বিশ্বকাপের ফেভারিট দলগুলো; এবং বিশ্লেষণ
দ্য রিপোর্ট ডেস্ক : গত শুক্রবার সম্পন্ন হয়েছে ব্রাজিল বিশ্বকাপের গ্রুপিং। ফাইনাল-সেমিফাইনাল নয়; সবার আগে দলগুলো ভাবছে প্রথম রাউন্ড নিয়ে। কিভাবে দ্বিতীয়পর্বে ওঠা যায়; চলছে সেই হিসেব-নিকেশ। সেই বিশ্লেষণ; আসুন আমরা দেখে নিই-
প্রথমই আসছে গতবারে চ্যাম্পিয়ন স্পেনের গ্রুপ নিয়ে কথা। নেদারল্যান্ডস তো আছেই, স্পেনের চিন্তার আর একটা কারণ চিলি৷ স্পেন চিলির সামনে পড়লেই কেমন ঘাবড়ে যায়৷ যে কারণে মার্কার মতো কাগজে লেখা হয়েছে, স্পেনই গ্রুপ অফ ডেথে৷ কেননা দ্বিতীয় রাউন্ডেই তো ব্রাজিলের সামনে পড়ার সম্ভাবনা৷ দেল বস্কি, স্কোলারি-সবার প্রধান চিন্তা এখন গ্রুপে এক নাম্বার হয়ে অন্যদের আপাতত এড়ানো৷
গতবারের রানার্স আপ জার্মান মিডিয়ায় ভয়ের কারণ ঘানা৷ এ বার ঘানাইয়ানরা অনেক ধারাবাহিক এবং তারা জার্মানির বিপক্ষে ভালো খেলে৷ তবে জার্মানির সংবাদমাধ্যমে রোনালদোর থেকেও বেশি আলোচনা অন্য প্রতিপক্ষ জার্গেন ক্লিন্সমানকে নিয়ে৷ ক্লিন্সমান জার্মান কোচ জোয়াকিম লোর গুরু৷ এখন যুক্তরাষ্ট্র কোচ৷ এই গ্রুপে খেলছে যুক্তরাষ্ট্র।
গতবারের সেমিফাইনালিস্ট ইতালির গ্রুপে রয়েছে ইংল্যান্ড; দুটো দেশেরই দুটো ভয় এক৷ উরুগুয়ে এবং আমাজন অববাহিকার শহরে খেলতে নামা৷ আমাজন অঞ্চলের আবহাওয়া এখন থেকেই আতঙ্কে রেখেছে ইউরোপিয়ানদের৷ প্রথমে সোচ্চার ছিলেন ইংরেজ কোচ রয় হজসন৷ মানাউস শহরে খেলা নিয়ে৷ শুনে সে শহর এখন থেকেই ইতালির হয়ে গিয়েছে৷
নিজ দেশে খেলা ব্রাজিলের ভয়ের কারণ মেক্সিকো৷ মেক্সিকানদের বিপক্ষে ব্রাজিলের রেকর্ড ভালো নয় মোটেই৷ দ্বিতীয় ভয় এখন থেকেই দ্বিতীয় রাউন্ডের খেলা৷ সেখানে তো পড়তে হবে স্পেন বা নেদারল্যান্ডসের সামনে৷ দলের বাকিদের খুব হিসেবে রাখছে না স্বপ্ন নিয়ে বুকবাধা সাম্বার দেশ।
ইংল্যান্ড মানেই এবার গ্রুপ অফ ডেথ। তবে মাইকেল ওয়েন নিজে একটা স্বস্তি খুঁজে পেয়েছেন; বলেছেন, ‘উরুগুয়েতে সুয়ারেজ, কাভানি, ফোরলান সামনের দিকে আতঙ্ক ছড়াতে পারে৷ ওদের রক্ষণ কিন্তু অত ভালো নয়।’ রয়েছে কোস্টারিকাও।
ফ্রান্স কোচ দিদিয়ের দেশঁ মজা করে বলেছেন, ‘জিদানের পা খুব ভালো চলে জানতাম৷ এখন দেখলাম, হাতও ভালো চলে।’ কী বলতে চাইছেন, বোঝা সহজ৷ জিদানের হাতেই ফ্রান্সের ভাগ্য ঠিক হয়েছে লটারিতে৷ এবং ফ্রান্স বেশ স্বস্তির গ্রুপে৷ দেশঁর মতো ফুরফুরে মেজাজের কোচ খুব কম এবার। প্রতিপক্ষ বেজায় দুর্বলই; সুইজারল্যান্ড, ইকুয়েডরের সঙ্গে রয়েছে হুন্ডুরাস।
৮ গ্রুপের মধ্যে দুটো একেবারেই নিরামিষ৷ সি-তে রয়েছে কলম্বিয়া, গ্রিস, আইভরিকোস্ট এবং জাপান৷ এখান থেকে কলম্বিয়া ও আইভরিকোস্টকে পরের রাউন্ডে ভাবা যেতে পারে৷ এইচ-এ বেলজিয়ামের সঙ্গে রাশিয়া, আলজিরিয়া, কোরিয়া৷ ওদের হিসেবটা সহজই হতে পারে।
সব দেশ যদি ঠিকঠাক খেলে, তা হলে কোয়ার্টার ফাইনাল হতে পারে এ রকম৷ একটা দিক থেকে ব্রাজিল বনাম ইংল্যান্ড, ফ্রান্স বনাম জার্মানি৷ অন্য দিক থেকে স্পেন বনাম ইতালি-একটা ইউরো কাপ ফাইনাল৷ আর আর্জেন্টিনা বনাম পর্তুগাল, মেসি বনাম রোনালদো। কিন্তু এটা বিশ্বকাপ; এখানে সব হিসেব তো মেলার নয়৷ একটা দুটো ফেভারিট দল গ্রুপের দুই নাম্বার হয়ে গেলেই সব হিসেব বদলে যাবে৷
সব মিলিয়ে ব্রাজিলই মনে হচ্ছে সবচেয়ে বেশি টেনশনে থাকল৷ একে মাঠের বাইরে স্টেডিয়াম ভাঙছে, দেশে বিক্ষোভ চলছেই৷ তারপর মাঠের ভেতরে প্রথম রাউন্ডে মেক্সিকো৷ দ্বিতীয় রাউন্ডে স্পেনীয় বা ডাচরা৷ কোয়ার্টার ফাইনালে ইংল্যান্ড, ইতালি কিংবা উরুগুয়ে৷ ফলে সব বাধা টপকেই ব্রাজিলকে বিশ্বকাপ স্বপ্ন পূরণ করতে হবে। অর্থাৎ ব্রাজিলের সামনে এবার ‘অল কম্পিলিট প্রকল্প’।
(দ্য রিপোর্ট/এএস/সিজি/ডিসেম্বর ৮, ২০১৩)