রাজধানীতে সংঘর্ষ, অগ্নিসংযোগ ও ককটেল বিস্ফোরণ
দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক : রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে সংঘর্ষ, ককটেল বিস্ফোরণ ও অগ্নিসংযোগের মধ্য দিয়ে ১৮ দলীয় জোটের ডাকা অবরোধের তৃতীয় দিন সোমবার এবং কাদের মোল্লার মৃত্যুর পরোয়ানা জারির প্রতিবাদে জামায়াতের ডাকা হরতাল পালিত হচ্ছে।
অবরোধ ও হরতালে রাজধানীর সায়েদাবাদ, মহাখালী ও গাবতলী থেকে দূরপাল্লার কোনো বাস ছেড়ে যায়নি। রাজধানীর প্রধান সড়কগুলোতে যাত্রীবাহী বাস চলাচল করছে। এছাড়াও সড়কগুলোতে সিএনজিচালিত অটোরিকশা ও রিকশা চলাচল করছে। সদরঘাটে লঞ্চ চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
বিআইডব্লিউটিএর টিআই হুমায়ুন কবির বলেন, ‘সোমবার সকালে একাধিক লঞ্চ দেশের দক্ষিণাঞ্চলের উদ্দেশ্যে ছেড়ে গেছে।’
পুলিশ জানিয়েছে, দুপুর পৌনে ১টার দিকে যাত্রাবাড়ীর কোনাপাড়ায় ৪-৫টি লেগুনা ও অটোরিকশায় আগুন দিয়েছে হরতাল সমর্থকরা। হরতাল সমর্থনে ২৫ থেকে ৩০ জন একটি মিছিল বের করে প্রধান সড়কে। মহূর্তের মধ্যেই মিছিলকারীরা আগুন জ্বালিয়ে পালিয়ে যায়। পুলিশ ও স্থানীয়রা এসে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। সকাল সাড়ে ১১টায় মালিবাগ ডায়না হোটেলের সামনে ২টি ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটায় দুর্বৃত্তরা। গেন্ডারিয়ায় পিক্যাপ ভ্যানে আগুন দিয়েছে জামাত-শিবিরকর্মীরা। এ সময় তারা একটি মিছিল বের করে এবং কয়েকটি ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটায়।
হরতাল ও অবরোধের সকাল থেকেই শুরু হয় ককটেল বিস্ফোরণ ও যানবাহনে অগ্নিসংযোগ। সকালে কেরানীগঞ্জে তিনটি যাত্রীবাহী বাসে আগুন দেওয়া হয় বলে জানিয়েছে ফায়ার কন্ট্রোল রুমের ডিউটি অফিসার। সকাল ৯টার দিকে যাত্রাবাড়ী ধলপুল ইসলামিয়া হাসপাতাল এলাকায় ৪টি বাস ভাংচুর এবং সায়েদাবাদ বাসস্ট্যান্ড এলাকায় ২টি বাস ভাঙচুর করে শিবিরকর্মীরা। একই সময়ে যাত্রাবাড়ীর শহীদ ফারুক সড়কে পুলিশের সঙ্গে শিবিরের ব্যাপক সংঘর্ষ হয়। এ সময় শিবিরকর্মীরা একটি হিউম্যান হলারে আগুন দেয় এবং কয়েকটি ককটেল বিস্ফোরণ ঘটায়।
যাত্রাবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘পুলিশের ওপর হামলা চালায়। এ সময় পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে কয়েক রাউন্ড রাবার বুলেট ছোড়ে। আহত অবস্থায় এক শিবিরকর্মীকে আটক করে পুলিশ।
সকাল পৌনে ৮টার দিকে শেখ সাহেববাজারের গলিতে স্বেচ্ছাসেবক দলের একটি মিছিল থেকে ২টি ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটানো হয়। ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেন লালবাগ থানার ওসি নুরুল মোত্তাকিন।
সকাল পৌনে ৮টায় শনিড়আখড়া ব্রিজের কাছে রাস্তা অবরোধ করার সময় কয়েকটি ককটেল বিস্ফোরণের চেষ্টা করে দৃর্বৃত্তরা। এ সময় তারা চারটি ককটেল ছোড়ে। এরমধ্যে একটি বিস্ফোরিত হয় এবং পুলিশ বাকি তিনটি ককটেল অবিস্ফোরিত অবস্থায় উদ্ধার করে।
এদিকে গুলশানের ওয়েস্টিন হোটেলের পেছনে ককটেল বিস্ফোরণের সময় সকাল ৯টায় শাহিনুর আক্তার (৩৫) নামে এক নারীকে আটক করে পুলিশ। গুলশান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রফিকুল ইসলাম ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ‘ককটেল বিস্ফোরণের সময় আমরা তাকে হাতেনাতে ধরি। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে।’
সকাল ৯টার দিকে সবুজবাগ থানাধীন মাদারটেক এলাকায় ৫টি ককটেল বিস্ফোরণ ঘটায় জামায়াত-শিবিরকর্মীরা। এ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে সবুজবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বাবুল মিয়া বলেন, ‘ঢাকা মহানগর পূর্ব শাখা শিবিরের সভাপতি রাশেদুল হাসানের নেতৃত্বে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করে শিবিরকর্মীরা। এ সময় তারা পাঁচটি ককটেল বিস্ফোরণ ঘটিয়ে আতঙ্ক সৃষ্টি করে।
পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে এবং একজনকে আটক করে। সকাল সাড়ে ১১টায় মগবাজারের নয়াটোলা এলাকায় শিবিরের মিছিলে ৩টি ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটে।
রাজধানী মধ্য বাড্ডার হল্যান্ড সেন্টারের সামনে ২টি ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটিয়েছে দুর্বৃত্তরা। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সাড়ে ১০টায় ককটেল বিস্ফোরণ ঘটিয়ে পালিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা। তবে বাড্ডা থানা পুলিশ জানায়, এমন কোন ঘটনা তাদের জানা নেই।
(দ্য রিপোর্ট/কেজেএন-এইচএ/শাহ/এমসি/ডিসেম্বর ০৯, ২০১৩)