খুলনার সঙ্গে সারাদেশের রেল যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন
যশোর সংবাদদাতা : জেলা সদর উপজেলার সিঙ্গিয়ায় রেললাইনের পাত উপড়ে ফেলে এবং গাছের গুড়ি ও আগুন জ্বালিয়ে অবরোধ করায় খুলনার সঙ্গে সারাদেশের রেল যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে।
জামায়াত-শিবিরকর্মীরা বৃস্পতিবার দুপুর ২টার পর বড় বড় গাছের গুঁড়ি রেললাইনের ওপর ফেলে অবস্থান নেয়। সন্ধ্যার পর তারা রেলের পাত উপড়ে ফেলে।
জামায়াত নেতা আব্দুল কাদের মোল্লার ফাঁসির রায়ের রিভিউ আবেদন খারিজ করে দেওয়ার খবর পাওয়ার পর জামায়াত-শিবিরকর্মীরা এ ঘটনা ঘটায়।
যশোর সহকারী পুলিশ সুপার রেশমা শারমীন দ্য রিপোর্টকে জানান, খবর পেয়ে দুপুর ৩টার দিকে পুলিশ, র্যাব ও বিজিবির একটি যৌথ দল ঘটনাস্থলের উদ্দেশে রওয়ানা হয়। কিন্তু রূপদিয়ায় এসে দেখে রাস্তার উপর অবরোধকারীরা গাছ ফেল রেখেছে। যে কারণে তারা সিঙ্গিয়া পর্যন্ত পৌঁছাতে পারেনি।
বৃস্পতিবার সন্ধ্যায় তিনি আরো জানান, রেললাইন এখনো অবরোধকারীদের দখলে রয়েছে।
যশোর রেলওয়ে জংশনের স্টেশন মাস্টার মানিক চন্দ্র সরকার দ্য রিপোর্টকে জানান, দুপুরের পর যশোর সিঙ্গিয়া স্টেশনের অদূরে জামায়াত-শিবিরের শত শত কর্মী রেললাইনের উপর বড় বড় গাছের গুঁড়ি এনে ফেলে। এরপর গুঁড়িতে আগুন জ্বালিয়ে বিক্ষোভ প্রদর্শন করে। ফলে যশোরের নওয়াপাড়া স্টেশনে রাজশাহীগামী মহানন্দা এক্সপ্রেস ও যশোর রেলওয়ে জংশনে বেনাপোল কমিউটার ট্রেন আটকে আছে।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় তিনি আরো জানান, এখনও অবরোধকারীদের হটানো সম্ভব হয়নি। ফলে সারাদেশের সঙ্গে খুলনার ট্রেন যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে। কখন যোগাযোগ স্বাভাবিক হবে তা নিশ্চিত করে বলতে পারেননি তিনি।
সন্ধ্যার পর রেলের পাত উপড়ে ফেলার বিষয়ে তার কাছে জানতে চাইলে তিনি কোন উত্তর না দিয়ে ফোন রেখে দেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, আব্দুল কাদের মোল্লার ফাঁসির রায়ের রিভিউ আবেদন খারিজ করে দেওয়ার খবর পেয়ে বৃহস্পতিবার দুপুর ২টার দিকে জামায়াত-শিবিরের কর্মীরা বিক্ষুব্ধ হয়ে রাস্তায় নেমে আসে। তাদের সঙ্গে ১৮ দলীয় জোটের নেতাকর্মীসহ স্থানীয় মানুষও যোগ দেয়। এ সময় উত্তেজিত জনতার একাংশ যশোর-খুলনা রুটের সিঙ্গিয়া স্টেশনের কাছে রেললাইনে গাছের গুঁড়ি ফেলে অবরোধ করে। সন্ধ্যার পর তারা রেলের পাত উপড়ে ফেলে।
এদিকে আব্দুল কাদের মোল্লার রিভিউ আবেদন খারিজ করার প্রতিবাদে যশোরে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে জামায়াতে ইসলামী। বৃহস্পতিবার বিকেলে শহরের হোমিও প্যাথিক মেডিকেল কলেজ এলাকা থেকে বিশাল বিক্ষোভ মিছিল শুরু হয়।
এ সময় আতঙ্কে শহরের আরএন রোডের সমস্ত দোকানপাট বন্ধ করে দেন ব্যবসায়ীরা।
মিছিলটি খুলনা বাসস্ট্যান্ড জামে মসজিদ এলাকায় গিয়ে শেষ হয়। সেখানে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ জামায়াত নেতৃবৃন্দ বক্তৃতা করেন।
(দ্য রিপোর্ট/জেএম/নূরু/এমএইচও/ডিসেম্বর ১২, ২০১৩)