মুন্সীগঞ্জ সংবাদদাতা : বাংলাদেশের প্রধান অর্থকরী ফসল হচ্ছে আলু। মুন্সীগঞ্জে এখন আলু রোপণের ধুম পড়েছে। জেলার সর্বত্র আলুর বীজ বপনে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন অর্ধলক্ষাধি চাষি। গেল ৪ বছরের লোকসান পুষিয়ে নিতে এবার আলু রোপণে ব্যস্ত চাষিরা।

দেশের মোট উৎপাদনের প্রায় ৬০ ভাগ আলু উৎপন্ন হয় মুন্সীগঞ্জে। এ জেলার কৃষকরা সব পুঁজি খাটান আলু চাষে। গতবার আলুতে লোকসান হলেও আগ্রহে ভাটা পড়তে দেখা যাচ্ছে না চাষিদের চোখে-মুখে। তাদেরও বিশ্বাস এবার আলুতে ভালো দাম পাওয়া যাবে। তবে সরকারিভাবে ভর্তুকি দিলে লোকসানের ঘানি টানতে হতো না আলুচাষিদের। তাদের দাবি, সরকার সব ধরনের সারের দাম কমালে উৎপাদন খরচ কম পড়ত।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর সূত্রমতে, এ জেলার কৃষকরা আলু চাষে প্রচুর সার ও কীটনাশক ব্যবহার করায় উৎপাদন খরচ বেশি পড়ে। এবার মুন্সীগঞ্জে আলু আবাদেরর লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে ৩৬ হাজার ৯৮২ হেক্টর জমি ও উৎপাদনে লক্ষ্যমাত্রা প্রতি হেক্টর জমিতে ৩৩ মেট্র্রিক টন, যা জাতীয় উৎপাদনের প্রায় দ্বিগুণ। গতবছর আলু চাষ করা হয়েছিল ৩৭ হাজার ৩৩০ হেক্টর জমিতে ও আলু উৎপাদন হয়েছিল ১২ লাখ ৫০ হাজার ৭০৪ মেট্রিক টন। এবার বিএডিসির আলুবীজের দাম প্রতিকেজিতে ১০ টাকা কমানো হয়েছে। ইউরিয়া সার কেজিপ্রতি ৪ টাকা কমানো হলেও টিএসপি এবং এমওপি সারের দাম কমানো হয়নি।

এ জেলায় ডায়মন্ড আলুবীজের চাহিদা বেশি। ৯৮ ভাগ আলুবীজ বপন করা হয় ডায়মন্ড জাতের। প্রায় ৮০ ভাগ আলুবীজ আসে কোল্ড স্টোরেজে সংরক্ষিত আলুবীজ থেকে। বাকি আলুবীজ আসে হল্যান্ডে থেকে আমদানিকৃত বাক্সজাত ও বিএডিসির আলুবীজ থেকে। এবার বিএডিসির এ-গ্র্রেড ও বি-গ্রেডের আলুবীজ কেজি প্তি ৮-১০ টাকা কমানো হয়েছে। এবার হল্যান্ড থেকে আমদানিকৃত বাক্সজাত আলুবীজের দাম অনেক চড়া, ৫০ কেজি বাক্সের দাম সাড়ে ১১ থেকে ১২ হাজার টাকা। গতবার এর দাম ছিল ৫ থেকে ৬ হাজার টাকা।

মুন্সীগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ হাবিবুর রহমান জানান, মুন্সীগঞ্জে দেশের সবচেয়ে বেশি আলু উৎপাদন হয়। গত বছর আলুতে কৃষকদের প্রচুর লোকসান হলেও এবার কৃষকরা আগ্রহ হারাননি। এ অঞ্চলের কৃষকরা আলু চাষে অনেক অভিজ্ঞ। সঠিক মাপে জমিতে সার ও কীটনাশক প্রয়োগ করা হলে উৎপাদন খরচ কম হবে ও এতে লোকসান হওয়ার আশঙ্কা থাকে না।

(দ্য রিপোর্ট/এমএএস/এফএস/এএস/ডিসেম্বর ১২, ২০১৩)