বরিশাল মুক্ত দিবস ৮ ডিসেম্বর
বরিশাল সংবাদদাতা : ৮ ডিসেম্বর বরিশাল মুক্ত দিবস। ১৯৭১ সালের এই দিনে হানাদার পাকসেনারা তাদের পরাজয় নিশ্চিত জেনে কারফিউ ঘোষণা করে বরিশাল শহর ছেড়ে পালিয়ে গিয়েছিল।
স্বাধীনতাযুদ্ধে নবম সেক্টরের অন্তর্ভুক্ত ছিল বরিশাল অঞ্চল। ২৫ মার্চ রাতে ঢাকায় পাকসেনাদের আক্রমণের মধ্যদিয়ে স্বাধীনতাযুদ্ধ শুরু হলে ২৬ মার্চ সদর গার্লস স্কুলে গঠন করা হয় সচিবালয়। এখান থেকেই নবম সেক্টরের যুদ্ধ পরিচালিত হতো।
মুক্তিযুদ্ধ শুরুর ঠিক এক মাস পর ২৫ এপ্রিল নদী পথে বরিশালে প্রবেশ করেছিল পাকসেনারা। ওই দিন সকাল ১১টায় শহরতলীর চরবাড়িয়াতে হামলা করে ১২৮ জন নিরীহ মানুষকে হত্যা করে ঘরবাড়ি জ্বালিয়ে দেয় পাকসেনারা। ক্যাম্প স্থাপন করে নগরীর ওয়াপদা কলোনিতে। এখানেই তারা নির্বিঘ্নে হত্যাযজ্ঞ চালাত। মুক্তিযোদ্ধা ও সংগ্রাম পরিষদের সদস্য আক্কাস হোসেন বলেন, ওয়াপদা কলোনিতে নির্যাতন শেষে হত্যা করে লাশ ফেলে দিত ক্যাম্পসংলগ্ন কীর্তনখোলা নদীতে।
দীর্ঘ ৯ মাস সশস্ত্র সংগ্রামের পর ৮ ডিসেম্বর পরাজয় নিশ্চিত জেনে পাকসেনারা ভোর রাতে কারফিউ জারি করে দুটি স্টিমারযোগে নদী পথে ঢাকার পথে পালিয়ে যায়। এ সময় ঝুনাহার নামক স্থানে মিত্রবাহিনীর বিমান হামলায় একটি স্টিমার ডুবে যায়। সলিল সমাধি হয় জাহাজে থাকা শতাধিক পাকসেনার।
মুক্তিযোদ্ধা ও রণাঙ্গনের পত্রিকা ‘বিপ্লবী বাংলাদেশের’ সম্পাদক নূরুল আলম ফরিদ বলেন, এ খবর পেয়ে সুলতান মাস্টারের নেতৃত্বে প্রথমে মুক্তিযোদ্ধাদের একটি দল বরিশাল শহরে প্রবেশ করে থানা দখল করে নেয়। এরপর পর্যায়ক্রমে অন্য কমান্ডাররা তাদের বাহিনী নিয়ে বরিশাল শহরের বিভিন্ন স্থাপনায় অবস্থান নেন। মুক্তিযোদ্ধাদের আগমনে বিজয় উল্লাস করে নগরবাসী। তারা ফুল দিয়ে বরণ করে নেয় মুক্তিযোদ্ধাদের।
এই দিনটিতে বিজয় র্যালি করার পাশাপাশি নতুন প্রজন্মকে মুক্তিযুদ্ধ সম্পর্কে ওয়াকিবহাল করার পাশাপাশি বাংলাদেশে যুদ্ধকালীন প্রথম গঠিত সচিবালয় স্থান বরিশাল সদর গার্লস স্কুলে একটি জাদুঘর নির্মাণের আহ্বান জানিয়েছেন জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক ডেপুটি কমান্ডার যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা এমজি কবির ভুলু।
(দ্য রিপোর্ট/বিএস/এস/জেএম/ডিসেম্বর ০৮, ২০১৩)