খালেদা জিয়া সিলেট পৌঁছেছেন
তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে ৮টি জেলায় সমাবেশের অংশ হিসেবে শনিবার সিলেটে সর্বশেষ জনসভা অনুষ্ঠিত হবে। সিলেট সরকারি আলিয়া মাদ্রাসা মাঠের এই জনসভায় সভাপতিত্ব করবেন সিলেট মহানগর বিএনপির সভাপতি এম এ হক।
জনসভাকে সফল করতে স্থানীয় বিএনপি ও ১৮ দলীয় জোটের পক্ষ থেকে ব্যাপক প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। সমাবেশে সবচেয়ে বেশি জনসমাগম ঘটবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন স্থানীয় বিএনপি নেতারা। বেগম খালেদা জিয়া এই সভা থেকে আগামী দিনের কর্মসূচি ঘোষণার পাশাপাশি প্রয়োজনীয় দিক নির্দেশনা দিবেন বলে জানান দলীয় নেতারা।
খালেদা জিয়া শুক্রবার বিকাল ৫টা ৪০ মিনিটে গুলশানের দলীয় কার্যালয় থেকে সড়কপথে সিলেটের উদ্দেশে রওনা দেন। ঢাকা থেকে সিলেট আসার পথে সড়কের বিভিন্ন স্থানে হাজার হাজার নেতাকর্মী তাকে সংবর্ধনা জানায়। নেতাকর্মীদের সংবর্ধনার জবাবে খালেদা জিয়াও হাত নেড়ে অভিবাদন জানান।
রাতে খালেদা জিয়া সিলেট সার্কিট হাউসে এসে পৌঁছলে তাকে স্বাগত জানান বিএনপির কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান শমসের মুবিন চৌধুরী, সিটি মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী, মহানগর সভাপতি এমএ হকসহ বিভিন্ন নেতা। এ সময় বিপুলসংখ্যক নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন। সিলেট সার্কিট হাউসে রাতযাপন করেন তিনি।
শনিবার শাহজালাল (রহ.) ও শাহপরাণ (রহ.)-এর মাজার জিয়ারতের মাধ্যমে দিনের কর্মসূচি শুরু করবেন বিএনপির নেত্রী। দুপুরে নগরীর আলিয়া মাদ্রাসা মাঠে জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য দেবেন তিনি। বিরোধীদলীয় নেতার জনসভাকে কেন্দ্র করে সিলেট শহরজুড়ে এখন সাজ-সাজ রব। ব্যানার, ফেস্টুন, বিলবোর্ড, তোরণ আর পোস্টারে ছেয়ে গেছে নগরীর অলিগলি।
সিলেট বিভাগের ১৯ আসনের সম্ভাব্য প্রার্থীরা নিজেদের ছবি জুড়ে দিয়ে মনোনয়নের দাবি জানিয়ে নগরীতে হাজারো ফেস্টুন ও বিলবোর্ড টানিয়েছেন। ফলে খালেদার ‘নির্বাচন প্রতিহতের’ জনসভার প্রচারণায় দেখা দিয়েছে নির্বাচনী আমেজ। নির্বাচনমুখী প্রচারণা চালাচ্ছেন সম্ভাব্য প্রার্থী ও স্থানীয় নেতারা।
কেবল বিএনপি বা জোট নেতারা নন, সাধারণ নগরবাসীর মধ্যেও খালেদার এই সফর নিয়ে কৌতূহল বিরাজ করছে। দুই দলের মতানৈক্যে নির্বাচনের অনিশ্চয়তা দেখা দেয়ায় রাজনৈতিক সংঘাতের আশঙ্কা বিরাজ করছে দেশজুড়েই। এমন সময়ে খালেদা জিয়া সিলেটে এসে নির্বাচন ও আগামীদিনের কর্মসূচি নিয়ে কী বলেন, তা নিয়ে কৌতূহলের শেষ নেই সাধারণ জনগণের মধ্যে।
মহাসমাবেশ প্রস্তুতি কমিটির প্রচারণা উপকমিটির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট শামসুজ্জামান জামান বলেন, এই সমাবেশে দেশনেত্রী আগামীদিনের রাজনৈতিক দিকনির্দেশনা দেবেন। তার সফর উপলক্ষে পুরো বিভাগের নেতাকর্মীদের মধ্যে ব্যাপক উদ্দীপনা বিরাজ করছে। সমাবেশে কয়েক লাখ লোক সমবেত হয়ে তত্ত্বাবধায়ক সরকার পুনর্বহাল ও ইলিয়াস আলীকে ফিরিয়ে দেয়ার দাবি জানাবে।
জনসভা প্রস্তুতি কমিটির আহ্বায়ক ও বিএনপির সহসভাপতি শমসের মবিন চৌধুরী বীরবিক্রম জানান, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে এই জনসভা অনুষ্ঠিত হবে। এটি হবে সিলেটের ইতিহাসে সর্ববৃহত্তম সমাবেশ। সিলেটবাসী যেভাবে সাড়া দিয়েছেন তাতে মনে হচ্ছে আজ সিলেট নগরীতে লোকে লোকারণ্য হয়ে যাবে।
এর আগে ২০১১ সালের ১০ অক্টোবর তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে ঢাকা থেকে রোডমার্চ করে সিলেটে এসেছিলেন বিরোধীদলীয় নেতা খালেদা জিয়া। একই দাবিতে দুই বছর পর আবারো সিলেটের মাটিতে এলেন বিরোধীদলীয় নেতা।
(রিপোর্ট২৪/এএস/জেএম/অক্টোবর ০৫, ২০১৩)