পাখিদের গ্রাম নাটোরের সমসখলসি
নাটোর সংবাদদাতা : নাগরিক জীবনের যান্ত্রিকতা নষ্ট করেছে পাখিদের আবাসস্থল। আগে পাখিদের কিচির-মিচির শব্দে ঘুম ভাঙলেও এখন পাখির দেখা মেলা ভার। অপরিকল্পিতভাবে বন উজাড়সহ ঝোঁপঝাড় বিলীন হওয়ায় শহরের মতো গ্রামও এখন পাখিশূন্য।
পাখির জন্য যখন পাখিপ্রেমীদের নির্মম হাহাকার আর দীর্ঘশ্বাস তখন আলোকবর্তিতার মতোই আশার আলো জাগাল নাটোরের নিভৃত এক গ্রাম সমসখলসি। মানুষ এখানে প্রকৃতির সংরক্ষক। দারুণ আথিতেয়তায় মুগ্ধ পাখিরাও।
জেলা সদরের নলডাঙ্গা উপজেলার নিভৃত এই গ্রামে দেশি পাখির সঙ্গে স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করেছে অতিথি পাখিও।
এখানে বাড়ির পাশের পুকুর পাড়ে আম, কাঁঠাল, শিমুল, তেঁতুল, খেজুর, তালগাছ, বাঁশঝাড়ের দিকে তাকালেই চোখে পড়ে শামুকখোল, পানকৈাড়ি, দোয়েল, ঘুঘুসহ নানান জাতের পাখি। এই গ্রামের মেঠোপথ ধরে হেঁটে যাওয়ার সময় আকাশের দিকে চোখ মেলে তাকালেই দেখা যাবে ঝাঁকে ঝাঁকে পাখি ডানা মেলে উড়ছে ইচ্ছেমতো।
প্রায় বছর পাঁচেক আগে নানা জাতের এই পাখিগুলো বসবাস শুরু করে গ্রামটিতে। তখন থেকেই গ্রামের পাখিপ্রেমী তরুণ জুয়েল রানা গ্রামবাসীকে পাখি রক্ষায় উৎসাহিত করেন।
সেই থেকে গ্রামের সব বয়সী মানুষ পাখিকে ভালবেসে পাখি রক্ষা ও দেখাশোনা থেকে শুরু করে পাখির অভয়ারণ্য হিসাবে ঘোষণা করে গ্রামটিকে। পাখির জন্য গ্রামটিতে দূরদূরান্তের মানুষের যাতায়াত বেড়ে যাওয়ায় খুশি তারা।
রাজশাহী বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মোল্যা রেজাউল করিম জানান, জুয়েল রানা গ্রামবাসিকে পাখি রক্ষায় অনুপ্রাণিত করে সমাসখলসিতে পাখির অবয়ারণ্য গড়ে তুলেছেন। তিনি আরও জানান, নাটোরের সমসখলসি গ্রাম বাংলাদেশের জীববৈচিত্র রক্ষা ও সংরক্ষণে অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত হতে পারে।
জলবায়ু পরিবর্তনসহ নানা কারণে বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে পাখি। পরিবেশের ভারসাম্য ও জীববৈচিত্র রক্ষার জন্য পাখি রক্ষা করা জরুরি। তাইতো শুধু স্থানীয়ভাবেই নয় সরকারিভাবেও সমসখলসি গ্রামকে পাখিদের অভয়াশ্রম ঘোষণার দাবি পাখিপ্রেমীদের।
(দ্য রিপোর্ট/এনএইচ/শাহ/জেএম/ডিসেম্বর ০৯, ২০১৩)