‘সারাদেশে ২৫ অক্টোবর আতঙ্ক’
২৫ অক্টোবর সামনে রেখে সারা দেশে চলছে গ্রেফতার অভিযান। ফলে বিএনপি ও তার শরিক দলের নেতা-কর্মীরা গ্রেফতার আতঙ্কে আত্মগোপনে রয়েছে। বিশেষ করে শুক্রবার সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত কি ঘটছে সে প্রশ্ন সবার মুখে মুখে। পুলিশ সদর দফতরে হিসেব অনুসারে- ২২ অক্টোবর থেকে ২৪ অক্টোবর বিকেল পর্যন্ত অন্তত ৫ হাজার ব্যক্তিকে আটক করা হয়েছে। এর মধ্যে হাতে গোনা কয়েকজন বিভিন্ন মামলার আসামী হলেও বাকি সবাই রাজনৈতিক তালিকা অনুসারে গ্রেফতার বা আটক হয়েছেন।
তবে ঢাকা মহানগর পুলিশের মুখপাত্র মনিরুল ইসলাম বলেন, আতঙ্কের কিছু নেই। রাজধানীতে ডিএমপি সভাসমাবেশ নিষিদ্ধ করেছে। যদি আইন ভঙ্গ করে কেউ বিশৃঙ্খলার অপচেষ্টা চালায় পুলিশ তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নিবে। নগরবাসীর আতঙ্কিত হবার কিছু হয়নি।
এদিকে বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে ক্ষমতাসীন দলের রাজনৈতিক কার্যালয়ে হামলার খবর গণমাধ্যমে প্রকাশ হওয়ায় আতঙ্কের মাত্রা আরো বেড়ে গেছে। অন্যদিনের তুলনায় দুপুরের আগে থেকেই রাজধানীর রাস্তাগুলো ফাঁকা হতে শুরু করে। বিকেলের দিকে ব্যস্ত রাস্তায় প্রাইভেটকারসহ যাত্রীবাহী বাসের চলাচল কম লক্ষ্য করা গেছে।
এছাড়াও রাজধানী ঢাকাসহ বিভাগীয় শহরগুলোতে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে সহায়তার জন্য বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা থেকে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ(বিজিবি) মোতায়েন করার খবর প্রকাশের পর জনমনে আতঙ্কে আরো বেড়ে যায়।
২৫ অক্টোবরকে কেন্দ্র করে একাধিক গোয়েন্দা সংস্থাও নাশকতার আশঙ্কার কথা বলছে। ইতোমধ্যে কয়েকদিন ধরেই আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েছে। সার্বক্ষণিকভাবে কঠোর নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে রাজধানীসহ দেশের গুরুত্বপূর্ণ শহরগুলোতে। বৃহস্পতিবার সকালে চট্টগ্রামে বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে। সন্ধ্যায় ঢাকা, সিলেট, খুলনা, রাজশাহী, বগুড়া, রংপুর ও বরিশালে মোতায়েন করা হয় বিজিবি।
২৫ অক্টোবরের সারা দেশে আতঙ্কের প্রধান কারণ আওয়ামী লীগ ও বিএনপি। দল দুটির মূখোমুখী অবস্থানের কারণেই মূলত আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ছে জনমনে। আর সবার সামনে ভাসছে ২০০৭ সালের লগী-বৈঠার কথা।
বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, আগামীকাল শুক্রবার নয়াপল্টনে জনসভা হবেই। বিরোধীদলীয় নেতা খালেদা জিয়া ওই জনসভায় বক্তব্য দেবেন। বৃহস্পতিবার নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন। অনুমতি না পেলেও সমাবশে হবে কি না এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমরা দ্বিধাহীন চিত্তে জানাচ্ছি, আমরা সমাবেশ করবই। এদিকে সন্ধ্যায় ডিএমপি সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে শর্তসাপেক্ষে ১৮ দলকে সমাবেশের অনুমতি দিয়েছে।
অপরদিকে রাজধানী দখলে রাখার ঘোষণা দিয়েছে আওয়ামী লীগ নেতারা। তারা বলছে শুক্রবার রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানের মসজিদসহ রাজপথের বিভিন্ন স্থানে তাদের নেতা-কর্মীরা থাকবে। আবার রাজধানীতে ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগকে সমাবেশের অনুমতি দেয়নি মহানগর পুলিশ।
তাদের এ ঘোষণার পরে পুলিশও আতঙ্কে আছেন। নাম না প্রকাশের শর্তে এক উপ-পুলিশ কমিশনার বলেন, দুটি দল মুখোমুখী হলে অবস্থা বেগতিক হবে। আর সব দায় আসে পুলিশের ওপর। তিনি আরো বলেন, সমাবেশকে কেন্দ্র করে রাজধানীতে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। বিভিন্ন স্থানে নিরাপত্তা চৌকি বসিয়ে পুলিশ তল্লাশি চালাচ্ছে। এর ফলে জনগণ আরো বেশি আতঙ্কে ভুগছে।
(দিরিপোর্ট২৪/ডিডি/এমডি/অক্টোবর ২৪, ২০১৩)