তারেক সালমান ও মাহমুদুল হাসান, দ্য রিপোর্ট : চলমান রাজনৈতিক আন্দোলনে জাতীয় পার্টির (জাফর) চেয়ারম্যান কাজী জাফরকে কাছে টানতে মরিয়া বিএনপি।

নির্বাচনকালীন সরকার ব্যবস্থা নিয়ে যে সঙ্কট তৈরি হয়েছে তা থেকে উত্তরণে দেশীয় রাজনীতিতে অভিজ্ঞ নেতা হিসেবে কাজী জাফর আহমদের অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগাতে চায় দলটি।

জানা যায়, গত এক বছর ধরে চেষ্টা করছে কাজী জাফর জাতীয় পার্টিকে মহাজোট থেকে বের করে বিএনপির সঙ্গে কাজ করার জন্য। সম্প্রতি তা চূড়ান্ত রূপ নেয়। আওয়ামী লীগের অধীনে নির্বাচন ও সর্বদলীয় মন্ত্রিপরিষদে যোগ দেওয়ার প্রশ্নে জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের সঙ্গে চূড়ান্ত মতবিরোধ ঘটে। এরশাদ তাকে জাতীয় পার্টি থেকে বহিষ্কার করলে কাজী জাফরও পাল্টা এরশাদকে বহিষ্কার করে নিজেকে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান ঘোষণা দেন।

নিজ বাসভবনে শনিবার দুপুর সোয়া ১২টায় ডাকা এক সংবাদ সম্মেলনে চলমান সঙ্কট নিরসনে ও নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকার গঠনের জন্য রাষ্ট্রপতিকে জাতীয় সংলাপ ডাকার আহ্বান জানান কাজী জাফর আহমদ। এ সময় অবিলম্বে প্রধানমন্ত্রীকে পদত্যাগেরও আহ্বান জানান তিনি।

এর আগে বৃহস্পতিবার রাতে বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সঙ্গে গুলশানে তার রাজনৈতিক কার্যালয়ে সাক্ষাৎ করেন কাজী জাফর। পরে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘নির্দলীয় সরকারের দাবিতে বিএনপির চলমান আন্দোলনে একাত্মতা প্রকাশ করতে এসেছি।’ একই সঙ্গে তিনি বলেন, ‘আমরা জোটবদ্ধ হতেও পারি। আর না হলেও সমন্বিত কর্মসূচি পালন করব।’

এরপর বিএনপির পক্ষ থেকে কাজী জাফরের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখা হচ্ছে।

অবরোধ কর্মসূচি চলাকালে শনিবার কাজী জাফরের বাসায় সংবাদ সম্মেলন চলাকালে দলের প্রতিনিধি হিসেবে বিএনপি চেয়ারপারসনের এক উপদেষ্টাকে দেখা যায়। এছাড়া বিএনপির দুই সহ-দফতর সম্পাদকও সেখানে উপস্থিত ছিলেন।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, কাজী জাফর আহমদ এরশাদের জাপা থেকে বের হয়ে আসার পর প্রায় প্রতিদিনই বিএনপির কোনো না কোনো নেতা নিয়মিত তার সঙ্গে দেখা করছেন, আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছেন।

এদিকে কাজী জাফর ছাড়াও বিকল্পধারা, কৃষক শ্রমিক জনতা লীগসহ ছোট ছোট দলগুলোকে জোটে না হলেও নির্দলীয় সরকার দাবিতে আন্দোলনে কাছে টানতে চাচ্ছে দলটি।

এ ব্যাপারে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট আহমদ আজম খান দ্য রিপোর্টকে বলেন, ‘নির্দলীয় সরকারের দাবিতে আমাদের যে আন্দোলন চলছে, তা শুধু বিএনপির একার আন্দোলন নয়। এটা দেশের প্রতিটি জনগণের আন্দোলন ও চাওয়া।’

অ্যাডভোকেট আজম বলেন, ‘শুধু কাজী জাফর আহমদকে নয়, এই গণআন্দোলনে বিএনপি দেশের সবাইকে বিশেষ করে সব বিরোধী দলকে পাশে চায়। কারণ এ আন্দোলন দেশের গণতন্ত্র রক্ষার আন্দোলন। সেক্ষেত্রে কাজী জাফর আহমদের মতো একজন অভিজ্ঞ রাজনীতিককে অবশ্যই পাশে চায় বিএনপি।’

(দ্য রিপোর্ট/টিএস/এমএইচ/এস/এনডিএস/ডিসেম্বর ০৮,২০১৩)