যশোর সংবাদদাতা : জেলা ছাত্রদলের হরতাল ও ১৮ দলের অবরোধে স্থবির হয়ে পড়েছে যশোর ও এর আশপাশের এলাকা। যশোর সদর উপজেলার রূপদিয়ায় যশোর-খুলনা সড়কের প্রায় এক কিলোমিটার এলাকার শতাধিক গাছ কেটে ফেলেছে অবরোধকারীরা। এ ছাড়া সড়কের ওপর ইটপাটকেল ফেলে ও আগুন জ্বালিয়ে যানচলাচলে বাধা সৃষ্টি করে তারা। কাটা গাছের মধ্যে মেহগনি, রেইন্ট্রি ও কড়াই রয়েছে।

যশোর কোতোয়ালি থানার ওসি এমদাদুল হক শেখ জানান, বুধবার সকাল থেকেই রূপদিয়া এলাকায় জামায়াত-শিবিরের নেতাকর্মীর গাছ কেটে তা রাস্তায় দিয়ে অবরোধ শুরু করে। গাছ ও ইটপাটকেল ফেলে তারা রূপদিয়ার সম্মুখভাগ যশোর ও পেছনে বসুন্দিয়ার দিকে কয়েক কিলোমিটার এলাকা অবরোধ করে রেখেছে।

তিনি আরও জানান, পুলিশ সদস্যরা রাস্তা পরিষ্কারের চেষ্টা করছে। তবে এ কাজ শেষ হতে পুরোদিন লেগে যাবে বলে তিনি জানান। এ ঘটনায় কাউকে আটক করা যায়নি বলে জানান ওসি।

যশোর বনবিভাগের উপ-পরিচালক জহুরুল আলম জানান, যে এলাকায় গাছ কাটা হয়েছে সেখানে বনবিভাগের পাশাপাশি জেলা পরিষদেরও গাছ রয়েছে। বনবিভাগের কি পরিমাণ গাছের ক্ষতি হয়েছে তা নিশ্চিত হতে ওই এলাকায় লোক পাঠানো হয়েছে। রিপোর্ট পাওয়ার পর সামাজিক বনায়ন আইনের আওতায় জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সঞ্জয় কুমার বণিক জানান, অবরোধের কারণে ঘটনাস্থলে লোক পাঠানো সম্ভব হয়নি। তাদের গাছ ক্ষতিগ্রস্ত হলে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

হরতালের সমর্থনে বুধবার সকালে শহরের প্রাণকেন্দ্র দড়াটানায় অবস্থান নিয়ে পিকেটিং করে বিএনপি ও ছাত্রদল নেতাকর্মীরা। পরে সেখান থেকে হরতালের সমর্থনে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের হয়। মিছিলটি হাসপাতাল মোড় থেকে শুরু হয়ে দড়াটানা, গাড়িখানা, চৌরাস্তা, কাপুড়িয়াপট্টি হয়ে জজকোর্ট মোড়ে গিয়ে শেষ হয়। সেখানে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে বক্তৃতা করেন জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট সৈয়দ সাবেরুল হক সাবু, সাংগঠনিক সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন খোকন, নগর বিএনপির সভাপতি ও পৌর মেয়র মারুফুল ইসলাম, জেলা ছাত্রদলের সভাপতি রবিউল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক নাজমুল ইসলাম বাবুল প্রমুখ। সভা শেষে নেতাকর্মীরা আবারো পিকেটিং শুরু করে।

হরতালের পাশাপাশি যশোরের বিভিন্ন স্থানে অবরোধ পালিত হয়েছে। যশোর-খুলনা মহাসড়কের রূপদিয়া অবোরধ কর্মসূচি পালন করছে জামায়াত-শিবির কর্মীরা। তারা রূপদিয়া থেকে বসুন্দিয়া পর্যন্ত এক কিলোমিটার এলাকার রাস্তার দুপাশের গাছ কেটে রাস্তায় দিয়ে ও আগুন জ্বালিয়ে অবরোধ কর্মসূচি চালাচ্ছে। এছাড়া আশপাশের ইটভাটা থেকে বিপুল পরিামণ ইটপাটকেল এনে রাস্তার ওপর ফেলে রেখেছে। এ ছাড়া ট্রেন লাইনের ওপর আগুন জ্বালিয়েও রেলচলাচলে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টির চেষ্টা করে অবরোধকারীরা।

(দ্য রিপোর্ট/জেএম/নূরু/এএস/ডিসেম্বর ১১, ২০১৩)