আমিনুল ইসলাম, দ্য রিপোর্ট : দেশের চলমান অস্থিরতা ও সঙ্কট দূর করতে রাজনৈতিক মতাদর্শ বাদ দিয়ে বাংলাদেশের ব্যবসায়ীদের স্বতন্ত্র প্লাটফরম করার পরামর্শ দিয়েছে এ্যামচেম হংকং-এর প্রেসিডেন্ট রিচার্ড আর ভলস্টেক। সরকারকে চাপে রাখার জন্য তিনি বাংলাদেশি ব্যবসায়ীদেরকে শ্রমিক কর্মচারীদের নিয়ে রাজপথে নামার পরামর্শ দেন। যাতে সরকার ব্যবসায়ীদের মতামতের গুরুত্ব দেয়। ব্যবসায়ীরা ঐক্যবদ্ধ হলে এটা সম্ভব বলেও মনে করেন তিনি। বাংলাদেশে নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত ড্যান ডব্লিউ মজীনার নেতৃত্বে ৮ থেকে ১১ ডিসেম্বর পর্যন্ত বাংলাদেশের একটি ব্যবসায়ী প্রতিনিধি দলের হংকং সফর নিয়ে ব্যাপক কৌতূহল সৃষ্টি হয়। স্বাধীনতার ৪৩ বছরে বাংলাদেশে এরকম ঘটনা ঘটেনি। কোন পরিস্থিতিতে এরকম সফর হলো এ বিষয়ে জানতে চাইলে ঢাকা চেম্বারের সভাপতি সবুর খান বলেন, আমরা বিষয়টি নিয়ে অভিভূত। একজন বিদেশি রাষ্ট্রদূত বাংলাদেশের উন্নয়ন নিয়ে এতো গভীরভাবে ভাবেন তা বিশ্বাস করা দুষ্কর। আমরা প্রধানমন্ত্রী-মন্ত্রীদের সঙ্গে অনেক বাণিজ্য সফর করেছি। কিন্তু এরকম সফর কমই হয়েছে। বাংলাদেশকে উনি বেশি ভালোবাসেন বলেই এটা তার পক্ষে সম্ভব হয়েছে।

সবুর খান বলেন, হংকং পৌঁছার পর হংকংয়ের বড় বড় কোম্পানির সঙ্গে ধারাবাহিকভাবে একের পর এক প্রোগ্রাম করেছেন মজীনা। ওই সব অনুষ্ঠানে লি এন্ড ফাং ওয়ালমার্ট, জেনারেল ইলেক্ট্রনিক্স, সিটি ব্যাংক এনএ’র মতো যুক্তরাষ্ট্রের বড় বড় ২০ কোম্পানির শীর্ষ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। মজীনা তাদেরকে বাংলাদেশে বিনিয়োগ করার জন্য উৎসাহিত করেছেন। বাংলাদেশের চলমান রাজনৈতিক অস্থিরতায় হংকংয়ের আমেরিকান ব্যবসায়ীরা যখন বাংলাদেশ থেকে ব্যবসা বাণিজ্য গুটিয়ে ভিয়েতনামে শিফট করতে চাচ্ছিলেন, তখন মজীনা প্রাণান্তকরভাবে তাদের বোঝানোর চেষ্টা করছিলেন যে, বাংলাদেশের এ অবস্থা বেশিদিন স্থায়ী হবে না। শিগগিরই এর সমাধান হবে। বাংলাদেশ খুব ভালো দেশ। আপনারা এখানে বিনিয়োগ করুন। হংকংয়ে বাংলাদেশি ব্যবসায়ীদের সম্মেলনের জন্য এক বছর আগে থেকেই প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন মজীনা।

ডিসিসিআই সভাপতি আরো বলেন, হংকংয়ে ব্যবসা-বাণিজ্যেও ৮০ শতাংশই নিয়ন্ত্রণ করেন আমেরিকান ব্যবসায়ীরা। বাংলাদেশের ব্যবসায়ীদের সঙ্গে অনুষ্ঠিত বৈঠকগুলোতে এ্যামচেম হংকং-এর প্রেসিডেন্ট বাংলাদেশের তৈরি পোশাক শিল্পের বিরাজমান পরিস্থিতি মোকাবেলায় আন্তর্জাতিক ক্রেতাদেরকে আরো বেশি বেশি করে আমন্ত্রণ জানানো, কারখানার কমপ্লায়েন্স ইস্যু বাস্তবায়নে যেসব ইক্যুইপমেন্ট প্রয়োজন তা সরবরাহ করার প্রস্তাব দেন। যা ১-২ শতাংশ হারে দীর্ঘমেয়াদে পরিশোধ করতে হবে। যা ৫-৬ বছরে পরিশোধ করা যেতে পারে।

(দ্য রিপোর্ট/এআই/নূরু/এইচএসএম/ডিসেম্বর ১৪, ২০১৩)