বস্ত্রখাতের তিন সংগঠনের ৮ দফা দাবি
দ্য রিপোর্ট, জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক : চলমান রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে সরকারের কাছে ৮ দফা দাবি জানিয়েছে বস্ত্রখাতের তিন সংগঠন বিজিএমইএ, বিকেএমইএ ও বিটিএমএ।
বুধবার দুপুরে সচিবালয়ে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের সঙ্গে সাক্ষাতকালে তিন সংগঠনের নেতারা এসব দাবি জানান। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান মোঃ গোলাম হোসেন এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
তাদের দাবির প্রেক্ষিতে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘সবগুলো দাবি পূরণ করা হবে এটা বলা যাচ্ছে না। তবে প্রয়োজন যে আছে সেটা স্বীকার করি। সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আলোচনা করে এ মাসের মধ্যেই সরকারের সিদ্ধান্ত জানিয়ে দেওয়া হবে।’
তিন সংগঠনের উল্লেখযোগ্য দাবিসমূহের মধ্যে রয়েছে উৎসকর দশমিক ৮ শতাংশ থেকে কমিয়ে দশমিক ২৫ শতাংশ করা; নতুন বেতন স্কেল অনুযায়ী গার্মেন্টস শ্রমিকদের চার মাসের (নভেম্বর ২০১৩- ফেব্রুয়ারি ২০১৪) বেতন ব্যাংক ব্যবস্থা থেকে প্রদান এবং এই অর্থ একটি সুদবিহীন ব্লকড একাউন্টে রেখে ২ বছর মেয়াদে প্রদানের সুযোগ; সকল ধরনের মেয়াদী ঋণ/প্রকল্প ঋণ/এলটিআর/এমপিআই/ফোর্সড ২ বছরের জন্য সুদবিহীন ব্লকড একাউন্টে রাখা; লোন চলমান পরিস্থিতিতে পোশাক শিল্প খাতের কোনো ব্যাংক ঋণ শ্রেণীবিন্যাসিত না করা; রফতানি আয়ের উপর প্রতি ডলারের বিনিময় হারে ৩ টাকা হারে বিশেষ বোনাস প্রদান, টিটি’র বিপরীতে বিশেষ প্রণোদনা প্রদান ইত্যাদি।
ব্যবসায়ীরা বলেন, চলমান পরিস্থিতে তারা সাময়িক এসব সুবিধা ও সহযোহিতা চাচ্ছেন। বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমতি সাপেক্ষে বেসরকারি ব্যাংকগুলো ব্যবসায়ীদের সহযোগিতা করতে সম্মত হয়েছে। এ প্রেক্ষিতে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর কাছেও তারা এ ধরনের সুযোগ-সুবিধা চান।
এসব দাবির মধ্যে ডলারের বিনিময় মূল্যে বোনাস প্রদানের বিষয়ে অর্থমন্ত্রী বলেন, “এটা দেওয়া সম্ভব হবে না। অন্যদিকে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোই ব্যবসায়ীদের সর্বাগ্রে সুযোগ-সুবিধা দিয়ে থাকে। অন্যান্য ব্যাংক রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোকে অনুসরণ করে’- বলে মন্তব্য করেন তিনি।
সাক্ষাতকালে এফবিসিসিআই সভাপতি কাজী আকরাম উদ্দিন আহমেদ, বিজিএমইএ সভাপতি মোঃ আতিকুল ইসলাম, বিকেএমইএ সভাপতি সেলিম ওসমান, বিটিএমএ সভাপতি জাহাঙ্গীর আলামিন, সাবেক এফবিসিআই সভাপতি এ কে আজাদ ও আনিসুল হকসহ বিজিএমইএ’র সাবেক সভাপতিরা উপস্থিত ছিলেন।
বিজিএমইএ সভাপতি মোঃ আতিকুল ইসলাম বলেন, ‘চলমান অবস্থার জন্য ব্যবসায়ীরা দায়ী নয়। অসুস্থ রাজনীতির কারণে সুস্থ কারখানাগুলো অসুস্থ হয়ে পড়ছে। আমাদের পিঠ দেয়ালে ঠেকে গেছে। আমরা তিলে তিলে ক্ষয় হয়ে যাচ্ছি।’
তিনি বলেন, অন্যদিকে ইউরোপ ও আমেরিকার অধিকাংশ ক্রেতা পোশাকের দাম কমিয়ে দিয়েছেন। পাশাপাশি চলমান পরিস্থিতিতে ক্রেতারা অন্যদিকে চলে যেতে পারেন। সম্প্রতি বিদেশি ক্রেতাদের সমন্বিত সংগঠন ‘বায়ারস ফোরাম’ থেকেও ম্যাসেজ পাঠানো হয়েছে। ক্রেতারা সময়মতো পণ্য সরবরাহের নিশ্চয়তা চান।
ব্যবসায়ীদের দাবিসমূহের মধ্যে ব্যবসা ছেড়ে দেয়ার একটা ‘এক্সিট প্ল্যান’ও তারা চেয়েছেন সরকারের কাছে।
এ বিষয়ে অর্থমন্ত্রী বলেন, কিছু খসড়া করা যেতে পারে। কিন্তু কোনো আইন করা আমাদের পক্ষে সম্ভব নয়।
বৈঠকের শুরুতে চলমান পরিস্থিতিতে ব্যবসায়ীদের উদ্বেগ প্রসঙ্গে অর্থমন্ত্রী বলেন, আগামীতে যে সরকারই আসুক, আমার মতে, আইন করে হরতাল-অবরোধ বন্ধ করে দেওয়া উচিত। আগামীতে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এলে তিনি এ প্রস্তাব দেবেন।
অর্থমন্ত্রীর এ বক্তব্যের জের ধরে এফবিসিসিআই’র সাবেক সভাপতি এ কে আজাদ বলেন, এ বিষয়ে ব্যবসায়ীরা তার সঙ্গে আছে।
(দ্য রিপোর্ট/ এসআর /নূরু/এমডি / ডিসেম্বর ১১, ২০১৩)