দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক : সেরা দল হিসেবেই শিরোপা পুনরুদ্ধার করেছে শেখ জামাল ধানমণ্ডি ক্লাব। শুক্রবার তারা প্রতিপক্ষ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ ক্রীড়াচক্রকে হারিয়েছে ন্যূনতম ১-০ গোলের ব্যবধানে।

৮ বছর পর ফাইনালে ওঠা মুক্তিযোদ্ধা ক্রীড়াচক্রের শিরোপার স্বপ্ন ভেঙে দিয়েছেন শেখ জামালের ডিফেন্ডার নাসির উদ্দিন। ২ বছর আগে শেখ জামাল সর্বশেষ বিজেএমসিকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল। গত আসরেও ফাইনাল খেলেছিল শেখ জামাল। কিন্তু পারেনি। আর মুক্তিযোদ্ধা ২০০৫ সালে ব্রাদার্স এবং এবার হারলো শেখ জামাল ধানমণ্ডি ক্লাবের কাছে ।

মৌসুমের প্রথম টুর্নামেন্টের ফাইনাল। অথচ ছিল আবাহনী-মোহামেডানের মতো দল। তার ওপর রাজনৈতিক অস্থিরতা। এতোকিছুর পরও ফাইনালে গ্যালারিতে দর্শক উপস্থিতি ছিল লক্ষনীয়। তাদের হতাশ করেনি ২ ফাইনালিস্ট শেখ জামাল ও মুক্তিযোদ্ধা। আক্রমণ-পাল্টা আক্রমণে ম্যাচটি বেশ উপভোগ্যই হয়ে ওঠে তবে গোলহীনতার হা-হুতাশ করেই প্রথমার্ধ কাটাতে হয়েছে দর্শকদের। প্রথমার্থে গোল না হলেও পরিচ্ছন্ন ফুটবল খেলেছে ২ দল। আধিপত্যে একটু বেশিই এগিয়ে ছিল শেখ জামাল। তবে শফিকুল ইসলাম মানিকের ক্ষুরধার বুদ্ধি-কৌশলের কাছে বারবারই ব্যর্থ হয়েছে হলুদ-নীল শিবিরের ফুটবলাররা। প্রথমার্ধে প্রায় ৪টি গোলের সুযোগ তৈরি করলেও কাজে লাগাতে পারেনি আফুসির শিষ্যরা। বেঞ্জামিন ও সনি নর্দকে বিশেষ ছকে আটকে দেয়ায় শেখ জামালের আক্রমণও বিঘ্নিত হয়েছে। প্রথমার্ধে ২টি সুযোগ কাজে লাগাতে না পারার দায় ওয়েডসনের। খেলার ১৩ মিনিটে সবচেয়ে সহজ সুযোগ মিস করেছেন ওয়েডসন। গোলরক্ষককে একা পেয়ে বাইরে শট নিয়েছেন এ ফরোয়ার্ড।

৪৫ মিনিটে ওয়েডসনেরই প্লেসিং শট আটকে দিয়েছেন অল-রেডদের গোলরক্ষক রাসেল মাহমুদ লিটন। আমিনুলের অনুপস্থিতিতে দারুণ খেলেছেন লিটন। সেমিফাইনালে আমিনুল ব্যথা পাওয়ায় ফাইনালে খেলার সুযোগ হয়েছে তার। খেলা যখন গড়িয়ে যাচ্ছিল সেমিফাইনালের মতোই। সবাই যখন ভাবছিলেন পেনাল্টি শুট আউটের কথা ঠিক সেই সময়, দ্বিতীয়ার্ধের ৮২ মিনিটে দারুণ এক সুযোগ কাজে লাগিয়ে দলকে শিরোপা এনে দিয়েছেন শেখ জামাল ধানমণ্ডি ক্লাবের ডিফেন্ডার নাসির উদ্দিন চৌধুরী। এখানেও সেই সনি নর্দে। তার নিপুণ কর্নার থেকে উড়ন্ত বলে মাথা ছুঁইয়ে মুক্তিযোদ্ধার জাল কাঁপিয়েছেন নাসির। পরের সব চেষ্টাই গোলহীন বৃত্তে ঘুরপাক খেয়েছে।

৭টি গোল করে টুর্নামেন্টের সর্বোচ্চ গোলদাতার পুরস্কার জিতেছেন শেখ জামালের হাইতির ফরোয়ার্ড সনি নর্দে। টুর্নামেন্ট সেরার পুরস্কার মোটরসাইকেলও জিতেছেন ওই বিদেশি। তবে ফাইনাল সেরা হয়েছেন শেখ জামালের হাইতির ফরোয়ার্ড ওয়েডসন।

শেখ জামাল দল : জিয়া, নাসির, ইয়াসিন, লিঙ্কন, রায়হান, মামুনুল, আবদুল্লাহ, সোহেল রানা, সনি নর্দে, ওয়েডসন ও ডারলিংটন।

মুক্তিযোদ্ধা দল : লিটন, বেঞ্জামিন, উত্তম, সাইদুল, বিপুল, লিডক্স, এনামুল, জাহেদ, বিপ্লব, কিংসলে ও এনকোচা।

রোল অফ অনার :

মৌসুম চ্যাম্পিয়ন রানার্সআপ ফল

১৯৮০ মোহামেডান ও ব্রাদার্স যুগ্ম চ্যাম্পিয়ন ০-০

১৯৮১ মোহামেডান আবাহনী ২-০

১৯৮২ মোহামেডান ও আবাহনী যুগ্ম চ্যাম্পিয়ন ০-০

১৯৮৩ মোহামেডান আবাহনী ২-০

১৯৮৪ ফাইনাল পরিত্যাক্ত (মোহামেডান-আবাহনী)

১৯৮৫ আবাহনী ব্রাদার্স ১-০

১৯৮৬ আবাহনী ব্রাদার্স ২-১

১৯৮৭ মোহামেডান ওয়ান্ডারার্স ১-০

১৯৮৮ আবাহনী মোহামেডান ১-০

১৯৮৯ মোহামেডান আবাহনী ২-১**

১৯৯১ ব্রাদার্স মোহামেডান ০(৪)-০(২)***

১৯৯৪ মুক্তিযোদ্ধা আবাহনী ৩-২

১৯৯৫ মোহামেডান আবাহনী ০(৬)-০(৫)****

১৯৯৭ আবাহনী আরামবাগ ২-১

১৯৯৯ আবাহনী মুক্তিযোদ্ধা ০(৫)-০(৪)***

২০০০ আবাহনী মোহামেডান ২-১

২০০১ মুক্তিযোদ্ধা আরামবাগ ৩-০

২০০২ মোহামেডান মুক্তিযোদ্ধা ২-০

২০০৩ মুক্তিযোদ্ধা মোহামেডান ২-১**

২০০৫ ব্রাদার্স মুক্তিযোদ্ধা ১-০

২০০৮ মোহামেডান আবাহনী ১(৩)-১(২)***

২০০৯ মোহামেডান আবাহনী ০(৪)-০(১)***

২০১০ আবাহনী শেখ জামাল ৫-৩**

২০১১ শেখ জামাল বিজেএমসি ৩-১

২০১২ শেখ রাসেল শেখ জামাল ২-১**

২০১৩ শেখ জামাল মুক্তিযোদ্ধা ১-০

** অতিরিক্ত সময়ে, *** টাইব্রেকারে নিষ্পত্তি, **** সাডেন ডেথ

(দ্য রিপোর্ট/ওআইসি/নূরু/এএস/সিজি/ডিসেম্বর ১৩, ২০১৩)