দ্য রিপোর্ট ডেস্ক : কাদের মোল্লার ফাঁসি কার্যকরের প্রতিক্রিয়ায় রাজধানীতে জুমার নামাজ শেষে জামায়াত-শিবিরের হামলা ও পুলিশের সঙ্গে তাদের সংঘর্ষে ফটো সাংবাদিক, নারী ও শিশুসহ ১২ জন গুলিবিদ্ধ হয়েছেন।

আহতদের গুলিবিদ্ধ অবস্থায় দুপুর সোয়া ৩টার দিকে ঢাকা মেডিকেলের জরুরি বিভাগে ভর্তি করা হয়েছে। আহতদের মধ্যে দুইজনকে আটক করেছে পুলিশ। ঢাকা মেডিকেলের ক্যাম্প ইনচার্জ পরিদর্শক মোজাম্মেল হক দ্য রিপোর্টকে এ খবর জানিয়েছেন।

ফকিরাপুলে পুলিশের গুলিতে শান্ত ইসলাম (১১) নামে এক কিশোর আহত হয়েছে। শান্তর বাবা ফুটপাতের দোকানি আব্দুস সোবহান জানান, শান্তর মাথায় গুলি লেগেছে। শান্ত তার জন্য দুপুরের খাবার নিয়ে এসেছিল বলে জানান সোবহান। এসময় শান্তর সঙ্গে থাকা তার ছোটভাই শাওনকে (৯) খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না বলেও জানান তিনি।

ফকিরাপুল এলাকায় গুলিবিদ্ধ হয়েছেন আরো ৩ জন। তারা হলেন রিকশাচালক নাজমুল হোসেন (২১), ফকিরাপুল মামাভাগ্নে হোটেলের ম্যানেজার আলী হোসেন (৪০) ও কর্মচারী কিবরিয়া (১৮)।

এদিকে, মতিঝিল আইডিয়াল স্কুলের সামনে গুলিবিদ্ধ হয়েছেন পাঁচজন। তারা হলেন শাড়ি বিক্রেতা রীনা আক্তার (৩৫), চাঁদর বিক্রেতা মোহাম্মদ আতিয়ার রহমান (৩৮), কাপড় বিক্রেতা মোহাম্মদ ফরিদ (২৮), ফার্মেসির কর্মচারী শহীদুল ইসলাম (৩০) ও ঢাকা আলীয়া মাদ্রাসার ফাজিল শিক্ষার্থী রুমান (২৫)। শহীদুল ও রুমানকে আটক করেছে পুলিশ।

এছাড়া, রামপুরা এলাকায় গুলিবিদ্ধ হয়েছেন ৩ জন। তারা হলেন গার্মেন্টসকর্মী আমেনা বেগম (২৫), সাপ্তাহিক শীর্ষ অপরাধের ফটোসাংবাদিক শিবলী সাদেক (২২) ও মেগাস্টার গার্মেন্টসে কর্মরত ফরহাদ হোসেন (৪০)।

কমলাপুর এলাকায় শিবিরের লাঠির আঘাতে ফটো এজেন্সি বাংলারচোখ-এর ফটোসাংবাদিক নীবর হোসেন মুকিত (২৪) আহত হয়েছে।

এর মধ্যে আমেনা মাথায় ও দুইচোখে গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। তাকে আগারগাঁওয়ে জাতীয় চক্ষু হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে।

জুমার নামাজ শেষে মতিঝিল, ফকিরাপুল, রামপুরা ও মগবাজার-মৌচাকসহ রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় তাণ্ডব শুরু করে জামায়াত-শিবিরের কর্মীরা। এসময় তারা যানবাহন ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগসহ ককটেল বিস্ফোরণ ঘটায়।

সংঘর্ষ চলাকালে মতিঝিল ও ফকিরাপুল এলাকার প্রধান সড়কে থোকায় থোকায় রক্তের দাগ দেখা যায়। অনেক স্থানেই রক্ত পুলিশ ও সিটি করপোরশনের লোকজন ধুয়ে ফেলেছে।

পুলিশ বলছে, মিছিলকারীদের ইটের আগাতে পথচারীদের শরীর থেকে রক্ত ঝরেছে। পথচারীরা বলছে, পুলিশের গুলিতে আহতদের শরীর থেকে রক্ত ঝরেছে।

এ বিষয়ে মতিঝিল জোনের এডিসি মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান বলেন, ‘গত কয়কদিন বন্ধ থাকার পর আজ অনেক শিক্ষার্থী ও নগরবাসী প্রয়োজনে বাসার বাইরে আসেন। এ সময় জামায়াত-শিবিরের নেতাকর্মীরা মতিঝিল এলাকায় তাণ্ডব চালায়। বিভিন্ন যানবহনে অগ্নিসংযোগ ঘটায়। পরিস্থিতি কিছুটা শান্ত হওয়ার পর ফায়াস সার্ভিসকর্মীদের পাশাপাশি পু্লশিও জলকামানের পানি ব্যবহার করে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।’

(দ্য রিপোর্ট/এ/কেজেএন/নূরু/এনডিএস/ডিসেম্বর ১৩,২০১৩)