‘দুই নেত্রীই ছাড় দেওয়ার কথা বলেছেন’
দ্য রিপোর্ট কূটনৈতিক প্রতিবেদক : দুই নেত্রীর সঙ্গে বৈঠক প্রসঙ্গে যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ প্রতিমন্ত্রী সাঈদা হুসেইন ওয়ার্সি বলেন, ‘শেখ হাসিনা ও খালেদা জিয়া দুই নেত্রীই আমাকে ছাড় দেওয়ার কথা বলেছেন। তৃতীয় বৈঠকটি সম্ভবত শুক্রবার অনুষ্ঠিত হবে।’ সংকট নিরসনে এর কোনো বিকল্প নেই বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
একদিনের ঝটিকা সফরে বৃহস্পতিবার সকালে ঢাকা আসেন ওয়ার্সি। এরপর বিদ্যমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, বিরোধী দলের নেতা খালেদা জিয়া ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলীর সঙ্গে বৈঠকের পর সন্ধ্যায় এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি তার আশার কথা জানান। বারিধারার ব্রিটিশ হাইকমিশন ক্লাবেএই সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
নির্বাচন নিয়ে চলমান রাজনৈতিক সংকট নিরসনে জাতিসংঘের সহকারী মহাসচিব অস্কার ফার্নান্দেজ তারানকোর উদ্যোগে শুরু হওয়া সংলাপ সমঝোতার শেষ সুযোগ হিসেবে দেখছেন যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ এই প্রতিমন্ত্রী। এজন্য দুই দলই ছাড় দিতে তৈরি আছে বলেও জানান তিনি।
এর আগে তারানকোর উদ্যোগে মঙ্গল ও বুধবার দুই দলের শীর্ষ নেতাদের উপস্থিতিতে দুটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। তৃতীয় বৈঠকের ব্যাপারেও দুই দলে যে রাজি আছে সে ব্যাপারটিও তারানকো ঢাকা ছাড়ার আগে জানিয়ে যান।
তারানকো বলেন, নির্বাচন নিয়ে বিপরীতমুখী অবস্থানে থাকা দুই দলের মধ্যে সমঝোতা একমাত্র অব্যাহত সংলাপের মধ্য দিয়েই সম্ভব।
আগামী নির্বাচন নির্দলীয় সরকারের অধীনে চায় প্রধান বিরোধী দল বিএনপি। অন্যদিকে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ‘সর্বদলীয়’ সরকার গঠন করে নির্বাচনের পথে এগোচ্ছে।
এদিকে প্রধান বিরোধী দল ছাড়া নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলে তা গ্রহণযোগ্য হবে কিনা- এমন প্রশ্নের সরাসরি জবাব না দিয়ে ব্রিটিশ প্রতিমন্ত্রী ওয়ার্সি বলেন, ‘নির্বাচন গ্রহণযোগ্য হবে কিনা, কিংবা তা কতটা স্বচ্ছ ও অবাধ হচ্ছে তা নির্ভর করবে ভোটকেন্দ্রে ভোটারদের স্বতস্ফূর্ত উপস্থিতির ওপর। এ বিষয়ে তাই এখনই মন্তব্য করা কঠিন।’
তবে যুক্তরাজ্য যে সব দলের অংশগ্রহণে একটি সহিংসতামুক্ত, অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন দেখতে চায় সে বিষয়টিও উল্লেখ করেন তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে প্রশ্নোত্তর পর্বের আগে লিখিত বক্তব্যে ওয়ারসি মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়েপ্রাণদণ্ড পাওয়া আব্দুল কাদের মোল্লার ফাঁসির বিরুদ্ধে যুক্তরাজ্যের অবস্থানের বিষয়টি পুনর্ব্যাক্ত করে বলেন, ‘যে কোনো ধরনের অপরাধ তা যে পরিপ্রেক্ষিতেই ঘটুক না কেন তার শাস্তি হিসেবে মৃত্যুদণ্ডের বিরুদ্ধে যুক্তরাজ্য ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের অবস্থান।’
বিষয়টি তিনি পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাহমুদ আলীকেও অবহিত করেছেন বলে জানান।
গত নভেম্বর মাসের প্রথম সপ্তাহে এই ব্রিটিশ প্রতিমন্ত্রীর ঢাকা সফর করার কথা থাকলেও পরে সেটি বাতিল হয়। এর আগে গত ফেব্রুয়ারিতে কাদের মোল্লার ফাঁসির দাবিতে শাহবাগ যখন উত্তাল সেই সময়ে এক দফা ঢাকা সফর করেন তিনি।
ওই সফরে তিনি বাংলাদেশেরজাতীয় নির্বাচন, মানবাধিকার পরিস্থিতি, একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার এবং শাহবাগের গণআন্দোলনসহ দ্বিপক্ষীয় বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা করেন তিনি।
(দ্য রিপোর্ট/এইউএ/এমএআর/ডিসেম্বর ১৩, ২০১৩)