লক্ষ্মীপুর সংবাদদাতা : লক্ষ্মীপুর জেলা শহরে অবরোধকারীদের সঙ্গে র‌্যাব-বিজিবি ও পুলিশের দফায় দফায় সংঘর্ষে দুজন নিহত হয়েছেন। নিহত দুজন হলেন জেলা যুবদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ইকবাল মাহমুদ জুয়েল ও শিবিরকর্মী মাহমুদ। এতে  জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সাহাব উদ্দিন সাবুসহ ২৫ জন গুলিবিদ্ধ হয়েছেন বলে দলের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার সকালে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনার প্রতিবাদে ১৮ দল শনিবার সকাল-সন্ধ্যা হরতালের ডাক দিয়েছে। অবরোধকারীরা শহরে ৩টি প্রাইভেটকার ও মাইক্রোবাসে আগুন ধরিয়ে দেয়। তারা সোনালী ব্যাংকসহ ৫টি ব্যাবসাপ্রতিষ্ঠান ভাঙচুর চালায়।

নিহত যুবদল নেতা জুয়েল শহরের সমসেরাবাদ এলাকার হাসপাতাল সড়কের নূরুল ইসলামের ছেলে। নিহত শিবিরকর্মী মাহমুদের ঠিকানা জানা যায়নি। মাহমুদের মৃতদেহ পাওয়া যায়নি। পরিবারের সদস্যদের দাবি, র‌্যাব সদস্যরা মৃতদেহ গুম করে রেখেছে। আহতদের লক্ষ্মীপুর সদর হাসপাতালসহ বিভিন্ন ক্লিনিকে ভর্তি করা হয়েছে।

সকাল ৭টার দিকে র‌্যাবের একটি দল জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সাহাবুদ্দিন সাবুর বাসায় অভিযান চালায়। সাবুকে আটক করার চেষ্টা চালালে পরিবারের সদস্যরা বাধা দেন। র‌্যাব তার বাসায় তল্লাশির নামে ভাঙচুর, তিনটি প্রাইভেটকার ও মাইক্রোবাসে আগুল ধরিয়ে দেয়।

এরপর র‌্যাব সদস্যরা শহরের চকবাজারের দিকে যাওয়ার সময় অবরোধের সমর্থনে বিএনপির একটি মিছিল দেখেই গুলি চালায়। এতে জেলা যুবদল নেতা ইকবাল মাহমুদ জুয়েল ও কলেজ ছাত্রদল নেতা নেছার উদ্দিনসহ চারজন গুলি বিদ্ধ হন। ঘটনার পর র‌্যাব গুলিবিদ্ধ জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সাহাবুদ্দিন সাবুসহ চারজনকে আটক করে।

এ ঘটনার খবর শহরে ছড়িয়ে পড়লে বিএনপি ও জামায়াতসহ অবরোধকারীরা ক্ষুব্ধ হয়ে শহরে সোনালী ব্যাংকসহ ৫টি ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে ভাঙচুর চালায়। এ সময় র‌্যাব সদস্যরা তাদের ধাওয়া দিলে শুরু হয় ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া ও গুলিবিনিময়। এক পর্যায়ে অবরোধকারীরা বাগবাড়ী, ঝুমুর ও এলজিইডি এলাকায় র‌্যাব সদস্যদের অবরুদ্ধ করে ফেললে র‌্যাব এলোপাতাড়ি গুলি চালায়। এতে জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সাহাব উদ্দিন সাবু, লক্ষ্মীপুর সরকারি কলেজ ছাত্রদলের সাংস্কৃতিক সম্পাদক নেছার উদ্দিন ও শিবিরকর্মী মাহমুদসহ ২১ জন গুলি বিদ্ধ হন। এদের মধ্যে ৫ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। পরে সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শিবিরকর্মী মাহমুদ মারা যান বলে দলীয় সূত্রে নিশ্চিত করা হয়। এ ঘটনার প্রতিবাদে ১৮ দল লক্ষ্মীপুরে শনিবার সকাল-সন্ধ্যা হরতালের ডাক দিয়েছে। শহরজুড়ে পরিস্থিতি এখন থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে।

জেলা যুবদলের সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ রশিদুল হাসান লিংকন দাবি করেন, র‌্যাব ও পুলিশের গুলিতে জেলা যুবদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ইকবাল মাহমুদ জুয়েল ও শিবিরকর্মী মাহমুদ নিহত হয়েছেন।

সদর থানার ওসি ইকবাল হোসেন জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদকসহ চারজন আটক হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত বলেন, পরিস্থিতি এখন শান্ত রয়েছে। শহরজুড়ে আইশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সতর্ক অবস্থানে রয়েছে।

(দ্য রিপোর্ট/এমআরএস/এএস/ডিসেম্বর ১২, ২০১৩)