সাগর আনোয়ার, দ্য রিপোর্ট : জাতীয় পার্টির মন্ত্রীদের পদত্যাগের বিষয়ে একেক সময় একেক কথা বলে জাতিকে বিভ্রান্ত করছেন জাপা মহাসচিব নির্বাচনকালীন সরকারের বেসামরিক বিমান ও পর্যটনমন্ত্রী এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদার। পার্টির চেয়ারম্যান এরশাদ মহাসচিবসহ জাপার মন্ত্রীদের বার বার পদত্যাগের নির্দেশ দিলেও পদত্যাগ না করে নানা নাটকের জন্ম দিচ্ছেন তিনি। এতে বিভ্রান্ত হচ্ছেন জাপার নেতাকর্মীরা।

সূত্র জানায়, জাপা মহাসচিব এরশাদের চাপে বার বার পদত্যাগের কথা বললেও তিনিই মূলত সরকারের সঙ্গে গোপন সমঝোতায় লিপ্ত। গত কয়েক দিনে তিনি একাধিকবার পদত্যাগপত্র জমা দিচ্ছি, আজ সরকারি ছুটি থাকায় জমা দেয়া যাচ্ছে না, প্রধানমন্ত্রী সময় দিচ্ছেন না, সকলের পদত্যাগপত্র স্যারের কাছে জমা আছে বলে সবাইকে বিভ্রান্ত করছেন। তার এই আচরণে জাপার নেতাকর্মীদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।

নেতাকর্মীদের অভিযোগ, মহাসচিব সরকারের ঘনিষ্ঠ জাপার প্রেসিডিয়াম সদস্য নির্বাচনকালীন সরকারের পানিসম্পদমন্ত্রী ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ ও জিয়াউদ্দিন বাবলুকে মদদ দিয়ে চলছেন। এ নিয়ে জাতীয় পার্টিতে সরকার সমর্থক ত্রিরত্ন এরশাদকে নির্বাচনে ফিরতে অদৃশ্য চাপ সৃষ্টি করছেন। তারা সরকারের এজেন্ডা বাস্তবায়নে যারপরনাই ওঠেপড়ে লেগেছেন।

জাপা নেতারা জানান, মহাসচিব প্রতিদিন একবার চেয়ারম্যানের বাসায় যাচ্ছেন, আরেকবার রওশন এরশাদের বাসায় যাচ্ছেন। আবার নিজের বাসায় অন্য মন্ত্রীদের ডেকে কথা বলছেন। মহাসচিবের এ ভূমিকার কারণে জাতীয় পার্টি ও এরশাদের ইমেজ চরমভাবে ক্ষুণ্ন হচ্ছে। শেষ পর্যন্ত মহাসচিবের তৎপরতা কোথায় গিয়ে ঠেকে সেটাই এখন দেখার বিষয়।

সর্বশেষ রবিবার সকাল ১১টার দিকে জাপা মহাসচিব রুহুল আমিন হাওলাদার বারিধারার প্রেসিডেন্ট পার্কে সাংবাদিকদের একটি ফাইল দেখিয়ে বলেন, ‘এই তো আমার কাছে পদত্যাগপত্র। আমি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে যাচ্ছি। এক্ষুণি পদত্যাগপত্র জমা দেব।’

দুপুর ১২টার দিকে জাপা মহাসচিব প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে যাননি সংবাদ ছড়িয়ে পড়ার পর দ্য রিপোর্টের প্রতিবেদক রুহুল আমিন হাওলাদারকে ফোন করলে তিনি বলেন, ‘আমিও কিছু খাইনি, তুমিও কিছু খাওনি। আমার বাসায় এসো নাস্তা করি।’

দুপুর দেড়টার দিকে জাপা মহাসচিব নিজ বাসভবনের নিচে এই প্রতিবেদককে বলেন, ‘দুটি পদত্যাগপত্র বাকি ছিল, পেয়ে গেছি। একটু পরই প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে সময় চাইব।’

দুপুর ১টা ৪০ মিনিটে এই প্রতিবেদককে তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রীর সাড়া পাচ্ছি না। ডাকযোগে পদত্যাগপত্র প্রধানমন্ত্রীর কাছে পাঠানো হবে।

(দ্য রিপোর্ট/সাআ/এস/হা/জেএম/ডিসেম্বর ০৮, ২০১৩)