পটুয়াখালী সংবাদদাতা : ৮ ডিসেম্বর পটুয়াখালী হানাদার মুক্ত দিবস। ১৯৭১ সালের এই দিনে দেশ মাতৃকার টানে জীবন বাজি রেখে লাল-সবুজের পতাকা ছিনিয়ে আনেন জেলার সূর্য সন্তানরা।

মুক্তিযোদ্ধা বাদল মাতবর জানান, মুক্তিযুদ্ধের সময় পটুয়াখালী ছিল ৯নং সেক্টরের অধীনে একটি সাব সেক্টর। পুলিশ লাইন অস্ত্রাগার থেকে তৎকালীন জেলা প্রশাসক আবদুল আউয়ালের দেওয়া ৬৫টি রাইফেল নিয়ে ১০টি থানাকে পাঁচটি অঞ্চলে ভাগ করে যুদ্ধ শুরু করেন এখানকার মুক্তিযোদ্ধারা। যুদ্ধে নেতৃত্ব দেন ৯নং সেক্টরের কমান্ডার নূরুল হুদা ও সাব কমান্ডার হাবিবুর রহমান শওকত।

একাত্তরের ২৬ এপ্রিল পাক হানাদার বাহিনী পটুয়াখালীর নিরস্ত্র মানুষের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে। নির্বিচারে চালায় গণহত্যা, অগ্নিসংযোগ আর লুটপাট।

এ সময় শহরের কালিকাপুরের মাতবরবাড়ি ও ডিসি বাংলোর দক্ষিণ পাশে সম্মুখযুদ্ধে সাতজন আনসার সদস্যসহ শহীদ হন ২৫ জন মুক্তিসেনা। সামরিক জান্তারা স্থানীয় সার্কিট হাউসে গড়ে তোলে ক্যাম্প। সেখানে নির্যাতন চালানো হয় নারীদের ওপর।

জেলার সবচেয়ে বড় ভয়াবহ সম্মুখযুদ্ধ হয় ১৮ নভেম্বর গলাচিপার পানপট্টিতে। টানা ৮ ঘণ্টা চলা যুদ্ধে অর্ধশত পাকসেনা নিহত হয়। মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতিরোধে পাকিস্তানি বাহিনীর মেজর ইয়ামিন তার দলবল নিয়ে পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়। ৬ ডিসেম্বর রাতে মুক্তিসেনারা শহরের চারদিক অবস্থান নিয়ে চূড়ান্ত হামলার প্রস্তুতি নেন। এ হামলার প্রস্তুতি টের পেয়ে ৭ ডিসেম্বর শহরে কারফিউ জারি করে পাকসেনারা। রাতের আঁধারে দোতলা লঞ্চে পালিয়ে যেতে বাধ্য হয় তারা। ৮ ডিসেম্বর শত্রুমুক্ত হয় পটুয়াখালী। ওড়ানো হয় লাল-সবুজের পতাকা।

এদিকে স্বাধীনতার দীর্ঘ ৪২ বছরেও পাক হায়েনাদের দোসর রাজাকারদের দৃষ্টান্ত শাস্তি না হওয়ায় ক্ষোভ আর হতাশা বিরাজ করছে স্থানীয় মুক্তিকামী মানুষের মধ্যে।

(দ্য রিপোর্ট/কেবিডি/কেএন/এস/এএস/ডিসেম্বর ০৮, ২০১৩)