রকাশিত হয়েছে। ওই ঘটনার দুই দিন পরও বিষয়টি আমলে নেয়নি স্থানীয় রিটার্নিং কর্মকর্তা।

এ বিষয়ে শনিবার সন্ধ্যায় ফরিদপুর জেলা প্রশাসক আবু হেনা মোর্শেদ জামান দ্য রিপোর্টকে জানান, আচরণবিধি লঙ্ঘনের বিষয়টি তার জানা নেই।

এর আগে গত ২ ডিসেম্বর মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ দিনে হেলিকপ্টারে চড়ে মনোনয়নপত্র জমা দেন যশোর-৩ আসনের আওয়ামী লীগের প্রার্থী কাজী নাবিল আহমেদ ও রংপুর-৪ আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য টিপু মুনশী।

এছাড়া ফেসবুকসহ অনান্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোয় নিয়মিত প্রচার-প্রচারণা চালাচ্ছেন প্রার্থীরা। এসব ঘটনার কোনোটার বিরুদ্ধেই ব্যবস্থা নেয়নি স্থানীয় রিটার্নিং কর্মকর্তারা।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে দায়িত্ব এড়িয়ে গিয়ে নির্বাচন কমিশন সচিব ড. মোহাম্মদ সাদিক জানিয়েছেন, এসব বিষয় তো লোকাল রিটার্নিং অফিসারদের দেখার কথা।

অভিযোগ রয়েছে- সারাদেশে রিটার্নিং অফিসারের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা কমিশন সচিবালয়ের আদেশে চলছেন না। তারা চলছেন স্থানীয় এমপি ও ক্ষমতাসীন দলের নেতাদের প্রদর্শিত পথে।

এসব বিষয়ে সাবেক নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন বলেন, ‘বর্তমান পরিস্থিতি দেখে মনে হচ্ছে কিছুই নির্বাচন কমিশনের কন্ট্রোলে নেই।’

(দ্য রিপোর্ট/আরএইচ/এনডিএস/এস/এইচএসএম/ডিসেম্বর ০৮, ২০১৩)