ইসহাক ফারুকী, দ্য রিপোর্ট : রাজনৈতিক অস্থিরতায় হুমকির মুখে পড়েছে চলচ্চিত্র ব্যবসা। চলচ্চিত্র বুকিং দেওয়া, সিনেমা হলে প্রদর্শন সব কিছুতেই যেন লোকসান। লাভের মুখ তো দেখছেই না। ব্যবস্থাপনা খরচ উঠাতেও হিমসিম খেতে হচ্ছে তাদের। এ সমস্যার সমাধানে সরকার ও বিরোধী দলের প্রতি দাবি জানিয়েছেন তারা।

কথায় আছে, ভাগের মা গঙ্গা পায় না। সরকার ও বিরোধী দলের পরস্পরবিরোধী অবস্থানের ফলে ভাগ হয়ে যাচ্ছে জনমত। অন্য সকলের মতো চলচ্চিত্র ব্যবসায়ীরাও ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন। কি হবে, কিভাবে ক্ষতি মানিয়ে নিবেন তা ভাবতেই তারা দিগ্বিদিক হয়ে সর্বত্র ধার করে ব্যবসা চালাচ্ছেন।

রাজধানীর বলাকা সিনেমা হলের ব্যবস্থাপক এস আর রহমান বলেন, ‘ব্যবসায় লালবাতি জ্বলছে। কাকে বলবো? কিছুই তো বলার নেই। চুপচাপ সহ্য করে যাচ্ছি। গত সপ্তাহগুলোতে তিনটি চলচ্চিত্র মুক্তি পাওয়ার কথা থাকলেও শেষ পর্যন্ত পায়নি। তাই পুরোনো চলচ্চিত্র হলে প্রদর্শন হচ্ছে। বর্তমানে যে টাকার টিকিট বিক্রি হয় তাতে ব্যবস্থাপনা খরচও ওঠে না। আমাদের বেতন তো দূরের কথা। দেশের পরিস্থিতি আর রাজনৈতিক সমস্যার সমাধান হলে আমাদের ভাগ্যও ফিরবে।’

একই পরিস্থিতিতে অন্য সিনেমা হলগুলো। এ প্রসঙ্গে রাজধানীর রাজমনি সিনেমা হলের ব্যবস্থাপক মো. অহিদুর রহমান বলেন, ‘আমরা পুরোনো চলচ্চিত্র চালাচ্ছি। এই পরিস্থিতিতে সরকার ও বিরোধী দলের কাছে আবেদন যে, তারা যেন সকল সমস্যার সমাধান করে। সহিংসতা, মারামারি-কাটাকাটি বন্ধ করে। আমরা যেন ভালভাবে ব্যবসা করতে পারি। আর কিছু চাই না।’

শুধু সিনেমা হল নয় সিনেপ্লেক্সও ব্যবসায়িক ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে। রাজধানীর বসুন্ধরা সিটির স্টার সিনেপ্লক্সের মিডিয়া ও মার্কেটিং বিভাগের ব্যবস্থাপক মেজবাহ উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘শুধু আমাদের নয়, সকল ব্যবসার অবস্থাই তো খারাপ। মানুষ নিরাপত্তাই পাচ্ছে না, আনন্দ করবে কিভাবে? এতে কারো হাত নেই। প্রধান দুই রাজনৈতিক দল যদি এর সমাধান করে, তবেই ব্যবসায়ের পরিস্থিতি ঠিক হতে পারে।’

যমুনা ফিউচার পার্কের ব্লকবাস্টার সিনেমার ব্যবস্থাপক মাকসুদুর রহমান এ সম্পর্কে বলেন, ‘যে পরিমাণ দর্শক আছে, তাই দিয়ে চলছে, কি আর করতে পারি।’

বাংলাদেশ চলচ্চিত্র বুকিং এজেন্ট সমিতির সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘এখন কোন বুকিং এজেন্ট রিস্ক নিতে চাইছে না। একটি চলচ্চিত্র বুকিং দিতে যে খরচ করতে হয়, তা উঠে না। জানমালের রিস্ক নিয়ে অনেকেই সিনেমা হলে যেতে পারছে না। আর সবচেয়ে বড় কথা, গত ছয় মাসে মুক্তিপ্রাপ্ত কোন চলচ্চিত্রই আশানুরূপ ব্যবসা করতে পারেনি। আমরা এর সমাধান চাই।’

(দ্য রিপোর্ট/আইএফ/নূরু/এমসি/ডিসেম্বর ১২, ২০১৩)