হাসিনা না থাকলে বিএনপি নির্বাচনে আসতে পারে: এরশাদ
দ্য রিপোর্ট ডেস্ক : নির্বাচন থেকে আকস্মিকভাবে সরে দাঁড়িয়ে রাজনীতিতে তোলপাড় সৃষ্টি করেছেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ। সাবেক সেনাশাসক জেনারেল এইচএম এরশাদ বিবিসি বাংলাকে এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন, বিএনপি নির্বাচনে না এলে তার দল নির্বাচন করবে না। তার এই সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত এবং এ নিয়ে কোন বিভ্রান্তি থাকা উচিত নয়।
এরশাদ বলেন, তার বিশ্বাস শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রীত্বের পদ ছাড়লে সঙ্কটের সমাধান হতে পারে। ‘শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রীর পদে না থাকলে বিএনপি নির্বাচনে আসতে পারে। কারণ বিএনপির আশঙ্কা নির্বাহী ক্ষমতা শেখ হাসিনার হাতে থাকলে নির্বাচনে কারচুপি হতে পারে।’
জাপা চেয়ারম্যান বলেন, নির্বাচনকালীন সরকার থেকে তার দলের নেতারা পদত্যাগ করেছেন। পদত্যাগপত্রগুলো ডাকযোগে পাঠিয়ে দেওয়ার চেষ্টা চলছে।
কিন্তু সরকারি দলের নেতারা এখনও বলছেন, এরশাদের জাতীয় পার্টি শেষ পর্যন্ত নির্বাচনে অংশ নেবে বলেই তাদের বিশ্বাস।
এ বিষয়ে এরশাদ বলেন, ‘এটা সরকারের উইশফুল থিংকিং (সরকার এরকমই ভাবতে চায়)। গত চার বছর ধরেই আমি বলে আসছি আমি এককভাবে নির্বাচন করব। আমি কারো ক্ষমতায় যাওয়ার সিঁড়ি হিসেবে ব্যবহৃত হবো না।’
এরশাদ জানান, সব দলের অংশগ্রহণ ছাড়া নির্বাচন গ্রহণযোগ্য হবে না এবং সেরকম কোনো নির্বাচনেও তিনি অংশ নেবেন না।
নির্বাচনের কোন পরিবেশও নেই বলে তিনি দাবি করেন। তিনি বলেন, ‘বিএনপি প্রধান বিরোধী দল। তাদের ছাড়া নির্বাচন হলে সেটা গ্রহণযোগ্য হবে না। অশান্তি বন্ধ হবে না। আন্দোলন চলতে থাকবে। মানুষ মরতেই থাকবে। মানুষ জ্বলে মরতে থাকবে। এ অবস্থায় নির্বাচন করা কোনোভাবেই সমীচীন হবে না।’
এরশাদ বলেন, তিনি আন্দাজ করেছিলেন যে বিএনপি এই নির্বাচনে অংশ নেবে না। কিন্তু দলটির ভেতরে ভেতরে অনেকেই নির্বাচনে আসতে চেয়েছিল। অনেক প্রার্থী গ্রামেগঞ্জে নির্বাচনী প্রচারণাও চালাচ্ছিল, যা দেখে তার মনে হয়েছিল যে বিএনপি হয়ত শেষ মুহূর্তে নির্বাচনে অংশ নিতে পারে। সেই আশাতেই তিনি নির্বাচনে গিয়েছিলেন, যার মধ্য দিয়ে সরকার পরিবর্তনের একটা সুযোগ তৈরি হবে।
সরকারের সঙ্গে শর্ত নিয়ে যেসব খবর প্রকাশিত হয়েছে সে বিষয়ে জানতে চাইলে এরশাদ বলেন, সরকারের সঙ্গে তার কোনো শর্ত ছিল না।
কিভাবে বর্তমান সঙ্কটের সমাধান হতে পারে- এই প্রশ্নে এরশাদ বলেন, শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রীর পদে না থাকলে বিএনপি নির্বাচনে আসতে পারে বলে তিনি মনে করেন।
তিনি জানান, নির্বাচনকালীন সরকার থেকেও তার দলের মন্ত্রীরা পদত্যাগ করেছেন। সবার পদত্যাগপত্র তার কাছে জমা আছে।
শনিবার তারা পদত্যাগপত্র জমা দিতে গিয়েছিলেন। সেগুলো নেওয়া হয়নি। রবিবারও দলের মহাসচিব গিয়েছিলেন কিন্তু সেসব গ্রহণ করা হয়নি। তাই এখন তারা ডাকযোগে পাঠানোর চেষ্টা করছেন।
তিনি জানান, তার দলের মন্ত্রীরা অফিসেও যাচ্ছেন না।
(দ্য রিপোর্ট/টিএস/শাহ/এসবি/ডিসেম্বর ০৯, ২০১৩)