মুহম্মদ আকবর , দ্য রিপোর্ট : মানবতা বিরোধী অপরাধে অভিযুক্ত জামায়াত নেতা আব্দুল কাদের মোল্লার ফাঁসি কার্যকর না করা নিয়ে দেশ-বিদেশে বিভিন্ন মহলে চলছে নানা রকম আলোচনা-সমালোচনা। বিভিন্ন পেশার মানুষ এ বিষয়টিকে নিয়ে যেমন নিজের মতো মন্তব্য করছেন, তেমনি সাংস্কৃতিক অঙ্গনেও রয়েছে ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া। তাদের ভাষ্য, জনমনে হতাশা ও সন্দেহ সৃষ্টি হয় এমন বক্তব্য ও কর্মতৎপরতা কারো পক্ষ থেকে করা উচিত নয়। এ ব্যাপারে নাট্যব্যক্তিত্ব মামুনুর রশীদ দ্য রিপোর্টকে বলেন,আদালতের এমন কর্মকাণ্ডে বিয়য়টা টোটালই একটা কনফিউশনে চলে গেল। এমন একটা অবস্থা সম্পর্কে আগে থেকে সতর্ক হয়ে রায় এবং নেতাকর্মীদের বক্তব্য প্রদান করা উচিত ছিল। এখন জনগণ এক ধরনের ডিপ্রেশনের মধ্যে পড়ে গেল। এমন অবস্থা থেকে উত্তরণ জরুরি।’

ইন্টারন্যাশনাল থিয়েটার ইনস্টিটিউটের সভাপতি রামেন্দু মজুমদারেরভাষ্য অন্য রকম। তিনি বলেন, ‘আইনের অনেক ফাঁক ফোকর রয়েছে। একজন সাধারণ মানুষ হয়ে অনেক বিষয়েই তো জানি না। তাই এ ব্যাপারে আমার কোনো বক্তব্য নাই। প্রত্যাশা রাখি আইনানুযায়ী বিচার চলবে এবং শিগগিরই দেশে একটা সুশৃঙ্খল অবস্থা বিরাজ করবে।’

সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সহ-সভাপতি গোলাম কুদ্দুছ বলেন,‘আইনের যথাযথ ব্যাখ্যার বিভ্রান্তির কারণেই এটা হয়েছে। আমরা আশা করি সর্বোচ্চ আদালত সুষ্ঠু প্রক্রিয়ায় আইনের যথাযথ প্রয়োগে বিচার কার্য সম্পাদনে জনমনের হতাশা দূর করবে।’

তীব্র ক্ষোভ নিয়ে কবি নির্মলেন্দু গুণ বলেন,‘এ ধরনের সিদ্ধান্ত জনমনে হাসির খোরাক জুগিয়েছে। একটা অপরিপক্ব অপরিণামদর্শী সিদ্ধান্ত বলা যায়। কেন? রায় প্রদানের সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের কী এ পরিণাম সম্পর্কে ধারণা থাকার দরকার ছিলো না? আইন ও আদালত সম্পর্কে একধরনের সমন্বয়হীনতার ফলেই এটা হয়েছে বলে আমি মনে করি।’

আদালতের কার্যক্রম পরিচালনার প্রতি গুরুতারোপ করে রবীন্দ্র গবেষক আহমদ রফিক বলেন,সব কাজের প্রতি সিরিয়াসনেস থাকা উচিত আর সর্বোচ্চ আদালতের বেলায় তো কথা-ই নেই। দূরদর্শিতার অভাব থাকলে ভবিষ্যতে মানুষ সর্বোচ্চ আদালতের প্রতি আস্থা হারিয়ে ফেলবে। মনে রাখতে হবে জনগণের শেষ আশ্রয় আইন ও আদালত। ভুল শুধরে অচিরেই জনমনের সঙ্কা দূর করে সুষ্ঠু আইন মোতাবেক রায় প্রদান করা হোক।’

(দ্য রিপোর্ট/এমএ/এইচএসএম/ডিসেম্বর ১১, ২০১৩)