ঠাকুরগাঁও সংবাদদাতা : ভরা রবি মৌসুমে ঠাকুরগাঁওয়ে সারের তীব্র সঙ্কট দেখা দিয়েছে। সারের জন্য হাহাকার পড়েছে কৃষকের মধ্যে। দোকানে দোকানে ঘুরেও সার পাচ্ছেন না তারা। যেটুকু পাওয়া যায় তাও চড়া দামে কিনতে হচ্ছে কৃষকদের।

জমি তৈরি করে ফেলে রেখেছেন অনেকে। শুধু সারের অভাবে গম, আলু, ভুট্টাসহ শীতকালীন ফসল চাষ করতে পারছেন না তারা। গত ১৫-২০ দিন ধরে এই সঙ্কট তীব্র হয়ে দেখা দিয়েছে।

বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার দুওসুও গ্রামের বিশ্বনাথ সাহা সারের জন্য জেলা সদরের মাদারগঞ্জ বিএডিসির সারের গুদামে এসেছিলেন। কিন্তু সেখানে সার না পেয়ে খালি হাতে ফিরতে হয়েছে। তার মতো সদর উপজেলার ঢোলারহাট গ্রামের রফিকুল ইসলামও একই দুর্ভোগের শিকার হন। রাণীশংকৈল উপজেলার ধর্মগড় ইউনিয়নের ভরনিয়া গ্রামের চাষি শরিফ উদ্দিন শরিফ অভিযোগ করে বলেন, তিনি গম আবাদের জন্য দুই বস্তা পটাশ ৯০০ টাকা ও টিএসপি ১৫০০ টাকা দরে কিনেছেন।

চড়া দামে সার বিক্রি প্রসঙ্গে বিএডিসির সার ডিলার সমিতির সভাপতি এনামুল হক সরকার বলেন, রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা, চাঁদাবাজি ও পরিবহন খরচ বেড়ে যাওয়ায় হয়তো কেউ কেউ খেয়াল-খুশি মতো বিক্রি করছে।

জানা গেছে, কৃষক পর্যায়ে এ জেলায় সার ও বীজ সরবরাহ নিশ্চিত করতে ৩ পৌরসভা ও ৫১ ইউনিয়নে বিসিআইসির ৫৮ ও বিএডিসির ১৪৩ ডিলার নিযুক্ত করা হয়েছে। জেলায় সার না আসায় বিএডিসির ও বাফার গুদামে সার মজুদশূন্য হয়ে পড়েছে বলে জানান বিএডিসির গুদাম ইনচার্জ রুহুল আমিন।

তিনি আরও বলেন, অবরোধ-হরতালের কারণে সারবোঝাই গাড়ি জেলায় আসতে পারচ্ছে না। গাড়ি এলেই চাহিদা মেটানো সম্ভব হবে।

কৃষি বিভাগ জানায়, এবার ৫৭ হাজার ৩২৫ হেক্টর জমিতে গম, ১০ হাজার ৫১৫ হেক্টরের সরিষা, ২২ হাজার ৫৭৯ হেক্টরে আলু ও ২১ হাজার ৪৯৮ হেক্টরে ভুট্টা আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ধার্য করা হয়েছে। কিন্তু সার ও বীজ সঙ্কটের কারণে সিকিভাগ জমিতে চাষ করা সম্ভব হয়নি। অথচ গতবার এ সময়ে অর্ধেকেরও বেশি জমিতে আবাদ হয়েছিল।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের শস্য বিশেষজ্ঞ জাহেদুল ইসলাম বলেন, সময়মতো সার-সেচ দিতে না পারলে কাঙ্ক্ষিত ফসল ফলানো সম্ভব নয়।

সার ও ডিজেল সরবরাহ প্রসঙ্গে জেলা প্রশাসক ও সার-বীজ মনিটরিং কমিটির সভাপতি মুকেশ চন্দ্র বিশ্বাস বলেন, সঙ্কট নেই। কেউ বেশি দামে বিক্রি করলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

(দ্য রিপোর্ট/এনএইচ/এফএস/শাহ/এএস/ডিসেম্বর ১২, ২০১৩)