পেশাভিত্তিক বৈষম্য প্রতিরোধে উপযুক্ত আইনের দাবি
দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক : দলিত ও বঞ্চিত জনগোষ্ঠীর প্রতি বিদ্যমান সামাজিক ও পেশাভিত্তিক বৈষম্য এবং অস্পৃশ্যতা প্রতিরোধে উপযুক্ত আইন প্রণয়নের দাবি জানিয়েছে দলিত ও বঞ্চিত জনগোষ্ঠী।
শাহবাগে জাতীয় জাদুঘরের সামনে মঙ্গলবার দুপুরে বাংলাদেশ দলিত ও বঞ্চিত জনগোষ্ঠী অধিকার আন্দোলন (বিডিইআরএম) ও মানবাধিকার সংগঠন নাগরিক উদ্যোগের যৌথ আয়োজনে অনুষ্ঠিত মানববন্ধন ও সমাবেশ কর্মসূচিতে বক্তারা এ দাবি জানান।
আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবস-২০১৩ উপলক্ষে এই মানববন্ধন ও সমাবেশের আয়োজন করা হয়।
বিডিইআরএমের কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি ও বাংলাদেশ দলিত ও বঞ্চিত নারী ফেডারেশনের সভাপতি মনি রানী দাস বলেন, দেশের ৬৫ লাখ দলিত ও বঞ্চিত জনগোষ্ঠী মানুষ জাত-পাত, বর্ণ ও পেশার কারণে সামাজিক, অর্থনৈতিক বৈষম্যের শিকার হচ্ছে। তারা যে অমানবিক ও মর্যাদাহীন জীবন-যাপনে বাধ্য হচ্ছেন তা দূর করতে হলে সরকারকে অবশ্যই জাত-পাত ও পেশাভিত্তিক বৈষম্য প্রতিরোধে একটি উপযুক্ত আইন প্রণয়ন করতে হবে।
তিনি বলেন, ডিসেম্বর মাস আমাদের বিজয়ের মাস। এই মাসে আমরা পাকিস্তান হানাদার বাহিনীকে পরাস্ত করে স্বাধীনতা অর্জন করি। কিন্তু দুঃখের কথা হলো- আমাদের দলিত ও বঞ্চিত জনগোষ্ঠীর লাখ লাখ মানুষ এই বিজয়ের আনন্দ থেকে আজও বঞ্চিত। তারা বাসস্থান, পানি, স্যানিটেশন সমস্যাসহ চরম দারিদ্র্যের মধ্যেই শুধু নিমজ্জিত নয়, সামাজিক বৈষম্য ও অস্পৃশ্যতার শিকার হয়ে অমানবিক জীবন-যাপন করছেন। তিনি সরকারসহ দেশের আপামর জনসাধারণকে সবচেয়ে দুর্দশাগ্রস্ত এই জনগোষ্ঠীর উন্নয়নে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।
সমাবেশে সংহতি বক্তব্যে বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির ঢাকা মহানগরীর সাধারণ সম্পাদক আবুল হোসাইন বলেন, সকল মানুষেরই সমান অধিকার ও মর্যাদা রয়েছে। দেশের সকল নাগরিকের মানবাধিকার রক্ষার দায়িত্ব রাষ্ট্রের। কাজেই বাংলাদেশের দলিত ও বঞ্চিত জনগোষ্ঠীর মানুষ যে অমানবিক অবস্থা ও বঞ্চনার মধ্যে দিন যাপন করছেন, তাদের মানবাধিকার সুরক্ষা ও সার্বিক উন্নয়নে রাষ্ট্র ও সরকারকে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নিতে হবে।
নাগরিক সংহতির সাধারণ সম্পাদক শরিফুজ্জামান শরিফ বলেন, স্বাধীন দেশের নাগরিক হয়েও দলিত জনগোষ্ঠীর লাখ লাখ মানুষ বঞ্চনা ও অস্পৃশ্যতার শিকার হচ্ছেন। তিনি সরকারসহ দেশের সচেতন সকল নাগরিককে দলিত জনগোষ্ঠীর মানবাধিকার সুরক্ষায় এগিয়ে আসার আহবান জানান।
মানবাধিকার নেত্রী ও লেখিকা অ্যাডভোকেট মুনাজ সুলতানা মুন্নী বলেন, দলিত ও বঞ্চিত জনগোষ্ঠীর প্রায় ৬৫ লাখ মানুষের মর্যাদা ও অধিকার রক্ষায় যা করা দরকার সরকারের তা করতে হবে।
নাগরিক উদ্যোগের প্রকল্প সমন্বয়কারী এবিএম আনিসুজ্জামান বলেন, দেশের একটি বৃহৎ জনগোষ্ঠী জাত-পাত, বর্ণ ও অস্পৃশ্যতার কারণে সামাজিকভাবে ও অর্থনৈতিকভাবে বৈষম্যের শিকার হচ্ছে। রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশের জন্য তা খুবই লজ্জাকর। দলিত জনগোষ্ঠীর প্রতি এই বৈষম্য প্রতিরোধে একটি উপযুক্ত আইন প্রণয়ণের পাশাপাশি তাদের সার্বিক উন্নয়নে রাষ্ট্র এবং এ দেশের জনগণকে এগিয়ে আসতে হবে।
সমাবেশে অন্যান্যর মধ্যে বক্তব্য রাখেন বিডিইআরএমের কেন্দ্রীয় প্রচার ও প্রকাশনা বিষয়ক সম্পাদক ভীমপল্লী ডেভিড রাজু, সংগঠনের ঢাকা মহানগরের সাধারণ সম্পাদক জনি দাস, রংপুর জেলার সভাপতি নৃপেন্দ্রনাথ রায় প্রমুখ।
(দ্যরিপোর্ট/এসআর/নূরু/এমএআর/ডিসেম্বর ১০,২০১৩)