সাফল্যের সঙ্গে লেনদেনেও ঈর্ষণীয় দোলেশ্বর
দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক : শেষপর্যন্ত চ্যাম্পিয়ন; এমনকি রানার্সআপও হতে পারেনি চমক দেখানো প্রাইম দোলেশ্বর। প্রথম আসরেই ক্রিকেট লিগে যে সাফল্য দেখিয়েছে; তাতে সবার প্রশংসা কুড়িয়েছে। সাফল্যই নয়; পারিশ্রমিক তথা লেনদেনেও ঈর্ষণীয় ভূমিকা রেখেছে দোলেশ্বর। লিগ শেষ হওয়ার আগেই ক্রিকেটারদের ১০০ ভাগ পারিশ্রমিক প্রদান করেছে তারা!
গাজী ট্যাংকের বিপক্ষে সুপার লিগের শেষ ম্যাচে জিতলেই দোলেশ্বর প্রথম আসরেই বাজিমাত করত।ঘরে তুলতো শিরোপা। কিন্তু হেরে যায় দলটি। জয়-পরাজয়ের সমীকরণে মুখোমুখি বিবেচনায় শেষপর্যন্ত দলটি রানার্সআপও হতে পারেনি। তবে দলটি প্রথমবারেই বিস্ময় জাগিয়েছে বড় বড় দলগুলোকে হারিয়ে।
‘প্লেয়ার বাই চয়েজ’ পদ্ধতিতে রোটেশনে লটারির মাধ্যমে এবার দল গোছাতে হয়েছে ক্লাবগুলোকে। ক্যাটাগরির ভিত্তিতে প্রত্যেক ক্রিকেটারেরই মূল্য নির্ধারণ ছিল। তাই সব দল সমান শক্তিরই ছিল। এরপরও প্রাইম দোলেশ্বর চ্যাম্পিয়ন হওয়ার মতো অবস্থায় নিজেদের নিয়ে যাবে; এমন ভাবনা কেউই করেনি। সেই ভাবনার ভুল প্রমাণ করেছে দোলেশ্বর। দারুণ সাফল্যে উদ্বেলিত দলের কর্মকর্তারা খুশি হয়ে আগে-ভাগেই ক্রিকেটারদের পারিশ্রমিক প্রদান করেছেন। নিয়ম অনুযায়ী লিগ শুরু হওয়ার আগে ৪০ ভাগ; শেষ হওয়ার আগে ৩০ ভাগ এবং লিগ শেষ হওয়ার পর ১ মাসের মধ্যে ৩০ ভাগ অর্থ ক্রিকেটারদের বুঝিয়ে দেওয়ার কথা। সেখানে প্রাইম দোলেশ্বর লিগ শেষ না হতেই ক্রিকেটারদের শতভাগ পাওনা বুঝিয়ে দিয়েছে!
প্রাইম দোলেশ্বরের অধিনায়ক ফরহাদ রেজা জানিয়েছেন, ‘সুপারলিগের শেষ ম্যাচের আগেই শতভাগ পারিশ্রমিক দিয়ে দিয়েছে ক্লাব।’ আর দলের এমন সাফল্যের পেছনে রহস্যের কারণ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে জানিয়েছেন, ‘আগেও বলেছি। এখনও বলছি। একক প্রচেষ্টাতে এমন সাফল্য আসা করা যায় না। সব সাফল্য এসেছে ক্রিকেটারদের ঐক্যবদ্ধ নৈপূন্যে। আমরা একটা ইউনিট হিসেবে খেলেছি। সাফল্যে খুশি হয়ে আমাদের পাওনাও সব দিয়ে দিয়েছে মালিকপক্ষ।’
প্রাইম দোলেশ্বরে দেশিয় ক্রিকেটারদের মধ্যে সাব্বির রহমান (১০ লাখ), মমিনুল হক (১৫ লাখ), ফরহাদ রেজা (১০ লাখ), তাইজুল ইসলাম (৮ লাখ), রনি তালুকদার (৮ লাখ), সোহাগ গাজী (১৫ লাখ), রবিউল ইসলাম রবি (৫ লাখ), আরমান হোসেন (২.৫০ লাখ), কাজী কামরুল ইসলাম (৫ লাখ), আশরাফুল হক (২.৫০ লাখ), আসলাম খান (২.৫০ লাখ), মেহেদী মারুফ (১ লাখ), শফিউল আলম (১ লাখ), গোলাম কবির (১ লাখ), অপূর্ব রায় (১ লাখ), সুমন সাহা (১ লাখ) খেলেছেন। আর বিদেশিদের মধ্যে শ্রীলঙ্কান তিলকারত্মে সামপাথ, রোসানে সিভাঙ্কা সিলভা, হাসান্থা ফার্নান্দে, কালুরাচ্চি সিলভা, ডব্লিউ সিলভা, আফগানিস্তানের নাজিবুল্লাহ জাদরান, ইংল্যান্ডের জসুয়া কোব খেলেছেন।
দেশি ক্রিকেটারদের জন্য প্রায় ৯০ লাখ টাকা খরচ করতে হয়েছে প্রাইম দোলেশ্বরকে। বিদেশিরা সবাই পুরো লিগ খেলেননি, তাই ম্যাচ অনুযায়ীই তাদের সঙ্গে চুক্তি হয়েছে। সব মিলিয়ে প্রায় ১ কোটির মতো খরচ হয়েছে। এ টাকা খরচ করেই দল বিশেষ সাফল্য পেয়ে গেছে। প্রথমবার অংশ নিয়েই আবাহনী, শেখ জামাল, প্রাইম ব্যাংক, গাজী ট্যাংক, ব্রাদার্স, কলাবাগান ক্রীড়া চক্র, মোহামেডানের মতো দলকে হারিয়েছে। এর মধ্যে আবার বিসিবি থেকেও পেয়েছে ৩৫ লাখ টাকা। অর্থাৎ খরচ দাঁড়ালো ৬৫ লাখ!
দলের ক্রিকেট কমিটির ম্যানেজার মোস্তাক আহমেদ জানিয়েছেন, ‘ক্রিকেটারদের নৈপূন্যে কর্মকর্তারাসহ সবাই খুশি। এজন্য লিগ শেষ হওয়ার ১ মাসের মধ্যে যে পারিশ্রমিক ক্রিকেটারদের পাওয়ার কথা তা লিগ শেষ হওয়ার আগেই দেওয়া হয়েছে।’
(দ্য রিপোর্ট/এমএ/এএস/সিজি/ডিসেম্বর ৮, ২০১৩)