দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক : দেশ টিভিতে শুক্রবার রাত ১১টা ৪৫ মিনিটে প্রচার হবে সঙ্গীতানুষ্ঠান ‘কলের গান’। এই অনুষ্ঠানে সঙ্গীত পরিবেশন করবেন মুক্তিযোদ্ধা ও স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের শিল্পী ডালিয়া নওশীন। দ্য রিপোর্টের সঙ্গে আলাপকালে তিনি বললেন বর্তমান পরিস্থিতি, মুক্তিযুদ্ধ এবং প্রাপ্তি-অপ্রাপ্তির কথা।

দ্য রিপোর্ট : বিজয় দিবস উপলক্ষে এতো কম অনুষ্ঠান করছেন কেন?

ডালিয়া নওশীন : কেন করবো? ২৬ মার্চ বা ১৬ ডিসেম্বর এলেই আমাদের ডাকা হয়। আমরাও নিজেদের টেলিভিশনে দেখানোর জন্য যাই। কেন? এতে কি দেশের কোনো লাভ হচ্ছে? কেউ ভেবে দেখছে কি? তাই আমি অনেককে ফিরিয়ে দিয়েছি। স্বাধীনতার ৪২ বছর পরে এসেও আমরা ব্যবসার পণ্যে পরিণত হয়েছি। আর সবাইকে বলি, আমাদের দিয়ে ব্যবসা করবেন না।

দ্য রিপোর্ট : আপনারা তো দেশের অনেক ক্রান্তিকাল দেখেছেন। বর্তমান প্রেক্ষাপট নিয়ে বলুন?

ডালিয়া নওশীন : এই দেশ তো চাইনি। ভয়ে ভয়ে বাসা থেকে বের হচ্ছি। অনেক অনুষ্ঠান বাতিল হয়ে যাচ্ছে। কোনো অনুষ্ঠান বা আত্মীয়-স্বজনদের বাসায় কখনো যেতে পারছি আবার কখনোবা পারছি না। আর যেতে হলে রিকশায় বা হেঁটে যেতে হচ্ছে। বাইরে বের হলেও তো স্বস্তি নেই। এই জন্য কি যুদ্ধ করেছি?

দ্য রিপোর্ট : ৪২ বছরে কী পরিবর্তন হয়েছে?

ডালিয়া নওশীন : এখন তো চারপাশে দেখা যাচ্ছে, মুক্তিযোদ্ধারাই রাজাকার হয়ে গেছে। বাড়ি-গাড়ি করে ফেলেছে। কোটি কোটি টাকা কামিয়েছে। এই টাকা কোত্থেকে এলো? সৎভাবে? এজন্য তারা মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়েছিল? আবার মুক্তিযুদ্ধের পর রাজাকাররা যেমন শক্তিশালী ছিল। এখনো আরো বেশি হয়েছে। আমরা তাদেরকে রাজার হালে চলাফেরা করতে দিচ্ছি। এদিকে সাজ-সজ্জা আর চলাফেরায়ও আমূল পরিবর্তন হয়েছে। আমরা আগে শাড়ি পরতাম। ভালভাবে চলাফেরা করতে পারতাম। এখন বৃদ্ধ-বণিতা সবাই সালোয়ার-কামিজে চলে এসেছে। স্টাইল পরিবর্তন করেছে। রাস্তায় স্বাধীনভাবে চলতে পারছে না। এগুলো কিসের ইঙ্গিত?

দ্য রিপোর্ট : মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে নির্বাচন নিয়ে কি ভাবছেন?

ডালিয়া নওশীন : অনেকে অনেক কিছুই বলে। দুই দলকে ক্ষমতায় আসতে হবে। কিন্তু আমার ভিন্নমত। আমি তো একটি দলের অস্তিত্ব মানতেই চাই না। বিএনপি ১৯৭৫ এর পর গঠিত হয়েছে। ওরা এখন বলে, কারফিউ দেবে। কি বলতে চায়? ওরা কি দেশ চালাচ্ছে? আমার মতে, দুই দলের একসঙ্গে বসার কোনো প্রয়োজন নেই।

(দ্য রিপোর্ট/আইএফ/নূরু/এমসি/এইচএসএম/ডিসেম্বর ১৩, ২০১৩)