জানুয়ারিতে আইপিও, ইসলামী ও বেঞ্চমার্ক সূচক চালু করবে সিএসই
নূরুজ্জামান তানিম, দ্য রিপোর্ট : আইপিও, ইসলামী ও বেঞ্চমার্ক নামে তিনটি নতুন সূচক চালু করতে যাচ্ছে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ (সিএসই)। ডিমিউচ্যুয়ালাইজেশন পরবর্তী নতুন পর্ষদ গঠনের আগেই অর্থাৎ আগামী জানুয়ারির মধ্যে এ তিন সূচক চালু করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ভারতের ন্যাশনাল স্টক এক্সচেঞ্জের (এনএসই) সহায়তায় এসব সূচক চালু করা হবে বলে সিএসই কর্তৃপক্ষ নিশ্চিত করেছে।
ইতোমধ্যে অভ্যন্তরীনভাবে ব্রোকারেজ হাউসগুলোতে পরীক্ষামূলক আইপিও ইনডেক্স চালু রয়েছে। এছাড়া ইসলামী ইনডেক্স চালু করার জন্য এনএসইকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের(বিএসইসি) অনুমোদিত কোনও শরীয়াহ্ বোর্ড না থাকায় এনএসইকে এ দায়িত্ব দেওয়া হয়। আর বর্তমানে চালু থাকা সিএসইএক্স সূচককে বেঞ্চমার্ক সূচকে রূপান্তর করা হবে। এটা রূপান্তরের আগে নতুন সূচকের জন্য কি কি উপাদান প্রয়োজন তা জানাবে এনএসই। এ বিষয়ে গত ২৫ আগস্ট এনএসই ও সিএসইর মধ্যে দ্বিপাক্ষিক চুক্তি হয়েছে।
বিএসইসির অনুমোদনক্রমেই এসব সূচক চালু করা হবে। সূচক তিনটি দ্রুত চালু করার লক্ষ্যে সব রকম প্রস্তুতি চলছে। এরই ধারাবাহিকতায় বুধবার বিকেলে এনএসইর সঙ্গে সিএসই কর্তৃপক্ষের আলোচনা হয়েছে। সূচকগুলো চালুর বিষয়ে এনএসইর বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দিয়েছে সিএসই।
সিএসই সূত্রে জানা গেছে, বিনিয়োগের সুবিধার্থে কোম্পানির কর্মক্ষমতা, দর ওঠানামা ও গতিবিধি বোঝার লক্ষ্যে আইপিও ইনডেক্স গঠনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এই ইনডেক্স দেখে আইপিওতে আসা কোম্পানিগুলোর বিষয়ে বিস্তারিত জানতে পারবেন বিনিয়োগকারীরা। এ ইনডেক্সের নামকরণ করা হয়েছে- সিএসই আইপিওএক্স।
এ সূচকের ভিত্তি পয়েন্ট হবে ১ হাজার এবং ২০১৩ সালের ৩১ জানুয়ারিকে ভিত্তি বছর ধরা হবে। ইতোমধ্যে এ ইনডেক্সের গুরুত্ব, বাস্তবমুখীতার বিষয়ে সুনির্দিষ্ট প্রস্তাবনা নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসিতে জমা দিয়েছে সিএসই।
আইপিওতে আসা কোম্পানিগুলো প্রথম দুই বছর এ সূচকে অন্তর্ভুক্ত থাকবে। সূচকটি বছরে দু’বার পর্যালোচনা করা হবে। এটি রিয়েল টাইম বা বাস্তব সময়ের ওপর ভিত্তি করে গণনা করা হবে। এছাড়া প্রতিটি লেনদেন শূন্য সময় থেকে আপডেট করা হবে এবং অনলাইন ট্রেডিং সিস্টেমের মাধ্যমে সিএসইর ওয়েবসাইটে সব ধরণের তথ্য প্রচারিত হবে। আর ৩ মিনিট পর পর ওয়েবসাইটে তথ্য হালনাগাদ করা হবে। ইনডেক্স ম্যানেজমেন্ট কমিটি আইপিও সূচক গঠনের বিষয়ে সম্পূর্ণ দায়ভার বহন করবে।
আইপিও সূচক গণনার সূত্র- (ফ্রি-ফ্লোট মার্কেট ক্যাপিটালাইজেশন অব ইনডেক্স কন্সটিটুয়েন্ট ভাগ বেজ মার্কেট ক্যাপিটালাইজেশন) গুণণ বেজ ইনডেক্স ভ্যালু।
এদিকে ইসলামী বিশেষ বিনিয়োগ গোষ্ঠীর স্বার্থে ইসলামী সূচক গঠনের উদ্যোগ নিয়েছে সিএসই।
সিএসই কর্তৃপক্ষ জানায়, বাংলাদেশে একটি বিশেষ ইসলামী বিনিয়োগ গোষ্ঠী পুঁজিবাজারকে ইসলামিক ইনন্ডেক্সের উপর ভিত্তি করে দেখতে চায়। এটা তাদের দীর্ঘ দিনের দাবি। এই ইনডেক্স চালু হলে তারা সহজে সিদ্ধান্ত নিতে পারবেন। কারণ মোট ইনডেক্স বা সুনির্দিষ্ট ইনডেক্স দেখে তারা শরীয়াহভিত্তিক লেনদেন বা বিনিয়োগ করতে পারেন না। ইসলামী বিনিয়োগ গোষ্ঠী ধারণকৃত পোর্টফোলিওর বাইরে বিনিয়োগও করেন না। তাই এ সূচক বিশেষ বিনিয়োগ গোষ্ঠীর জন্য সহায়ক হবে।
এ বিষয়ে সিএসইর প্রধান নির্বাহী কর্মকমর্তা (সিইও) সৈয়দ সাজিদ হোসেন দ্য রিপোর্টকে বলেন, ‘২০১৪ সালের জানুয়ারির মধ্যে আমরা তিনটি নতুন সূচক চালু করার চেষ্টা করব। এ বিষয়ে ইতোমধ্যে পরিচালনা পর্ষদের অনুমোদন নিয়েছি। ভারতের এনএসইর সহায়তায় সূচকগুলো চালু করা হবে। ডিমিউচ্যুয়ালাইজেশন পরবর্তী নতুন পর্ষদ গঠনের আগেই এ তিন সূচক চালু করার প্রচেষ্টা চলছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আইপিও সূচকের জন্য আমরা বিএসইসির কাছে আবেদন জানিয়েছি। ওই আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আইপিও ইনডেক্সের গুরুত্ব, বাস্তবমুখীতা, বাস্তব উদাহারণ এবং ইনডেক্স কনসট্রাকশন প্রসেস সম্পর্কে বিস্তারিত কাগজপত্র দাখিলের নির্দেশনা দেয় বিএসইসি। যার প্রেক্ষিতে এ সংক্রান্ত প্রস্তাব বিএসইসিতে দাখিল করেছি। আমরা আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন কনসালটেন্ট বা পরামর্শক কোম্পানির শরীয়াহ্ বোর্ড দিয়ে ইসলামী ইনডেক্স গঠনের সিদ্ধান্ত নিয়েছি। শরীয়াহ বোর্ড ইসলামিক বিষয়গুলো অর্থাৎ কোম্পানিগুলো ইসলামী আইনকানুন মেনে চলে কি না তা যথাযথভাবে দেখবে।’
(দ্য রিপোর্ট/এনটি/এইচকে/ডিসেম্বর ১১, ২০১৩)